গোপালগঞ্জে গণগ্রেফতারের অভিযোগ সঠিক নয়, বরং যাঁরা প্রকৃত অপরাধী, শুধু তাঁদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে—এমন মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

রোববার (২০ জুলাই) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা ও কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, গোপালগঞ্জের সাম্প্রতিক ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব ছিল, তবে বর্তমানে পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেকটাই স্বাভাবিক। সেখানে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছে এবং শিগগিরই ১৪৪ ধারাও প্রত্যাহার করা হবে।

আওয়ামী লীগের ডাকা হরতাল সম্পর্কে মতামত জানাতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এবারকার হরতালে নাশকতার মাত্রা আগের চেয়ে অনেক কম ছিল। সরকার সহনশীলতা ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য বজায় রাখতে হবে। জনগণ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে মত প্রকাশ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। তবে কেউ যেন অশালীন ভাষা বা আক্রমণাত্মক আচরণে না জড়ায়।

তিনি আরও বলেন, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না—সত্যি কথা বলতে হবে। কেউ অপরাধ করলে তাকে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে। তবে নির্দোষ কাউকে যেন হয়রানির শিকার না হতে হয়, সে বিষয়ে সরকার সজাগ। গোপালগঞ্জে কোনো শিশুকে গ্রেফতার করা হয়েছে এমন তথ্য তার কাছে নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন। আগের মতো নির্বিচারে গণগ্রেফতারের কোনো সুযোগ এখন নেই, বরং এখন শুধুমাত্র প্রকৃত অপরাধীদেরই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য যথেষ্ট সক্ষম। এখনো যথেষ্ট সময় রয়েছে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এবং তারা সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়েও উপদেষ্টা মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দেশে যখন যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, সেনাবাহিনী সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। সার্বিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রতিটি নিরাপত্তা সংস্থা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এইসব পদক্ষেপ ও বক্তব্যের মাধ্যমে সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর ও কার্যকর অবস্থান নিয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।