গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৮৬, আহত ৪৯২

- আপডেট সময় ১১:৪৩:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫
- / ২৫৯ বার পড়া হয়েছে
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর টানা গোলাবর্ষণ ও গুলিতে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৮৬ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ৪৯২ জন। স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ হামলার ঘটনা ঘটে। সোমবার সন্ধ্যার পর এক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৫৮ জন প্রাণ হারান বিমান থেকে নিক্ষেপ করা গোলায়। বাকিদের মৃত্যু হয় খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে। মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, “সোমবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজার হাসপাতালগুলোতে ৮৬ জনের মরদেহ এবং ৪৯২ জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেকেই ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েছেন। সরঞ্জাম ও জনবল সংকটের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।”
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, সর্বশেষ হামলার পর থেকে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৭৪৪ জনে এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯ জন ফিলিস্তিনি।
মানবিক সহায়তা ও জিম্মিদের মুক্তির শর্তে গত ১৯ জুন যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল ইসরায়েল ও হামাস। তবে গত ১৮ মার্চ সেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু হয়। সেই থেকে পাঁচ মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১০ হাজার ৯০০ জন এবং আহত হয়েছেন ৪৬ হাজার ২১৮ জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, গত ২৭ মে থেকে নিয়মিতভাবেই খাদ্য ও ত্রাণ সংগ্রহে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ওই দিন প্রথমবারের মতো গুলি চালানো হয় এবং তারপর থেকে এখন পর্যন্ত শুধু ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ২ হাজার ১২৩ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ হাজার ৬১৫ জন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর প্রতিশোধ ও জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যেই ইসরায়েলি বাহিনী টানা সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। দীর্ঘ ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই অভিযানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে ইসরায়েল কয়েক দফায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও পুনরায় হামলা শুরু করেছে।
হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন এখনও জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েলি সেনারা তাদের সামরিক অভিযানের মাধ্যমে উদ্ধার করার ঘোষণা দিয়েছে।
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বারবার গাজায় যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। তবুও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি অকার্যকর করা ও সব জিম্মিকে মুক্ত না করা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।