ঢাকা ০৫:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫

    স্বাস্থ্য খাতের দুই মেগাপ্রকল্পে ১৯ হাজার কোটি টাকার অপচয়ের শঙ্কা!

    বিশেষ প্রতিনিধি
    • আপডেট সময় ১২:৫৩:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
    • / ২৭৯ বার পড়া হয়েছে

    প্রায় ১৯ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য খাতের প্রস্তাবিত মেগাপ্রকল্প দুটিতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই, অস্বচ্ছ বরাদ্দ এবং প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে! পরিকল্পনা কমিশন এই প্রকল্প দুটিকে ‘অন্ধ খরচ’ আখ্যা দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে।

    সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রস্তাবিত এই দুটি মেগাপ্রকল্পের সম্মিলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে একটি হলো ১৫ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেবার উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ প্রকল্প’।

    অন্যটি হলো চার হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘জলবায়ু সহনশীল প্রজনন স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সেবা উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ প্রকল্প’। এই বিপুল অঙ্কের অর্থের প্রায় সাত হাজার ৮১১ কোটি টাকা, যা মোট ব্যয়ের প্রায় ৩৯.৪৩ শতাংশ, আসবে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান থেকে, আর বাকি অর্থ জোগান দেবে সরকার। অর্থাৎ, এর একটা বড় অংশই জনগণের ট্যাক্সের টাকা।

    কিন্তু এই বিশাল অঙ্কের প্রকল্প দুটি নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বয়ং পরিকল্পনা কমিশন। সম্প্রতি পৃথক দুটি পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভায় এই প্রকল্প দুটিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং বিস্তারিত ব্যয়ের তালিকা ও সম্ভাব্যতা যাচাইসহ সংশোধিত ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের মতে, ব্যয় কাঠামোতে অসংখ্য অস্পষ্টতা থাকায় অনুমোদনের আগেই প্রকল্পগুলোর কার্যকারিতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

    অন্যদিকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এই প্রকল্পগুলোর জন্য জুন মাসের মধ্যেই উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত না হলে ৪০৪ মিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক সহায়তা ঝুঁকিতে পড়বে। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম সম্প্রতি পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে চিঠি দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে পাঁচটি স্বাস্থ্য প্রকল্প অনুমোদনের অনুরোধ করেন, যার মধ্যে এই দুটি প্রকল্পও রয়েছে।

    পরিকল্পনা উপদেষ্টা সেই চিঠির কপি পরিকল্পনা সচিব ও সংশ্লিষ্ট সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু তাতেও জটিলতা কাটেনি। কারণ, পরিকল্পনা কমিশনের সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রউফ জানিয়েছেন, দুটি প্রকল্পই চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে অনুমোদনহীন নতুন প্রকল্পের তালিকায় নেই। এর মানে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে এই প্রকল্পগুলো এখনই অনুমোদন পাওয়ার মতো অবস্থায় নেই।

    আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, এই মেগাপ্রকল্প দুটির কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই হয়নি! একটি ১৯ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে কীভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়, তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য।

    এর পাশাপাশি, নিয়োগ ও যানবাহন ক্রয়ের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেই, এবং ইআরডির (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ) মাধ্যমে দাতা সংস্থার চুক্তিপত্র বা কমিটমেন্ট লেটারও জমা পড়েনি। এসবই এক ধরনের অস্বচ্ছতা এবং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করার ইঙ্গিত দেয়।

    প্রকল্প প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় থাকা প্রথম প্রকল্পে ৫৪টি উপাদানের মধ্যে ৪৫টিই অস্বচ্ছ বরাদ্দ ধরা হয়েছে। মোট ১৫ হাজার ১২৪ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ১১ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পণ্য বা সেবার ধরন, পরিমাণ বা গুণগত মান স্পষ্ট নয়। এটি ‘অন্ধ খরচ’-এরই নামান্তর।

