বদলির আদেশ ছিঁড়ে আন্দোলনে অংশ নেওয়া ৯ এনবিআর কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

- আপডেট সময় ০৫:০৬:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
- / ২৬৩ বার পড়া হয়েছে
বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাম্প্রতিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার অভিযোগে আরও ৯ জন কর কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে সরকার। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) পৃথক আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানায়।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, এই ৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘উদ্দত আচরণ’ ও ‘প্রশাসনিক অবজ্ঞা’র অভিযোগে বিভাগীয় তদন্ত শেষে তাঁদের এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তের আদেশে সই করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। বরখাস্তকালীন সময়ে তাঁরা সরকারি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।
সূত্র জানায়, গত ২২ জুন যেসব কর্মকর্তার বদলির আদেশ জারি হয়েছিল, তাঁদের কেউ কেউ প্রকাশ্য সভায় সেই আদেশ ছিঁড়ে ফেলে প্রতিবাদ জানায়। এ ধরনের আচরণকে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
যাঁরা এবার বরখাস্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা কর অঞ্চল-২–এর যুগ্ম কর কমিশনার মাসুমা খাতুন, কর অঞ্চল-১৫–এর যুগ্ম কর কমিশনার মুরাদ আহমেদ, কুষ্টিয়া কর অঞ্চলের মোরশেদ উদ্দীন খান, নোয়াখালী কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, কক্সবাজার কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার আশরাফুল আলম প্রধান, খুলনা কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার শিহাবুল ইসলাম, রংপুর কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার নুশরাত জাহান, কুমিল্লা কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার ইমাম তৌহিদ হাসান এবং এনবিআরের প্রথম সচিব তানজিনা রইস।
জানা গেছে, এনবিআরের গত মাসের আন্দোলনে তাঁরা সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং অনেকে নেতৃত্বও দিয়েছেন। ওই আন্দোলনে অংশ নিয়ে ২৮ ও ২৯ জুন দেশের বিভিন্ন কর অফিসে কর্মবিরতি পালন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রাজস্ব খাতে কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হলেও পরে ব্যবসায়ী মহলের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়।
আন্দোলন প্রত্যাহারের পর থেকেই শুরু হয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে তিনজন এনবিআর সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এনবিআরের দুজন সদস্যসহ মোট ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। তাঁদের অধিকাংশই আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।
সরকারের এই পদক্ষেপে এনবিআরের ভেতর আবারও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার সতর্ক করা হলেও যাঁরা নিয়ম ভেঙেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।