নেদারল্যান্ডসকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে টানা তৃতীয় টি–টোয়েন্টি সিরিজ জয়

- আপডেট সময় ১২:০২:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৫৯ বার পড়া হয়েছে
গল্পটা যেন আগের ম্যাচেরই পুনরাবৃত্তি। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গ্যালারিভর্তি দর্শক, টসে জিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন দাসের ফিল্ডিং নেওয়া, তারপর বোলিংয়ে নেদারল্যান্ডসকে চাপে ফেলে সহজেই রান তাড়া করে ফেলা। পার্থক্য শুধু ম্যাচের দৈর্ঘ্যে—প্রথম ম্যাচ শেষ হয়েছিল ৩৩.৩ ওভারে, আর দ্বিতীয়টি শেষ হয় মাত্র ৩০.৪ ওভারে। পার্থক্য আছে জয়ের ব্যবধানেও—প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটে জয়, দ্বিতীয় ম্যাচে আরও বড় ব্যবধানে, ৯ উইকেটে।
এই জয়ে সিরিজের শেষ ম্যাচটিকে আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত করে আগেই ট্রফি জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পর নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে টি–টোয়েন্টিতে টানা তৃতীয় সিরিজ জয় করল টাইগাররা।
তবে এমন জয়ের পরও প্রশ্ন থেকেই যায়—প্রতিপক্ষ দুর্বল হওয়ায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে এমন ফলাফল প্রত্যাশিতই ছিল। এশিয়া কাপের মাত্র এক সপ্তাহ আগে এই সিরিজে মূল লক্ষ্য হওয়ার কথা ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স যাচাই করা। ক্রিকেটাররা নিজেদের ভূমিকা কতটা সফলভাবে পালন করছেন, সেটিই ছিল আলোচনার বিষয়। দ্বিতীয় ম্যাচেও বাংলাদেশি খেলোয়াড়রা সেই পরীক্ষায় ‘পাস মার্ক’ পেয়ে গেছেন।
বিশেষ করে একাদশে জায়গা পাওয়া দুই ক্রিকেটার তানজিম হাসান ও নাসুম আহমেদের পারফরম্যান্স বাড়তি তৃপ্তি এনে দিয়েছে। নাসুম ৩ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা, আর তানজিম ৩ ওভারে ১৬ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। বড় টুর্নামেন্টের আগে নতুনদের পারফরম্যান্স যাচাই করাই আসলে এই সিরিজ আয়োজনের অন্যতম কারণ ছিল।
তবুও প্রশ্ন উঠেছে, কেন টানা দুই ম্যাচেই টস জিতে ব্যাটিংয়ের পরিবর্তে ফিল্ডিং নেওয়া হলো। ব্যাটসম্যানদের পরখ করে নেওয়ার সুযোগ এভাবেই হারাল বাংলাদেশ। যদিও টিম ম্যানেজমেন্টের দাবি, প্রতিপক্ষ যত দুর্বলই হোক না কেন, আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয়ের কথাই আগে ভাবা হয়। তবে ভেতরের উদ্দেশ্য আসলে এশিয়া কাপের আগে জোরদার প্রস্তুতি ছিল বলেই ধারণা।
দ্বিতীয় ম্যাচে নেদারল্যান্ডস ব্যাট হাতে ভালো শুরু করার ইঙ্গিত দিয়েছিল। প্রথম দুই ওভারে আসে ১৪ রান। কিন্তু তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে নাসুম হোসেন একাই ম্যাচের গতি পাল্টে দেন। পরপর দুই বলে ম্যাক্স ও’ডাউড ও তেজা নিদামানারুকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান তিনি। যদিও অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস সেটি হতে দেননি, কিন্তু তিনিও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ—১১ বলে মাত্র ৯ রান করে তাসকিন আহমেদের শিকার হন। দশম ওভারে আরও দুই উইকেট হারিয়ে নেদারল্যান্ডস তখন ৬২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায়।
শেষ দিকে আরিয়ান দত্ত কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। তাঁর ২৪ বলে ৩০ রানের ইনিংসে ৩টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল। এর সুবাদে নেদারল্যান্ডস তিন অঙ্ক ছুঁতে সক্ষম হয়। তবে ১৭.৩ ওভারেই ১০৩ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা।
অল্প রান তাড়ায় নেমে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল যত দ্রুত সম্ভব ম্যাচ শেষ করা। তানজিদ হাসান ও পারভেজ হোসেনের উদ্বোধনী জুটি দিয়েছে ৪০ রান। ২১ বলে ২৩ রান করে আউট হওয়ার আগে পারভেজ নিজের নাম তুলেছেন নতুন রেকর্ডে—এক ক্যালেন্ডার বছরে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান হিসেবে সবচেয়ে বেশি ছক্কা (২২) মারার কীর্তি গড়েছেন তিনি। পরে তাঁর সঙ্গী তানজিদ হাসান সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যান।
তানজিদ করেছেন অসাধারণ হাফ সেঞ্চুরি, ৪০ বলে অপরাজিত ৫৪ রান। তাঁকে সঙ্গ দিয়ে অধিনায়ক লিটন দাস খেলেছেন ১৮ বলে অপরাজিত ১৮ রান। দুজনের ব্যাটে ভর করেই বাংলাদেশ ৯ উইকেট হাতে রেখে সহজ জয় পায় এবং সিরিজ নিশ্চিত করে।