রাজধানীর রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের রায় ঘোষণার জন্য হাইকোর্ট আগামী ৮ মে দিন ধার্য করেছেন।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই দিন নির্ধারণ করেন।

এদিন আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, সরওয়ার আহমেদ এবং আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী।

ওই হামলায় ঘটনাস্থলেই ৯ জন নিহত হন এবং পরে হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ঘটনার দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।

২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) দুই মামলায় ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

২০১৪ সালের ২৩ জুন বিচারিক আদালত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন, যেখানে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মুফতি আবদুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মাওলানা আবদুল হাই এবং মাওলানা শফিকুর রহমান। তবে মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে।

হত্যা মামলার রায়ের পর মামলাটি ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল হিসেবে হাইকোর্টে আসে। বিস্ফোরক মামলাটি বর্তমানে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে।

পেপারবুক প্রস্তুতির পর মামলাটি হাইকোর্টের কার্যতালিকায় উঠে। এই রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলমান এই মামলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সমাপ্ত হতে যাচ্ছে, যা দেশের নিরাপত্তা ও জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচেষ্টার প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।