ঢাকা ০৯:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫

    হাসপাতালের হেল্পডেস্কে শেখ হাসিনার আদেশ-নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৩:৫৫:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৬৬ বার পড়া হয়েছে

    জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান। সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে তিনি এই জবানবন্দি দেন।

    জবানবন্দিতে আবদুল্লাহ জানান, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় আন্দোলনের সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। গুলি লাগে তার বাঁ হাঁটুর নিচে। পরে তাকে ভর্তি করা হয় আগারগাঁওয়ের জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল)।

    তিনি বলেন, ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায়, ২৬ বা ২৭ জুলাই সকালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনে গেলে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। শেখ হাসিনা তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি একজন শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন। তখন শেখ হাসিনা বুঝতে পারেন তিনি আন্দোলনকারী।

    আবদুল্লাহ ইমরান জানান, সাক্ষাতের শেষ দিকে শেখ হাসিনা হাসপাতালের হেল্পডেস্কে গিয়ে “নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ” আদেশ দিয়ে যান। তখন তিনি এর মানে না বুঝলেও পরে উপলব্ধি করেন এর ভয়াবহতা। তিনি অভিযোগ করেন, এর ফলে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং হাসপাতাল ছাড়ার সুযোগও দেওয়া হয়নি। সময়মতো অস্ত্রোপচার হয়নি, ওষুধ কেনা বন্ধ হয়ে যায় এবং তার পরিবার তাকে নিয়ে যেতে চাইলেও বাধা দেওয়া হয়।

    আবদুল্লাহ দাবি করেন, তার পা কেটে তাকে কারাগারে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল এবং এই ঘটনার জন্য তিনি শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও তৎকালীন আইজিপিকে দায়ী করেন। এর আগে এই মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেন একজন মাইক্রোবাসচালক, খোকন চন্দ্র বর্মণ।

    ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় যেসব মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, তার এক বছরের মাথায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হলো। গতকাল সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মামলার শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

    ট্যাগস :

    নিউজটি শেয়ার করুন

    হাসপাতালের হেল্পডেস্কে শেখ হাসিনার আদেশ-নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ

    আপডেট সময় ০৩:৫৫:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

    জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান। সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে তিনি এই জবানবন্দি দেন।

    জবানবন্দিতে আবদুল্লাহ জানান, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় আন্দোলনের সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। গুলি লাগে তার বাঁ হাঁটুর নিচে। পরে তাকে ভর্তি করা হয় আগারগাঁওয়ের জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল)।

    তিনি বলেন, ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায়, ২৬ বা ২৭ জুলাই সকালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনে গেলে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। শেখ হাসিনা তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি একজন শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন। তখন শেখ হাসিনা বুঝতে পারেন তিনি আন্দোলনকারী।

    আবদুল্লাহ ইমরান জানান, সাক্ষাতের শেষ দিকে শেখ হাসিনা হাসপাতালের হেল্পডেস্কে গিয়ে “নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ” আদেশ দিয়ে যান। তখন তিনি এর মানে না বুঝলেও পরে উপলব্ধি করেন এর ভয়াবহতা। তিনি অভিযোগ করেন, এর ফলে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং হাসপাতাল ছাড়ার সুযোগও দেওয়া হয়নি। সময়মতো অস্ত্রোপচার হয়নি, ওষুধ কেনা বন্ধ হয়ে যায় এবং তার পরিবার তাকে নিয়ে যেতে চাইলেও বাধা দেওয়া হয়।

    আবদুল্লাহ দাবি করেন, তার পা কেটে তাকে কারাগারে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল এবং এই ঘটনার জন্য তিনি শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও তৎকালীন আইজিপিকে দায়ী করেন। এর আগে এই মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেন একজন মাইক্রোবাসচালক, খোকন চন্দ্র বর্মণ।

    ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় যেসব মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, তার এক বছরের মাথায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হলো। গতকাল সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মামলার শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।