ঢাকা ০১:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
সুফি কবি এনামূল হক পলাশ

‘অখণ্ড ভারতের চেতনার চেয়ে অখণ্ড বাংলার চেতনা আরও প্রাচীন’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০২:৪৯:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
  • / ৩১৯ বার পড়া হয়েছে

নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার সাজিউড়ায় লোকজ সংগ্রহশালা ও গণপাঠাগারের উদ্যোগে মরমী কণ্ঠশিল্পী বাউল সাধক আব্দুল মজিদ তালুকদারের (মরণোত্তর) সম্মাননা প্রদান উপলক্ষে শিল্পী ও কবি বরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।

শনিবার (২১ জুন) চারণ কবি সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নেত্রকোনা সাহিত্য সমাজের সাধারণ সম্পাদক কবি তানভীর জাহান চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন সুফি কবি এনামূল হক পলাশ।

অনুষ্ঠানে আলোচনা করেছেন মোখলেছুর রহমান বাঙ্গালী, কবি মাহবুবা খান দীপান্বিতা, গীতিকার মীর্জা রফিকুল হাসান, কবি রহমান জীবন, কবি মো. শাহাবুল কাদির ভূঞা, কবি জহিরুল হক, শিল্পী আবুল বাশার তালুকদার, মুকুল সরকার, সাংবাদিক মো. লুৎফুর রহমান হৃদয় প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত সকল কবি, লেখক ও শিল্পীকে উত্তরীয় পড়ানো হয় এবং সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

সুফি কবি এনামূল হক পলাশ তার আলোচনায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সকল প্রকার আধিপত্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালের আগে ভারত কোনো রাষ্ট্র ছিল না। ইংরেজরা তার শাসনামলে ভারতবর্ষ শব্দটা বহুল প্রচার করে। তারও আগে মোগলরা বিভিন্ন রাজ্য অধিকার করে অখণ্ড এক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল। প্রকৃতপক্ষে অখণ্ড বাংলার আধিপত্যকে খর্ব করতে ইংরেজরা ভারতবর্ষ নামটি চাপিয়ে দিয়েছে। আজকের ভারত বহু স্বাধীন রাজ্যের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে।

ইংরেজ শাসনের আগে অখণ্ড ভারতের চেতনা বলতে কোনো চেতনাই ছিল না। অখণ্ড ভারতের চেতনার চেয়ে অখণ্ড বাংলার চেতনা আরও প্রাচীন। দিল্লির শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন যশোরের প্রতাপাদিত্য, বিক্রমপুরের চাঁদ রায় ও কেদার রায়, বাক‌লার রাজা রাজবল্লভ সেন, কন্দর্প রায় ও রামচন্দ্ররায়, পিরোজপুরের কিঙ্কর সেন, ভুলুয়ার লক্ষ্মণমাণিক্য, ফরিদপুরের মুকুন্দরাম রায় ও সত্রাজিৎ রায়, বিষ্ণুপুরের বীর হাম্বির, সোনারগাঁওর ঈশা খাঁ, ভাওয়ালের ফজল গাজী, তাহিরপুরের কংসনারায়ণ রায়, সাতৈরের রাজা রামকৃষ্ণ, পুঁটিয়ার পীতম্বর ও নীলাম্বর সেন, উড়িষ্যার ঈশা খাঁ লোহানী ও উসমান খাঁ লোহানী।

তারা কেউ হিন্দু মুসলিম বিভাজনের রাজনীতি গ্রহণ করেননি। তারা স্বাধীনতা চেয়েছিলেন। তারা দিল্লির দাসত্বকে অস্বীকার করেছিলেন। তাদের চেতনাই বাংলার স্বাধীনতার মূল চেতনা। বাংলার বারো ভূইয়া দিল্লির শাসনের বিপরীতে যে চেতনা ধারণ করেছিলেন সেটাই বাংলার চেতনা। নয়া সাংস্কৃতিক বন্দোবস্তের জন্য একটি সাংস্কৃতিক কেবলার অনুসন্ধান করা এই মুহূর্তে জরুরি। সকল প্রকার আধিপত্যবাদ ও দখলদারিত্ব অস্বীকার করেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