    বিশেষ করে, ছয় হাজার ২১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে ওষুধ, টিকা ও চিকিৎসাসামগ্রীর জন্য। কিন্তু সেখানে পণ্যের কোনো নির্দিষ্ট তালিকা নেই! পরিকল্পনা কমিশন বলছে, কারিগরি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী খরচের বিস্তারিত তালিকা প্রস্তুত করতে হবে এবং বাজারদরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করতে হবে।

    পরিকল্পনা কমিশনের এক সদস্যের মতে, এই প্রকল্পের প্রায় ৬০ শতাংশ ব্যয় শুধু ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও টিকা খাতে বরাদ্দ। অথচ এ ধরনের পুনরাবৃত্ত ব্যয় ধাপে ধাপে সরকারের পরিচালন বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে।

    এই পরিবর্তন প্রকল্পের ‘এগজিট প্ল্যানে’ পরিষ্কারভাবে থাকতে হবে। এটি নির্দেশ করে যে, এই প্রকল্পগুলোকে দীর্ঘমেয়াদী টেকসই না করে, বরং এককালীন বড় অঙ্কের অর্থ খরচের সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

    এখানেই শেষ নয়। দুটি প্রকল্পে তিন হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা ভবন নির্মাণের জন্য ধরা হলেও মূল প্রকল্প কার্যক্রমে তার কোনো উল্লেখ নেই। কমিশন বলছে, এ ধরনের নির্মাণ ব্যয় আলাদা একটি অবকাঠামো প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত এবং একই ধরনের প্রকল্পের সঙ্গে সম্ভাব্য ‘ডুপ্লিকেশন’ অর্থাৎ পুনরাবৃত্তি এড়াতে পর্যালোচনা করতে হবে। একই কাজ বারবার করার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় রোধ করা প্রয়োজন।

    এছাড়াও, দুটি প্রকল্পে ২৬১ কোটি টাকার পরামর্শক সেবা ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কমিশন। পরামর্শকদের সংখ্যা, পারিশ্রমিক এবং কাজের পরিধি অনুযায়ী ব্যয়ের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে বলা হয়েছে।

     

     

     

    নিউজটি শেয়ার করুন

    স্বাস্থ্য খাতের দুই মেগাপ্রকল্পে ১৯ হাজার কোটি টাকার অপচয়ের শঙ্কা!

    আপডেট সময় ১২:৫৩:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

    প্রায় ১৯ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য খাতের প্রস্তাবিত মেগাপ্রকল্প দুটিতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই, অস্বচ্ছ বরাদ্দ এবং প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে! পরিকল্পনা কমিশন এই প্রকল্প দুটিকে ‘অন্ধ খরচ’ আখ্যা দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে।

    সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রস্তাবিত এই দুটি মেগাপ্রকল্পের সম্মিলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে একটি হলো ১৫ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেবার উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ প্রকল্প’।

    অন্যটি হলো চার হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘জলবায়ু সহনশীল প্রজনন স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সেবা উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ প্রকল্প’। এই বিপুল অঙ্কের অর্থের প্রায় সাত হাজার ৮১১ কোটি টাকা, যা মোট ব্যয়ের প্রায় ৩৯.৪৩ শতাংশ, আসবে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান থেকে, আর বাকি অর্থ জোগান দেবে সরকার। অর্থাৎ, এর একটা বড় অংশই জনগণের ট্যাক্সের টাকা।

    কিন্তু এই বিশাল অঙ্কের প্রকল্প দুটি নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বয়ং পরিকল্পনা কমিশন। সম্প্রতি পৃথক দুটি পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভায় এই প্রকল্প দুটিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং বিস্তারিত ব্যয়ের তালিকা ও সম্ভাব্যতা যাচাইসহ সংশোধিত ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের মতে, ব্যয় কাঠামোতে অসংখ্য অস্পষ্টতা থাকায় অনুমোদনের আগেই প্রকল্পগুলোর কার্যকারিতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

