ঢাকা ০৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০১:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
    • / ২৫৮ বার পড়া হয়েছে

    ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে রিট করা এক নারী শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্ল্যাটফর্মটির সদস্যরা এ দাবি জানান। পাশাপাশি ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ১৩ দফা দাবি পেশ করে সংগঠনটি।

    সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাহমিনা আক্তার ও মোশাহিদা সুলতানা। লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, হাইকোর্টে একজন প্রার্থীর রিটের প্রেক্ষিতে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আলী হুসেন ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে সেই নারী প্রার্থীকে প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় হুমকিদাতাকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।

    লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ডাকসু নির্বাচনের বিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট শাস্তি কী হবে, তা কোথাও স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। এর ফলে ঢালাওভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। অথচ এসব বিষয়ে তথ্য জানানো হলেও নির্বাচন কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

    বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের দাবি অনুযায়ী, ডাকসু নির্বাচনে মোট ভোটারের অনুপাতে যথেষ্টসংখ্যক ভোটকেন্দ্র ও বুথ নিশ্চিত করতে হবে। ভোটদানের সময়সীমা বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বাড়াতে হবে এবং ভোট গণনার প্রক্রিয়াকে কার্যকর ও স্বচ্ছ করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচনী আচরণবিধি ও এর লঙ্ঘনসংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রহণ এবং তা যেন কোনো পক্ষের প্রতি বৈষম্যমূলক না হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।

    তাদের আরও দাবি, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব পালনের জন্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্য যেন না হয়। সাইবার বুলিং প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়া, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অরুচিকর পোস্ট ও মন্তব্যের মাধ্যমে আক্রমণ করা হয়—এমন গ্রুপ বা পেজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নিরাপদে ভোট দেওয়ার জন্য ক্যাম্পাসে আসতে পর্যাপ্ত বাস ও ট্রিপের ব্যবস্থা করতে হবে।

    সংবাদমাধ্যমকর্মী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সংবাদ সংগ্রাহকদের আচরণবিধি মেনে চলার বাধ্যবাধকতা আরোপ এবং যৌন হয়রানিসংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের মাধ্যমে সরাসরি নিষ্পত্তি করার বিষয়টিও তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে।

    বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক জানায়, যেভাবে তারা ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছিল, একইভাবে আসন্ন নির্বাচনেও তারা স্বতন্ত্র ও স্বাধীনভাবে পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করবে।
    সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহানসহ অন্যরা।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের

    আপডেট সময় ০১:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে রিট করা এক নারী শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্ল্যাটফর্মটির সদস্যরা এ দাবি জানান। পাশাপাশি ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ১৩ দফা দাবি পেশ করে সংগঠনটি।

    সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাহমিনা আক্তার ও মোশাহিদা সুলতানা। লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, হাইকোর্টে একজন প্রার্থীর রিটের প্রেক্ষিতে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আলী হুসেন ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে সেই নারী প্রার্থীকে প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় হুমকিদাতাকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।

    লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ডাকসু নির্বাচনের বিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট শাস্তি কী হবে, তা কোথাও স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। এর ফলে ঢালাওভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। অথচ এসব বিষয়ে তথ্য জানানো হলেও নির্বাচন কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

    বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের দাবি অনুযায়ী, ডাকসু নির্বাচনে মোট ভোটারের অনুপাতে যথেষ্টসংখ্যক ভোটকেন্দ্র ও বুথ নিশ্চিত করতে হবে। ভোটদানের সময়সীমা বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বাড়াতে হবে এবং ভোট গণনার প্রক্রিয়াকে কার্যকর ও স্বচ্ছ করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচনী আচরণবিধি ও এর লঙ্ঘনসংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রহণ এবং তা যেন কোনো পক্ষের প্রতি বৈষম্যমূলক না হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।

    তাদের আরও দাবি, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব পালনের জন্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্য যেন না হয়। সাইবার বুলিং প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়া, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অরুচিকর পোস্ট ও মন্তব্যের মাধ্যমে আক্রমণ করা হয়—এমন গ্রুপ বা পেজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নিরাপদে ভোট দেওয়ার জন্য ক্যাম্পাসে আসতে পর্যাপ্ত বাস ও ট্রিপের ব্যবস্থা করতে হবে।

    সংবাদমাধ্যমকর্মী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সংবাদ সংগ্রাহকদের আচরণবিধি মেনে চলার বাধ্যবাধকতা আরোপ এবং যৌন হয়রানিসংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের মাধ্যমে সরাসরি নিষ্পত্তি করার বিষয়টিও তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে।

    বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক জানায়, যেভাবে তারা ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছিল, একইভাবে আসন্ন নির্বাচনেও তারা স্বতন্ত্র ও স্বাধীনভাবে পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করবে।
    সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহানসহ অন্যরা।