জাপানের সামরিক অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব: বাংলাদেশের সামনে নতুন সম্ভাবনা

- আপডেট সময় ০৪:২৪:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
- / ৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সম্পর্ক নতুন মোড় নিচ্ছে। জাপান বাংলাদেশের কাছে সামরিক অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে, যা দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। আসছে ১৫ মে টোকিওতে ষষ্ঠ ফরেন অফিস কনসালটেশন বৈঠকে এই প্রস্তাব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে যাচ্ছে।
জাপান বাংলাদেশের কাছে সামরিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে, যা আগামী ১৫ মে টোকিওতে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ-জাপান ষষ্ঠ ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠকের অন্যতম আলোচ্য বিষয় হবে। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন, আর জাপানের পক্ষে থাকবেন সিনিয়র ডেপুটি ফরেন মিনিস্টার আকাহরি তাকিশি।
বৈঠকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, রোহিঙ্গা ও মিয়ানমার সংকট, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, এবং জনকেন্দ্রিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে। তবে, জাপানের অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব এই বৈঠকের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এই বৈঠকের প্রেক্ষাপটে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন জাপান সফর। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিনি ২৯-৩১ মে টোকিও ও ওসাকায় সফর করবেন। এই সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাপান দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও জনকেন্দ্রিক সম্পর্কের ওপর জোর দিয়ে এসেছে। তবে, এবার তারা এশিয়ায় সামরিক অস্ত্র রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নতুন কৌশল নিয়েছে।
বাংলাদেশের ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ সামরিক আধুনিকীকরণ পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাপান অস্ত্র ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রস্তাব দিয়েছে।
২০২৩ সালে সাবেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা দুই দেশের সম্পর্ককে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করেছিল। এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
গত বছর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের চীন সফরে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বেড়েছে। চীন বাংলাদেশের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ, যার মধ্যে রয়েছে সাবমেরিন, ফ্রিগেট, এবং মিসাইল সিস্টেম।
বাংলাদেশ এখনো জাপানের অস্ত্র কেনার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, অস্ত্র ক্রয় একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া এবং উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক আলোচনার ওপর নির্ভরশীল।
বাংলাদেশের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে চীন ও রাশিয়ার পাশাপাশি ভারত, তুরস্ক, এবং ইতালিও প্রস্তাব দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশের সঙ্গে জিএসওএমআইএ চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আলোচনা চালাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে জাপানের প্রস্তাব বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করলেও, ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।