সুফি কবি এনামূল হক পলাশ

‘অখণ্ড ভারতের চেতনার চেয়ে অখণ্ড বাংলার চেতনা আরও প্রাচীন’

আপডেট সময় ০২:৪৯:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার সাজিউড়ায় লোকজ সংগ্রহশালা ও গণপাঠাগারের উদ্যোগে মরমী কণ্ঠশিল্পী বাউল সাধক আব্দুল মজিদ তালুকদারের (মরণোত্তর) সম্মাননা প্রদান উপলক্ষে শিল্পী ও কবি বরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।

শনিবার (২১ জুন) চারণ কবি সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নেত্রকোনা সাহিত্য সমাজের সাধারণ সম্পাদক কবি তানভীর জাহান চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন সুফি কবি এনামূল হক পলাশ।

অনুষ্ঠানে আলোচনা করেছেন মোখলেছুর রহমান বাঙ্গালী, কবি মাহবুবা খান দীপান্বিতা, গীতিকার মীর্জা রফিকুল হাসান, কবি রহমান জীবন, কবি মো. শাহাবুল কাদির ভূঞা, কবি জহিরুল হক, শিল্পী আবুল বাশার তালুকদার, মুকুল সরকার, সাংবাদিক মো. লুৎফুর রহমান হৃদয় প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত সকল কবি, লেখক ও শিল্পীকে উত্তরীয় পড়ানো হয় এবং সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

সুফি কবি এনামূল হক পলাশ তার আলোচনায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সকল প্রকার আধিপত্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালের আগে ভারত কোনো রাষ্ট্র ছিল না। ইংরেজরা তার শাসনামলে ভারতবর্ষ শব্দটা বহুল প্রচার করে। তারও আগে মোগলরা বিভিন্ন রাজ্য অধিকার করে অখণ্ড এক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল। প্রকৃতপক্ষে অখণ্ড বাংলার আধিপত্যকে খর্ব করতে ইংরেজরা ভারতবর্ষ নামটি চাপিয়ে দিয়েছে। আজকের ভারত বহু স্বাধীন রাজ্যের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে।

ইংরেজ শাসনের আগে অখণ্ড ভারতের চেতনা বলতে কোনো চেতনাই ছিল না। অখণ্ড ভারতের চেতনার চেয়ে অখণ্ড বাংলার চেতনা আরও প্রাচীন। দিল্লির শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন যশোরের প্রতাপাদিত্য, বিক্রমপুরের চাঁদ রায় ও কেদার রায়, বাক‌লার রাজা রাজবল্লভ সেন, কন্দর্প রায় ও রামচন্দ্ররায়, পিরোজপুরের কিঙ্কর সেন, ভুলুয়ার লক্ষ্মণমাণিক্য, ফরিদপুরের মুকুন্দরাম রায় ও সত্রাজিৎ রায়, বিষ্ণুপুরের বীর হাম্বির, সোনারগাঁওর ঈশা খাঁ, ভাওয়ালের ফজল গাজী, তাহিরপুরের কংসনারায়ণ রায়, সাতৈরের রাজা রামকৃষ্ণ, পুঁটিয়ার পীতম্বর ও নীলাম্বর সেন, উড়িষ্যার ঈশা খাঁ লোহানী ও উসমান খাঁ লোহানী।

তারা কেউ হিন্দু মুসলিম বিভাজনের রাজনীতি গ্রহণ করেননি। তারা স্বাধীনতা চেয়েছিলেন। তারা দিল্লির দাসত্বকে অস্বীকার করেছিলেন। তাদের চেতনাই বাংলার স্বাধীনতার মূল চেতনা। বাংলার বারো ভূইয়া দিল্লির শাসনের বিপরীতে যে চেতনা ধারণ করেছিলেন সেটাই বাংলার চেতনা। নয়া সাংস্কৃতিক বন্দোবস্তের জন্য একটি সাংস্কৃতিক কেবলার অনুসন্ধান করা এই মুহূর্তে জরুরি। সকল প্রকার আধিপত্যবাদ ও দখলদারিত্ব অস্বীকার করেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।