ঢাকা ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

    চলতি সপ্তাহেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে চলেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০২:১৯:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
    • / ২৬৫ বার পড়া হয়েছে

    যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার চলতি সপ্তাহেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ প্রভাবশালী দৈনিক দ্য টাইমস। ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির অভ্যন্তরীণ চাপের মুখে স্টারমার এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    প্রতিবেদনে বলা হয়, মন্ত্রিসভার অন্তত সাতজন সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তিনি নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন এবং ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন। যদিও ইশতেহারে নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ ছিল না, তবুও ২০২৪ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভের সময় লেবার পার্টি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েই জনগণের সামনে এসেছিল।

    দ্য টাইমস আরও জানায়, লেবার পার্টির প্রায় ১৩০ জন ব্যাকবেঞ্চ এমপি—সংসদীয় দলের এক-তৃতীয়াংশ—ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দাবি করে সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, স্টারমার বর্তমানে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে একটি পরিকল্পনা ভাগ করে নিচ্ছেন, যার উদ্দেশ্য হলো মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা। এর অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের “নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের অবিচ্ছেদ্য অধিকার”কে সম্মান জানিয়ে তাদের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

    এর আগেই যুক্তরাজ্যের ২২০ জনের বেশি সংসদ সদস্য, যাদের মধ্যে লেবার পার্টিরও অনেকে রয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তিনি জাতিসংঘ আয়োজিত আসন্ন সম্মেলনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেন। এই সম্মেলনটি ২৮ ও ২৯ জুলাই নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হবে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের সহ-সভাপতিত্বে।

    নয়টি ভিন্ন রাজনৈতিক দলের এমপিদের স্বাক্ষর করা এক যৌথ চিঠিতে বলা হয়, “যুক্তরাজ্য এককভাবে ফিলিস্তিন গঠন করতে না পারলেও তার স্বীকৃতি একটি আন্তর্জাতিক বার্তা দেবে।” তারা আরও বলেন, “১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষণায় ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা ছিল। এখন সময় এসেছে যুক্তরাজ্য তার নৈতিক দায়িত্ব পালন করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।”

    এই চিঠিতে কনজারভেটিভ, লিবারেল ডেমোক্র্যাট, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি), ওয়েলসের প্লাইড কামরিসসহ বিভিন্ন দলের এমপিরা স্বাক্ষর করেছেন। চিঠির ভাষ্য অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির বার্তা ছড়াতে যুক্তরাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করতে এই সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ।

    বিশ্লেষকদের মতে, স্টারমার তার সরকারের অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে দাঁড়িয়ে একটি কূটনৈতিক ও নৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন, যা ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ মধ্যপ্রাচ্যনীতি নির্ধারণে মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    চলতি সপ্তাহেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে চলেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

    আপডেট সময় ০২:১৯:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

    যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার চলতি সপ্তাহেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ প্রভাবশালী দৈনিক দ্য টাইমস। ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির অভ্যন্তরীণ চাপের মুখে স্টারমার এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    প্রতিবেদনে বলা হয়, মন্ত্রিসভার অন্তত সাতজন সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তিনি নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন এবং ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন। যদিও ইশতেহারে নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ ছিল না, তবুও ২০২৪ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভের সময় লেবার পার্টি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েই জনগণের সামনে এসেছিল।

    দ্য টাইমস আরও জানায়, লেবার পার্টির প্রায় ১৩০ জন ব্যাকবেঞ্চ এমপি—সংসদীয় দলের এক-তৃতীয়াংশ—ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দাবি করে সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, স্টারমার বর্তমানে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে একটি পরিকল্পনা ভাগ করে নিচ্ছেন, যার উদ্দেশ্য হলো মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা। এর অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের “নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের অবিচ্ছেদ্য অধিকার”কে সম্মান জানিয়ে তাদের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

    এর আগেই যুক্তরাজ্যের ২২০ জনের বেশি সংসদ সদস্য, যাদের মধ্যে লেবার পার্টিরও অনেকে রয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তিনি জাতিসংঘ আয়োজিত আসন্ন সম্মেলনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেন। এই সম্মেলনটি ২৮ ও ২৯ জুলাই নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হবে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের সহ-সভাপতিত্বে।

    নয়টি ভিন্ন রাজনৈতিক দলের এমপিদের স্বাক্ষর করা এক যৌথ চিঠিতে বলা হয়, “যুক্তরাজ্য এককভাবে ফিলিস্তিন গঠন করতে না পারলেও তার স্বীকৃতি একটি আন্তর্জাতিক বার্তা দেবে।” তারা আরও বলেন, “১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষণায় ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা ছিল। এখন সময় এসেছে যুক্তরাজ্য তার নৈতিক দায়িত্ব পালন করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।”

    এই চিঠিতে কনজারভেটিভ, লিবারেল ডেমোক্র্যাট, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি), ওয়েলসের প্লাইড কামরিসসহ বিভিন্ন দলের এমপিরা স্বাক্ষর করেছেন। চিঠির ভাষ্য অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির বার্তা ছড়াতে যুক্তরাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করতে এই সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ।

    বিশ্লেষকদের মতে, স্টারমার তার সরকারের অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে দাঁড়িয়ে একটি কূটনৈতিক ও নৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন, যা ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ মধ্যপ্রাচ্যনীতি নির্ধারণে মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।