    অন্যদিকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এই প্রকল্পগুলোর জন্য জুন মাসের মধ্যেই উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত না হলে ৪০৪ মিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক সহায়তা ঝুঁকিতে পড়বে। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম সম্প্রতি পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে চিঠি দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে পাঁচটি স্বাস্থ্য প্রকল্প অনুমোদনের অনুরোধ করেন, যার মধ্যে এই দুটি প্রকল্পও রয়েছে।

    পরিকল্পনা উপদেষ্টা সেই চিঠির কপি পরিকল্পনা সচিব ও সংশ্লিষ্ট সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু তাতেও জটিলতা কাটেনি। কারণ, পরিকল্পনা কমিশনের সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রউফ জানিয়েছেন, দুটি প্রকল্পই চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে অনুমোদনহীন নতুন প্রকল্পের তালিকায় নেই। এর মানে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে এই প্রকল্পগুলো এখনই অনুমোদন পাওয়ার মতো অবস্থায় নেই।

    আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, এই মেগাপ্রকল্প দুটির কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই হয়নি! একটি ১৯ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে কীভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়, তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য।

    এর পাশাপাশি, নিয়োগ ও যানবাহন ক্রয়ের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেই, এবং ইআরডির (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ) মাধ্যমে দাতা সংস্থার চুক্তিপত্র বা কমিটমেন্ট লেটারও জমা পড়েনি। এসবই এক ধরনের অস্বচ্ছতা এবং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করার ইঙ্গিত দেয়।

    প্রকল্প প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় থাকা প্রথম প্রকল্পে ৫৪টি উপাদানের মধ্যে ৪৫টিই অস্বচ্ছ বরাদ্দ ধরা হয়েছে। মোট ১৫ হাজার ১২৪ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ১১ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পণ্য বা সেবার ধরন, পরিমাণ বা গুণগত মান স্পষ্ট নয়। এটি ‘অন্ধ খরচ’-এরই নামান্তর।

    বিশেষ করে, ছয় হাজার ২১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে ওষুধ, টিকা ও চিকিৎসাসামগ্রীর জন্য। কিন্তু সেখানে পণ্যের কোনো নির্দিষ্ট তালিকা নেই! পরিকল্পনা কমিশন বলছে, কারিগরি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী খরচের বিস্তারিত তালিকা প্রস্তুত করতে হবে এবং বাজারদরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করতে হবে।

    পরিকল্পনা কমিশনের এক সদস্যের মতে, এই প্রকল্পের প্রায় ৬০ শতাংশ ব্যয় শুধু ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও টিকা খাতে বরাদ্দ। অথচ এ ধরনের পুনরাবৃত্ত ব্যয় ধাপে ধাপে সরকারের পরিচালন বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে।

    এই পরিবর্তন প্রকল্পের ‘এগজিট প্ল্যানে’ পরিষ্কারভাবে থাকতে হবে। এটি নির্দেশ করে যে, এই প্রকল্পগুলোকে দীর্ঘমেয়াদী টেকসই না করে, বরং এককালীন বড় অঙ্কের অর্থ খরচের সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

    এখানেই শেষ নয়। দুটি প্রকল্পে তিন হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা ভবন নির্মাণের জন্য ধরা হলেও মূল প্রকল্প কার্যক্রমে তার কোনো উল্লেখ নেই। কমিশন বলছে, এ ধরনের নির্মাণ ব্যয় আলাদা একটি অবকাঠামো প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত এবং একই ধরনের প্রকল্পের সঙ্গে সম্ভাব্য ‘ডুপ্লিকেশন’ অর্থাৎ পুনরাবৃত্তি এড়াতে পর্যালোচনা করতে হবে। একই কাজ বারবার করার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় রোধ করা প্রয়োজন।

    এছাড়াও, দুটি প্রকল্পে ২৬১ কোটি টাকার পরামর্শক সেবা ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কমিশন। পরামর্শকদের সংখ্যা, পারিশ্রমিক এবং কাজের পরিধি অনুযায়ী ব্যয়ের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে বলা হয়েছে।