ঢাকা ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

    ইইউ’র ১৮তম নিষেধাজ্ঞায় ক্ষুব্ধ রাশিয়া, মেদভেদেভের হুঁশিয়ারি

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০১:১৯:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
    • / ২৬২ বার পড়া হয়েছে

    ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কড়াকড়ি আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গত সপ্তাহে রাশিয়ার ওপর ১৮তম দফায় নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ জারি করেছে ইইউ, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিস্তৃত ও কঠোর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এসব নিষেধাজ্ঞাকে মোটেও গুরুত্ব দিচ্ছে না রাশিয়া।

    রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে রাশিয়ান সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাশিয়াকে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমাদের অর্থনীতি নিশ্চয়ই টিকে থাকবে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ছত্রভঙ্গ ও পরাজিত করার কাজ অব্যাহত থাকবে।”

    মেদভেদেভ আরও জানান, কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলার মাত্রা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, “শুধু সামরিক নয়, রাজনৈতিকভাবেও মস্কোর উচিত হবে ইইউ’র সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করা এবং এই পশ্চিমা ব্লকের থেকে সম্পূর্ণ দূরত্ব বজায় রাখা।”

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয় ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও যুদ্ধের অবসান হয়নি। বরং সময়ের সাথে সাথে যুদ্ধের ভয়াবহতা ও ক্ষয়ক্ষতি বেড়েই চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের হিসেব অনুযায়ী, এই দীর্ঘ যুদ্ধে উভয়পক্ষে নিহত ও আহত হয়েছেন অন্তত ১২ লাখ মানুষ।

    যুদ্ধের শুরু থেকেই রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সর্বশেষ, গত বুধবার ইইউ’র পররাষ্ট্রবিষয়ক বিভাগের শীর্ষ নির্বাহী কাজা কালাস রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৮তম নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

    এই নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ তহবিল “রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড” এবং ২২টি রুশ ব্যাংক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সকল ব্যাংকের সঙ্গে এসব ব্যাংকের আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে “নর্ড স্ট্রিম” গ্যাস পাইপলাইন ব্যবহারের ওপরও।

    উল্লেখ্য, এই গ্যাস পাইপলাইনটির মাধ্যমে রাশিয়া ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ করত। ২০২২ সালে এক রহস্যজনক হামলায় পাইপলাইনে ভয়াবহ ক্ষতি হয়, যার ফলে এটি আজও অচল অবস্থায় রয়েছে। ইইউ মনে করছে, গ্যাস নির্ভরতা কমিয়ে রাশিয়ার ওপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।

    এই পরিস্থিতিতে মস্কোর বক্তব্য ও মনোভাব স্পষ্ট—তারা পিছু হটছে না বরং যুদ্ধ ও পশ্চিমা প্রতিক্রিয়ার মুখে আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা এবং কূটনৈতিক চাপ রাশিয়াকে তার লক্ষ্য থেকে বিরত করতে পারবে না, এমনটাই জানিয়ে দিচ্ছে মেদভেদেভের হুঁশিয়ারি।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ইইউ’র ১৮তম নিষেধাজ্ঞায় ক্ষুব্ধ রাশিয়া, মেদভেদেভের হুঁশিয়ারি

    আপডেট সময় ০১:১৯:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

    ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কড়াকড়ি আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গত সপ্তাহে রাশিয়ার ওপর ১৮তম দফায় নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ জারি করেছে ইইউ, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিস্তৃত ও কঠোর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এসব নিষেধাজ্ঞাকে মোটেও গুরুত্ব দিচ্ছে না রাশিয়া।

    রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে রাশিয়ান সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাশিয়াকে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমাদের অর্থনীতি নিশ্চয়ই টিকে থাকবে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ছত্রভঙ্গ ও পরাজিত করার কাজ অব্যাহত থাকবে।”

    মেদভেদেভ আরও জানান, কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলার মাত্রা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, “শুধু সামরিক নয়, রাজনৈতিকভাবেও মস্কোর উচিত হবে ইইউ’র সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করা এবং এই পশ্চিমা ব্লকের থেকে সম্পূর্ণ দূরত্ব বজায় রাখা।”

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয় ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও যুদ্ধের অবসান হয়নি। বরং সময়ের সাথে সাথে যুদ্ধের ভয়াবহতা ও ক্ষয়ক্ষতি বেড়েই চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের হিসেব অনুযায়ী, এই দীর্ঘ যুদ্ধে উভয়পক্ষে নিহত ও আহত হয়েছেন অন্তত ১২ লাখ মানুষ।

    যুদ্ধের শুরু থেকেই রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সর্বশেষ, গত বুধবার ইইউ’র পররাষ্ট্রবিষয়ক বিভাগের শীর্ষ নির্বাহী কাজা কালাস রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৮তম নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

    এই নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ তহবিল “রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড” এবং ২২টি রুশ ব্যাংক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সকল ব্যাংকের সঙ্গে এসব ব্যাংকের আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে “নর্ড স্ট্রিম” গ্যাস পাইপলাইন ব্যবহারের ওপরও।

    উল্লেখ্য, এই গ্যাস পাইপলাইনটির মাধ্যমে রাশিয়া ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ করত। ২০২২ সালে এক রহস্যজনক হামলায় পাইপলাইনে ভয়াবহ ক্ষতি হয়, যার ফলে এটি আজও অচল অবস্থায় রয়েছে। ইইউ মনে করছে, গ্যাস নির্ভরতা কমিয়ে রাশিয়ার ওপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।

    এই পরিস্থিতিতে মস্কোর বক্তব্য ও মনোভাব স্পষ্ট—তারা পিছু হটছে না বরং যুদ্ধ ও পশ্চিমা প্রতিক্রিয়ার মুখে আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা এবং কূটনৈতিক চাপ রাশিয়াকে তার লক্ষ্য থেকে বিরত করতে পারবে না, এমনটাই জানিয়ে দিচ্ছে মেদভেদেভের হুঁশিয়ারি।