সরকারি কর্মীদের জন্য দুঃসংবাদ: ৭ দিনে নোটিসে যাবে চাকরি

- আপডেট সময় ১২:৪৫:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
- / ২৫৫ বার পড়া হয়েছে
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য একটি নতুন খবর। সরকার সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-তে কিছু পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। এই পরিবর্তনের ফলে, সরকার চাইলে কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে মাত্র সাত দিনের নোটিশে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে।
বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে বলা যাক। মনে করুন, কোনো সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর কোনো অভিযোগ উঠেছে। যদি এই নতুন নিয়মটি চালু হয়, তাহলে সরকার কোনো দীর্ঘ তদন্ত ছাড়াই, মাত্র সাত দিনের সময় দিয়ে তাকে চাকরি থেকে বিদায় জানাতে পারবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অলরেডি এই সংক্রান্ত একটি নতুন আইনের খসড়া তৈরি করেছে। খুব শীঘ্রই এটি উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনার জন্য উপস্থাপন করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, সরকার এটিকে একটি জরুরি সরকারি আদেশ বা অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করবে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কারণ হলো, প্রশাসনের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং যারা দুর্নীতি বা গুরুতর অনিয়মের সাথে জড়িত, তাদের দ্রুত শাস্তি দেওয়া। তবে, এই পরিবর্তন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ বলছেন, এটি সময়োপযোগী একটি পদক্ষেপ। আবার কারো কারো মতে, এটি সরকারি कर्मचारियोंদের উপর চাপ সৃষ্টি করার একটি হাতিয়ার হতে পারে।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই নতুন নিয়মটি ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জারি করা একটি বিশেষ সরকারি অধ্যাদেশ থেকে অনুপ্রাণিত। সেই সময়েও খুব অল্প সময়ের নোটিশে সরকারি কর্মচারীদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিধান ছিল।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, সম্প্রতি কিছু সরকারি দপ্তরে অসন্তোষ, নিয়ম না মানা এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর প্রবণতা বেড়েছে। এমনকি কিছু কর্মচারী কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা এবং সামাজিক মাধ্যমে সরকারবিরোধী মন্তব্য করার মতো কাজও করছেন।
বিদ্যমান আইনে এসব কর্মীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হওয়ায়, সরকার এই আইনি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।
নতুন খসড়া আইনে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী যদি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন, কাজে অনুপস্থিত থাকেন, কর্মবিরতি করেন অথবা অন্য কাউকে কাজে বাধা দেন, তাহলে তাকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হবে।
সরকার অভিযুক্ত কর্মচারীকে তিনটি শাস্তি দিতে পারবে: চাকরি থেকে বরখাস্ত করা, চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া এবং পদ বা বেতন কমানো। যদিও এই শাস্তিগুলো বর্তমান আইনেও রয়েছে।
তবে নতুনত্ব হলো, এখন অভিযুক্তের বক্তব্য শুনে, সরকার চাইলে কোনো তদন্ত ছাড়াই তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে। এছাড়াও, সরকারি কর্মচারীদের প্রকাশ্যে বা গোপনে সভা-সমাবেশে অংশ নেওয়ার উপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আসছে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
অনেক সরকারি কর্মকর্তার মতে, বর্তমান ব্যবস্থায় কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে দীর্ঘ সময় লাগে, যা দুই থেকে তিন বছর পর্যন্ত গড়াতে পারে। এই সময়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি নানাভাবে প্রভাব খাটিয়ে পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ পান। তাই, দ্রুত এবং কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যই এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে।