০৯:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫

অবশেষে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ পাওয়ার ইচ্ছা পূরণ হলো ট্রাম্পের

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ১২:০২:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
  • / ১৭ বার পড়া হয়েছে

অবশেষে বহুল আলোচিত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে খনিজ সম্পদ চুক্তি সই হয়েছে। এর ফলে ইউক্রেনের মূল্যবান খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার পাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে অর্থায়ন করবে ওয়াশিং। বুধবার (৩০ এপ্রিল) ওয়াশিংটনে দুই দেশ এই সমঝোতায় পৌঁছায়।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউজে বৈঠকে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে প্রকাশ্য বিবাদের পর দুই দেশের সম্পর্কে চরম অবনতি ঘটে। এই চুক্তি সেই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির পক্ষে। যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল গঠনের মাধ্যমে রাশিয়াকে এই স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই অংশীদারত্বের ধারণাটি করেন। যা দুই দেশের জনগণের শান্তি ও অগ্রগতির প্রতিশ্রুতি বহন করে।

ইউক্রেনের অর্থনৈতিক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা বা সরাসরি এই তহবিলে অর্থ দেবে। আর ইউক্রেন খনিজ সম্পদের আয় থেকে ৫০ শতাংশ তহবিলে প্রদান করবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ১০ বছর এই তহবিলের সব অর্থই ইউক্রেনে বিনিয়োগ হবে; এরপর লাভ অংশীদারদের মধ্যে ভাগ হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন তহবিল পরিচালনায় সমানভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং এই চুক্তির আওতায় শুধু ভবিষ্যতের সামরিক সহায়তা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া স্ভিরিদেঙ্কো বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে একটি কৌশলগত অংশীদারও লাভ করেছি। আমরা শুধু বিনিয়োগই করিনি।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিহাল চুক্তি সইয়ের আগে জানান, এটি ইউক্রেনের ভূগর্ভস্থ সম্পদ, অবকাঠামো ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রক্রিয়ার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।

তবে এই চুক্তিতে ইউক্রেনের প্রত্যাশিত নিরাপত্তা নিশ্চয়তা রয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, ইউক্রেনে মার্কিন বাণিজ্যিক স্বার্থ বৃদ্ধির মাধ্যমে রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিরোধ সহজ হবে।

ইউক্রেন দাবি করছে, তাদের ভূগর্ভে বিশ্বের প্রায় পাঁচ শতাংশ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ মজুত রয়েছে, যা ইলেকট্রনিক পণ্য, বৈদ্যুতিক যানবাহন এবং সামরিক সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্ধারিত ৩৪টি গুরুত্বপূর্ণ খনিজের মধ্যে ২২টির মজুত ধারণ করে। চুক্তিটি কার্যকর হতে ইউক্রেনের পার্লামেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন।

সূত্র: আল-জাজিরা

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

অবশেষে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ পাওয়ার ইচ্ছা পূরণ হলো ট্রাম্পের

আপডেট সময় ১২:০২:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

অবশেষে বহুল আলোচিত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে খনিজ সম্পদ চুক্তি সই হয়েছে। এর ফলে ইউক্রেনের মূল্যবান খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার পাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে অর্থায়ন করবে ওয়াশিং। বুধবার (৩০ এপ্রিল) ওয়াশিংটনে দুই দেশ এই সমঝোতায় পৌঁছায়।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউজে বৈঠকে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে প্রকাশ্য বিবাদের পর দুই দেশের সম্পর্কে চরম অবনতি ঘটে। এই চুক্তি সেই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির পক্ষে। যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল গঠনের মাধ্যমে রাশিয়াকে এই স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই অংশীদারত্বের ধারণাটি করেন। যা দুই দেশের জনগণের শান্তি ও অগ্রগতির প্রতিশ্রুতি বহন করে।

ইউক্রেনের অর্থনৈতিক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা বা সরাসরি এই তহবিলে অর্থ দেবে। আর ইউক্রেন খনিজ সম্পদের আয় থেকে ৫০ শতাংশ তহবিলে প্রদান করবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ১০ বছর এই তহবিলের সব অর্থই ইউক্রেনে বিনিয়োগ হবে; এরপর লাভ অংশীদারদের মধ্যে ভাগ হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন তহবিল পরিচালনায় সমানভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং এই চুক্তির আওতায় শুধু ভবিষ্যতের সামরিক সহায়তা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া স্ভিরিদেঙ্কো বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে একটি কৌশলগত অংশীদারও লাভ করেছি। আমরা শুধু বিনিয়োগই করিনি।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিহাল চুক্তি সইয়ের আগে জানান, এটি ইউক্রেনের ভূগর্ভস্থ সম্পদ, অবকাঠামো ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রক্রিয়ার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।

তবে এই চুক্তিতে ইউক্রেনের প্রত্যাশিত নিরাপত্তা নিশ্চয়তা রয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, ইউক্রেনে মার্কিন বাণিজ্যিক স্বার্থ বৃদ্ধির মাধ্যমে রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিরোধ সহজ হবে।

ইউক্রেন দাবি করছে, তাদের ভূগর্ভে বিশ্বের প্রায় পাঁচ শতাংশ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ মজুত রয়েছে, যা ইলেকট্রনিক পণ্য, বৈদ্যুতিক যানবাহন এবং সামরিক সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্ধারিত ৩৪টি গুরুত্বপূর্ণ খনিজের মধ্যে ২২টির মজুত ধারণ করে। চুক্তিটি কার্যকর হতে ইউক্রেনের পার্লামেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন।

সূত্র: আল-জাজিরা