ভার্চুয়াল বক্তব্যে তারেক রহমান
মানবিক করিডরের সিদ্ধান্ত নিবেন জনপ্রতিনিধিরা, দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান

- আপডেট সময় ০৬:৪৩:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
- / ৯ বার পড়া হয়েছে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।
তিনি বলেন, বিদেশি স্বার্থের আগে বাংলাদেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। বৃহস্পতিবার (১ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই সমাবেশে তারেক রহমান শ্রমজীবী মানুষের অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, “শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষই বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ। তাদের বঞ্চিত রেখে মানবিক বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয়।” তিনি শ্রমিকদের অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তারেক রহমান আরও বলেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার অবৈধ নয়, তবে তা কখনোই নির্বাচিত সরকারের বিকল্প হতে পারে না। তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের একটি অংশ সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। তিনি জরুরি সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানান।
মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা চলছে। রাখাইন থেকে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর ২০১৭ সাল থেকে দেশটি ইতিমধ্যে ১২ লাখের বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তারেক রহমান জোর দিয়ে বলেন, “মানবিক করিডরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা বিবেচনা করতে হবে। এই সিদ্ধান্ত জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে থাকা উচিত।”
তিনি অপপ্রচার ও উসকানি এড়িয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তারেক রহমান বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনির্দিষ্টকালের সমর্থন যৌক্তিক নয়। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের জন্য নির্বাচনের বিকল্প নেই।”
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, এবং গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবি জানান। তারা অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছরে শ্রমিকদের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়েছে।
তারেক রহমানের বক্তব্যে আরও উঠে আসে দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত না করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে শ্রমজীবী মানুষ চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছে।” তিনি সরকারকে শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
বিএনপি নেতারা জানান, দলটি গণতান্ত্রিক সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রাখবে। তারেক রহমানের এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মানবিক করিডর ও নির্বাচন নিয়ে তার এই অবস্থান বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।