১১:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

সাগরে মাছ ধরায় ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা, কাজ হারিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোলার ৬৫ হাজার জেলে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০২:৪৭:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • / ২৯ বার পড়া হয়েছে

সামুদ্রিক মাছ সংরক্ষণ এবং টিকিয়ে রাখতে ১৫ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এই নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত, মোট ৫৮ দিন।

এর ফলে ভোলার প্রায় ৬৫ হাজার সাগরগামী জেলে এখন কাজহীন হয়ে পড়েছেন। তীরে ফিরে এসেছেন সব জেলে। অনেকেই নৌকা ও জাল ঠিকঠাক করার কাজে ব্যস্ত, কেউ আবার পরিবারের খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

ভোলার বিভিন্ন নদীঘাটে দেখা গেছে, জেলেরা নিষেধাজ্ঞা মেনে মাছ ধরা বন্ধ করেছেন। তারা বলছেন, সরকারের নিয়ম মানছি, কিন্তু এখন কাজ না থাকায় সংসার চালাতে কষ্ট হবে।

দৌলতখানের জেলে রশিদ ও নুরনবী বলেন, “দু’দিন আগেই সাগর থেকে তীরে ফিরে এসেছি। এখন জাল-নৌকা গুছিয়ে রাখছি। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে আবার মাছ ধরতে যাব।”

আরেক জেলে হারুন মাঝি বলেন, “আমাদের তো কোনো আয় রইল না। এনজিওর কিস্তির টাকা দিতে চাপ আসবে। সরকারের কাছে দাবি, যেন এ সময়ে কিস্তি বন্ধ রাখা হয়।”

জেলেরা আরও বলেন, সরকার চাল দিলেও অনেক প্রকৃত জেলে তা পান না। যেন সঠিকভাবে চাল বিতরণ করা হয়। একই সঙ্গে চালের সঙ্গে কিছু নগদ অর্থও চাই, কারণ এই সময়ে আমরা একেবারেই বেকার।

তবে তারা খুশি যে এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে একই সময়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। আগে যখন আমরা মাছ ধরতাম না, তখন ভারতের জেলেরা সাগরে এসে মাছ ধরত, এবার সেটা হবে না।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, “নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। ঘাটে চেকপোস্ট বসানো হবে, বরফ কলগুলোকে নিষেধ করা হয়েছে বরফ না দিতে। জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চালও শিগগিরই আসবে, প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে দেওয়া হবে।”

ভোলা জেলায় মোট নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে ৬৫ হাজার জেলে সাগরে গিয়ে মাছ ধরেন। এখন তারা অপেক্ষায়, কবে নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আর আবার নৌকা ভাসাতে পারবেন সাগরের বুকে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

সাগরে মাছ ধরায় ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা, কাজ হারিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোলার ৬৫ হাজার জেলে

আপডেট সময় ০২:৪৭:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

সামুদ্রিক মাছ সংরক্ষণ এবং টিকিয়ে রাখতে ১৫ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এই নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত, মোট ৫৮ দিন।

এর ফলে ভোলার প্রায় ৬৫ হাজার সাগরগামী জেলে এখন কাজহীন হয়ে পড়েছেন। তীরে ফিরে এসেছেন সব জেলে। অনেকেই নৌকা ও জাল ঠিকঠাক করার কাজে ব্যস্ত, কেউ আবার পরিবারের খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

ভোলার বিভিন্ন নদীঘাটে দেখা গেছে, জেলেরা নিষেধাজ্ঞা মেনে মাছ ধরা বন্ধ করেছেন। তারা বলছেন, সরকারের নিয়ম মানছি, কিন্তু এখন কাজ না থাকায় সংসার চালাতে কষ্ট হবে।

দৌলতখানের জেলে রশিদ ও নুরনবী বলেন, “দু’দিন আগেই সাগর থেকে তীরে ফিরে এসেছি। এখন জাল-নৌকা গুছিয়ে রাখছি। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে আবার মাছ ধরতে যাব।”

আরেক জেলে হারুন মাঝি বলেন, “আমাদের তো কোনো আয় রইল না। এনজিওর কিস্তির টাকা দিতে চাপ আসবে। সরকারের কাছে দাবি, যেন এ সময়ে কিস্তি বন্ধ রাখা হয়।”

জেলেরা আরও বলেন, সরকার চাল দিলেও অনেক প্রকৃত জেলে তা পান না। যেন সঠিকভাবে চাল বিতরণ করা হয়। একই সঙ্গে চালের সঙ্গে কিছু নগদ অর্থও চাই, কারণ এই সময়ে আমরা একেবারেই বেকার।

তবে তারা খুশি যে এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে একই সময়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। আগে যখন আমরা মাছ ধরতাম না, তখন ভারতের জেলেরা সাগরে এসে মাছ ধরত, এবার সেটা হবে না।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, “নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। ঘাটে চেকপোস্ট বসানো হবে, বরফ কলগুলোকে নিষেধ করা হয়েছে বরফ না দিতে। জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চালও শিগগিরই আসবে, প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে দেওয়া হবে।”

ভোলা জেলায় মোট নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে ৬৫ হাজার জেলে সাগরে গিয়ে মাছ ধরেন। এখন তারা অপেক্ষায়, কবে নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আর আবার নৌকা ভাসাতে পারবেন সাগরের বুকে।