ঢাকা ১০:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

বিয়ে না করলেই বিপদ!

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০৩:৫২:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
  • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

বিয়ে, শুধু একটি সামাজিক বা ধর্মীয় প্রথা নয়, এটি আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপরও গভীর প্রভাব ফেলে। অনেকের ধারণা, অবিবাহিত পুরুষরা বিবাহিতদের তুলনায় অনেক বেশি স্বাধীন ও ঝামেলামুক্ত জীবন যাপন করেন। তবে, সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে ভিন্ন কথা।

এই আপাত শান্তির আড়ালেই লুকিয়ে থাকতে পারে বেশ কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি।

ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব কার্ডিওলজি এবং জার্মানির ইউনিভার্সিটি হসপিটাল ওয়ারজবার্গের এক যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

এই গবেষণা অনুযায়ী, অবিবাহিত পুরুষদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বিবাহিত পুরুষদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। শুধু তাই নয়, গবেষণায় আরও দেখা গেছে, অবিবাহিত পুরুষদের অল্প বয়সে মারা যাওয়ার ঝুঁকিও বিবাহিতদের চেয়ে অনেক বেশি।

এছাড়াও, একাধিক স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণায় অবিবাহিত ব্যক্তিদের মধ্যে কিছু বিশেষ স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি দেখা গেছে। আসুন, সেগুলো এক নজরে দেখে নেওয়া যাক:

প্রথমত, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা। অবিবাহিত ব্যক্তিদের মধ্যে একাকীত্ব, হতাশা এবং উদ্বেগের প্রবণতা বেশি থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে একা থাকার কারণে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বাড়ে, যা ডিপ্রেশনকে আরও গভীর করতে পারে।

দ্বিতীয়ত, হৃদরোগের ঝুঁকি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বিবাহিত পুরুষদের তুলনায় অবিবাহিত পুরুষদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ বেশি।

তৃতীয়ত, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস। গবেষণা অনুযায়ী, একাকী জীবনযাপন আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে দিতে পারে। এর ফলে সংক্রমণ বা দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

চতুর্থত, স্বাস্থ্য পরীক্ষার অভাব। বিবাহিত জীবনে সঙ্গীর তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বেশি দেখা যায়। বিপরীতে, অবিবাহিতদের মধ্যে নিয়মিত হেলথ চেকআপ বা চিকিৎসা নেওয়ার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।

পঞ্চমত, অকালমৃত্যুর ঝুঁকি। জার্নাল অফ এপিডেমিওলজি অ্যান্ড কমিউনিটি হেলথ-এর একটি গবেষণা অনুযায়ী, যারা সারা জীবন অবিবাহিত থাকেন, তাদের মধ্যে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি বিবাহিত পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি।

তবে, এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে। গবেষকরা বলছেন, এই স্বাস্থ্যঝুঁকিগুলো সব অবিবাহিত পুরুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যারা সামাজিকভাবে সক্রিয়, বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখেন এবং নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নেন, তারা অনেক ক্ষেত্রেই বিবাহিতদের মতোই সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন।

সুতরাং, বিয়ে না করলে শরীরে বড় ধরনের ক্ষতি হবেই, এমনটা বলা না গেলেও, একাকীত্ব এবং অসামাজিক জীবনযাপনের সঙ্গে যুক্ত কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে।

তাই বিশেষজ্ঞরা, একটি সামাজিক বন্ধন এবং সুস্থ জীবনের জন্য বিবাহিত জীবনকে উৎসাহিত করছেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

বিয়ে না করলেই বিপদ!

আপডেট সময় ০৩:৫২:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

বিয়ে, শুধু একটি সামাজিক বা ধর্মীয় প্রথা নয়, এটি আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপরও গভীর প্রভাব ফেলে। অনেকের ধারণা, অবিবাহিত পুরুষরা বিবাহিতদের তুলনায় অনেক বেশি স্বাধীন ও ঝামেলামুক্ত জীবন যাপন করেন। তবে, সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে ভিন্ন কথা।

এই আপাত শান্তির আড়ালেই লুকিয়ে থাকতে পারে বেশ কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি।

ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব কার্ডিওলজি এবং জার্মানির ইউনিভার্সিটি হসপিটাল ওয়ারজবার্গের এক যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

এই গবেষণা অনুযায়ী, অবিবাহিত পুরুষদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বিবাহিত পুরুষদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। শুধু তাই নয়, গবেষণায় আরও দেখা গেছে, অবিবাহিত পুরুষদের অল্প বয়সে মারা যাওয়ার ঝুঁকিও বিবাহিতদের চেয়ে অনেক বেশি।

এছাড়াও, একাধিক স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণায় অবিবাহিত ব্যক্তিদের মধ্যে কিছু বিশেষ স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি দেখা গেছে। আসুন, সেগুলো এক নজরে দেখে নেওয়া যাক:

প্রথমত, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা। অবিবাহিত ব্যক্তিদের মধ্যে একাকীত্ব, হতাশা এবং উদ্বেগের প্রবণতা বেশি থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে একা থাকার কারণে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বাড়ে, যা ডিপ্রেশনকে আরও গভীর করতে পারে।

দ্বিতীয়ত, হৃদরোগের ঝুঁকি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বিবাহিত পুরুষদের তুলনায় অবিবাহিত পুরুষদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ বেশি।

তৃতীয়ত, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস। গবেষণা অনুযায়ী, একাকী জীবনযাপন আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে দিতে পারে। এর ফলে সংক্রমণ বা দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

চতুর্থত, স্বাস্থ্য পরীক্ষার অভাব। বিবাহিত জীবনে সঙ্গীর তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বেশি দেখা যায়। বিপরীতে, অবিবাহিতদের মধ্যে নিয়মিত হেলথ চেকআপ বা চিকিৎসা নেওয়ার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।

পঞ্চমত, অকালমৃত্যুর ঝুঁকি। জার্নাল অফ এপিডেমিওলজি অ্যান্ড কমিউনিটি হেলথ-এর একটি গবেষণা অনুযায়ী, যারা সারা জীবন অবিবাহিত থাকেন, তাদের মধ্যে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি বিবাহিত পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি।

তবে, এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে। গবেষকরা বলছেন, এই স্বাস্থ্যঝুঁকিগুলো সব অবিবাহিত পুরুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যারা সামাজিকভাবে সক্রিয়, বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখেন এবং নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নেন, তারা অনেক ক্ষেত্রেই বিবাহিতদের মতোই সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন।

সুতরাং, বিয়ে না করলে শরীরে বড় ধরনের ক্ষতি হবেই, এমনটা বলা না গেলেও, একাকীত্ব এবং অসামাজিক জীবনযাপনের সঙ্গে যুক্ত কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে।

তাই বিশেষজ্ঞরা, একটি সামাজিক বন্ধন এবং সুস্থ জীবনের জন্য বিবাহিত জীবনকে উৎসাহিত করছেন।