ঢাকা ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    ট্রাম্পের বিদায় ঘণ্টা বাজাতে ওয়াশিংটন ডিসিতে বিক্ষুদ্ধ জনতার ঢল

    ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
    • আপডেট সময় ১২:০৭:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
    • / ২৫৬ বার পড়া হয়েছে

    যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের প্রতিবাদে কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রাজধানীর রাস্তায় টহলরত বাহিনী প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে “ট্রাম্পকে এখনই বিদায় করতে হবে” শ্লোগান দেন। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।

    ডিসির পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের নেতৃত্বাধীন অন্যান্য শহরেও দমনপীড়নের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় শিকাগো থেকে অভিবাসীদের বহিষ্কারের হুমকি দেন। এ সময় তিনি ১৯৭৯ সালের ভিয়েতনাম যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র অ্যাপোক্যালিপস নাউ-এর একটি প্যারোডিও ব্যবহার করেন।

    টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানায়, ‘উই আর অল ডিসি’ শীর্ষক এই বিক্ষোভে অংশ নেন অবৈধ অভিবাসী, ফিলিস্তিনের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমর্থকসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী। তারা হাতে পোস্টার নিয়ে নানা স্লোগান দেন। পোস্টারগুলোতে লেখা ছিল— “ট্রাম্পকে এখনই বিদায় করতে হবে”, “ডিসিকে মুক্ত করো”, “স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলো।”

    অ্যালেক্স লফার নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, “আমি এসেছি ডিসির দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে। আমরা কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরোধিতা করছি। ফেডারেল পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ডকে রাস্তা থেকে সরাতে হবে।” কেসি নামে আরেক বিক্ষোভকারী জানান, “ডিসিতে যা করা হচ্ছে, তা একনায়কতান্ত্রিক সরকারগুলোর কৌশলের মতো। এখন যদি মানুষ চুপ থাকে, তবে একই পদ্ধতি অন্য জায়গায়ও প্রয়োগ করা হবে। তাই দেরি হওয়ার আগেই এটি থামাতে হবে।”

    ট্রাম্প অবশ্য দাবি করেছেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনতেই তিনি সেনা মোতায়েন করেছেন। তার ভাষায়, গত মাসে নেওয়া এই পদক্ষেপ “আইন, শৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা” পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়ক। তিনি রাজধানীর মেট্রোপলিটন পুলিশকে সরাসরি ফেডারেল নিয়ন্ত্রণে নেন এবং অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থাসহ (আইসিই) বিভিন্ন ফেডারেল বাহিনীকে শহরের রাস্তায় নামান। সমালোচকরা একে ফেডারেল ক্ষমতার অপব্যবহার বলে আখ্যা দিচ্ছেন।

    যদিও বিচার বিভাগের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ওয়াশিংটনে সহিংস অপরাধের হার গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এ অবস্থায় সামরিক বাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

    ন্যাশনাল গার্ড সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের গভর্নরের অধীনে কাজ করে। তবে ডিসি ন্যাশনাল গার্ড সরাসরি প্রেসিডেন্টের অধীনে থাকে। গত মঙ্গলবার ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তিনি শিকাগোতেও ন্যাশনাল গার্ড পাঠাবেন। দেশের তৃতীয় বৃহত্তম এ শহরে সামরিকায়নের প্রচেষ্টা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আইনি সংঘাত তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

    ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিটজকার সাংবাদিকদের জানান, ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যেই শিকাগোতে আইসিই এজেন্ট ও সামরিক যান পাঠিয়েছে এবং আরও পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।

    বর্তমানে ছয়টি রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন অঙ্গরাজ্য থেকে আসা সেনাসহ দুই হাজারের বেশি ন্যাশনাল গার্ড সদস্য ওয়াশিংটনে টহল দিচ্ছে। তাদের মিশন কবে শেষ হবে তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে মার্কিন সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ডের দায়িত্ব ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

    ট্যাগস :

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ট্রাম্পের বিদায় ঘণ্টা বাজাতে ওয়াশিংটন ডিসিতে বিক্ষুদ্ধ জনতার ঢল

    আপডেট সময় ১২:০৭:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের প্রতিবাদে কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রাজধানীর রাস্তায় টহলরত বাহিনী প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে “ট্রাম্পকে এখনই বিদায় করতে হবে” শ্লোগান দেন। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।

    ডিসির পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের নেতৃত্বাধীন অন্যান্য শহরেও দমনপীড়নের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় শিকাগো থেকে অভিবাসীদের বহিষ্কারের হুমকি দেন। এ সময় তিনি ১৯৭৯ সালের ভিয়েতনাম যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র অ্যাপোক্যালিপস নাউ-এর একটি প্যারোডিও ব্যবহার করেন।

    টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানায়, ‘উই আর অল ডিসি’ শীর্ষক এই বিক্ষোভে অংশ নেন অবৈধ অভিবাসী, ফিলিস্তিনের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমর্থকসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী। তারা হাতে পোস্টার নিয়ে নানা স্লোগান দেন। পোস্টারগুলোতে লেখা ছিল— “ট্রাম্পকে এখনই বিদায় করতে হবে”, “ডিসিকে মুক্ত করো”, “স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলো।”

    অ্যালেক্স লফার নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, “আমি এসেছি ডিসির দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে। আমরা কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরোধিতা করছি। ফেডারেল পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ডকে রাস্তা থেকে সরাতে হবে।” কেসি নামে আরেক বিক্ষোভকারী জানান, “ডিসিতে যা করা হচ্ছে, তা একনায়কতান্ত্রিক সরকারগুলোর কৌশলের মতো। এখন যদি মানুষ চুপ থাকে, তবে একই পদ্ধতি অন্য জায়গায়ও প্রয়োগ করা হবে। তাই দেরি হওয়ার আগেই এটি থামাতে হবে।”

    ট্রাম্প অবশ্য দাবি করেছেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনতেই তিনি সেনা মোতায়েন করেছেন। তার ভাষায়, গত মাসে নেওয়া এই পদক্ষেপ “আইন, শৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা” পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়ক। তিনি রাজধানীর মেট্রোপলিটন পুলিশকে সরাসরি ফেডারেল নিয়ন্ত্রণে নেন এবং অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থাসহ (আইসিই) বিভিন্ন ফেডারেল বাহিনীকে শহরের রাস্তায় নামান। সমালোচকরা একে ফেডারেল ক্ষমতার অপব্যবহার বলে আখ্যা দিচ্ছেন।

    যদিও বিচার বিভাগের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ওয়াশিংটনে সহিংস অপরাধের হার গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এ অবস্থায় সামরিক বাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

    ন্যাশনাল গার্ড সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের গভর্নরের অধীনে কাজ করে। তবে ডিসি ন্যাশনাল গার্ড সরাসরি প্রেসিডেন্টের অধীনে থাকে। গত মঙ্গলবার ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তিনি শিকাগোতেও ন্যাশনাল গার্ড পাঠাবেন। দেশের তৃতীয় বৃহত্তম এ শহরে সামরিকায়নের প্রচেষ্টা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আইনি সংঘাত তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

    ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিটজকার সাংবাদিকদের জানান, ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যেই শিকাগোতে আইসিই এজেন্ট ও সামরিক যান পাঠিয়েছে এবং আরও পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।

    বর্তমানে ছয়টি রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন অঙ্গরাজ্য থেকে আসা সেনাসহ দুই হাজারের বেশি ন্যাশনাল গার্ড সদস্য ওয়াশিংটনে টহল দিচ্ছে। তাদের মিশন কবে শেষ হবে তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে মার্কিন সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ডের দায়িত্ব ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।