০২:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

সেন্ট মার্টিনে বিপন্ন কাছিম রক্ষায় বন্ধ্যা করা হবে ৩ হাজার কুকুর

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:১৯:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / ২৮ বার পড়া হয়েছে

বঙ্গোপসাগরের প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনে জীববৈচিত্র্য ও বিশেষ করে বিপন্ন কাছিম সংরক্ষণে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। দ্বীপে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রায় তিন হাজার কুকুরকে বন্ধ্যা করার কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যমতে, প্রায় ১০ হাজার ৭০০ জন মানুষের বসবাস এই দ্বীপে, যেখানে কুকুরের সংখ্যা ৭ হাজারেরও বেশি। কুকুরের অনিয়ন্ত্রিত বংশবৃদ্ধি জীববৈচিত্র্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। বিশেষ করে ডিম পাড়তে আসা সামুদ্রিক কাছিম কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছে।

পরিবেশবিদদের মতে, খাদ্যচক্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ জরুরি। তবে প্রাণিকল্যাণ আইন, ২০১৯ অনুযায়ী কুকুর নিধন নিষিদ্ধ হওয়ায়, বন্ধ্যাকরণই এই সমস্যার সবচেয়ে মানবিক ও আইনি সমাধান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি সংস্থা ‘অভয়ারণ্য’। আজ সোমবার অভয়ারণ্যের একটি দল বিদেশি চিকিৎসকদের নিয়ে সেন্ট মার্টিনে পৌঁছেছে।

আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে কুকুর বন্ধ্যাকরণের কাজ। প্রথম ধাপে এক হাজার কুকুর বন্ধ্যা করা হবে, যা চলবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। ধাপে ধাপে মোট তিন হাজার কুকুরকে বন্ধ্যাকরণের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালক মো. জমির উদ্দিন জানিয়েছেন, এই কর্মসূচিতে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড ভেটেরিনারি সার্ভিস (ডব্লিউভিএস)’ সহযোগিতা করছে। দ্বীপে ইতিমধ্যেই কুকুর জরিপের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে ৭০ শতাংশ কুকুরই বেওয়ারিশ।

অভয়ারণ্যের চেয়ারম্যান রুবাইয়া আহমদ জানান, একটি পরিবারে গড়ে চার-পাঁচটি কুকুর রয়েছে এবং দুই বছর পর সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়াতে পারে বিশটি করে।

ফলে এই সমস্যার সমাধানে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তবে আবহাওয়ার প্রতিকূলতা, বিশেষ করে এপ্রিল মাসে সম্ভাব্য নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়, কর্মসূচির অগ্রগতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

সেন্ট মার্টিনে বিপন্ন কাছিম রক্ষায় বন্ধ্যা করা হবে ৩ হাজার কুকুর

আপডেট সময় ০৯:১৯:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

বঙ্গোপসাগরের প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনে জীববৈচিত্র্য ও বিশেষ করে বিপন্ন কাছিম সংরক্ষণে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। দ্বীপে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রায় তিন হাজার কুকুরকে বন্ধ্যা করার কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যমতে, প্রায় ১০ হাজার ৭০০ জন মানুষের বসবাস এই দ্বীপে, যেখানে কুকুরের সংখ্যা ৭ হাজারেরও বেশি। কুকুরের অনিয়ন্ত্রিত বংশবৃদ্ধি জীববৈচিত্র্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। বিশেষ করে ডিম পাড়তে আসা সামুদ্রিক কাছিম কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছে।

পরিবেশবিদদের মতে, খাদ্যচক্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ জরুরি। তবে প্রাণিকল্যাণ আইন, ২০১৯ অনুযায়ী কুকুর নিধন নিষিদ্ধ হওয়ায়, বন্ধ্যাকরণই এই সমস্যার সবচেয়ে মানবিক ও আইনি সমাধান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি সংস্থা ‘অভয়ারণ্য’। আজ সোমবার অভয়ারণ্যের একটি দল বিদেশি চিকিৎসকদের নিয়ে সেন্ট মার্টিনে পৌঁছেছে।

আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে কুকুর বন্ধ্যাকরণের কাজ। প্রথম ধাপে এক হাজার কুকুর বন্ধ্যা করা হবে, যা চলবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। ধাপে ধাপে মোট তিন হাজার কুকুরকে বন্ধ্যাকরণের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালক মো. জমির উদ্দিন জানিয়েছেন, এই কর্মসূচিতে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড ভেটেরিনারি সার্ভিস (ডব্লিউভিএস)’ সহযোগিতা করছে। দ্বীপে ইতিমধ্যেই কুকুর জরিপের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে ৭০ শতাংশ কুকুরই বেওয়ারিশ।

অভয়ারণ্যের চেয়ারম্যান রুবাইয়া আহমদ জানান, একটি পরিবারে গড়ে চার-পাঁচটি কুকুর রয়েছে এবং দুই বছর পর সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়াতে পারে বিশটি করে।

ফলে এই সমস্যার সমাধানে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তবে আবহাওয়ার প্রতিকূলতা, বিশেষ করে এপ্রিল মাসে সম্ভাব্য নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়, কর্মসূচির অগ্রগতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।