১০ লাখ টাকা চাঁদা নেন বৈষম্য বিরোধী নেতারা

- আপডেট সময় ১১:১০:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
- / ২৬০ বার পড়া হয়েছে
বৈষম্য বিরোধী অধিকার আন্দোলনের নামে পরিচিত একটি সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি এবং পুলিশকে ব্যবহার করে সাধারন মানুষের বাড়িতে গিয়ে জুলুম করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে জানা যায়, সংগঠনের কয়েকজন নেতা প্রথমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে এক ব্যবসায়ীর বাসায় যান। পরে তারা নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীকে হুমকি দিতে থাকেন এবং ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
ঘটনার বিস্তারিত:
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, তিনি একজন ছোট উদ্যোক্তা এবং দীর্ঘদিন ধরে বৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। হঠাৎ করেই একদিন তার বাসায় বৈষম্য বিরোধী সংগঠনের কয়েকজন নেতা, সঙ্গে পুলিশের পোশাকধারী ২ ব্যক্তি নিয়ে হাজির হন। তারা অভিযোগ করেন যে, তিনি নাকি একটি সংখ্যালঘু কর্মচারীর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন। কিন্তু বাস্তবে এমন কোনো ঘটনার অস্তিত্ব নেই।
ব্যবসায়ীর দাবি, তাকে একটি চিঠি দেখিয়ে বলা হয় এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে। এরপর তাকে নানাভাবে ভয় দেখানো হয়, এবং মামলা থেকে বাঁচতে চাইলে ১০ লাখ টাকা “সমঝোতা চাঁদা” দিতে বলা হয়।
প্রমাণ ও পদক্ষেপ:
ভুক্তভোগী গোপনে ঘরের সিসিটিভি ফুটেজে পুরো ঘটনার কিছু অংশ রেকর্ড করে রাখেন। সেই ফুটেজে দেখা যায়, নেতারা কেমনভাবে চাপ সৃষ্টি করছিলেন এবং পুলিশের উপস্থিতিও নিশ্চিত হয়। তিনি পরবর্তীতে থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেন। প্রাথমিকভাবে পুলিশ অভিযোগ নিতে অনীহা দেখালেও, পরে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে তদন্ত শুরু করে।
বৈষম্য বিরোধী সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ:
এ সংগঠনটির বিরুদ্ধে এর আগেও কিছু অভিযোগ উঠেছিল, বিশেষ করে সামাজিক ইস্যুতে হঠাৎ মামলা দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের কৌশল গ্রহণ করার। তবে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
বিশেষজ্ঞ মতামত:
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক ন্যায়বিচারের কথা বলে কেউ যদি কাউকে হয়রানি বা চাঁদাবাজি করে, তা গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। এর সঙ্গে যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত থাকে, তবে তা আরও বিপজ্জনক এবং এর পেছনে একটি সংগঠিত দুর্নীতির চিত্র ফুটে ওঠে।
শেষ কথা:
বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা সংগঠনের কাছ থেকে মানুষ আশা করে ন্যায় ও মানবাধিকার রক্ষা। কিন্তু যদি সেই সংগঠনই ভয়ভীতি ও চাঁদাবাজির আশ্রয় নেয়, তবে এটি শুধু একজন ভুক্তভোগীর জন্য নয়, পুরো সমাজের জন্যই হুমকিস্বরূপ। প্রশাসনের উচিত এই বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা।