আব্দুল আলীমের বাসা থেকে স্বাধীনতা ও একুশ পদক চুরি

- আপডেট সময় ০৪:০৭:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
- / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা লোকসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী আব্দুল আলীমের স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদকসহ গুরুত্বপূর্ণ সাতটি পুরস্কার ও স্মারক চুরি হয়ে গেছে। গত ৮ মে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার একটি বাসা থেকে এই চুরির ঘটনা ঘটে। দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও এসব মূল্যবান পদক উদ্ধার হয়নি।
আব্দুল আলীমের মেয়ে নুরজাহান আলীম জানান, চুরি যাওয়া জিনিসগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৭৭ সালের একুশে পদক, ১৯৯৭ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার, ১৯৬০ সালে পাকিস্তানি প্রেসিডেন্টের দেওয়া তমঘা-ই-হুসন এবং লাহোরে নিখিল পাকিস্তান সংগীত সম্মেলনে প্রাপ্ত দুটি সম্মাননা স্মারক। সঙ্গে চুরি হয়েছে ৫০ হাজার টাকা, একটি স্বর্ণের কানের দুল ও একটি গলার হার।
খিলগাঁও সি ব্লকের পুনর্বাসন আবাসিক এলাকার তিনতলা বাড়ির নিচতলায় থাকেন আব্দুল আলীমের মেজো মেয়ে আসিয়া আলীম। ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে তিনি হাঁটতে বের হন, আর ফিরে এসে দেখতে পান দরজার তালা ভাঙা, ঘরে তছনছ অবস্থা।
বাড়ির ছয় ইউনিটের মধ্যে পাঁচটিতে শিল্পীর সন্তানরা থাকেন এবং একটি ইউনিট ভাড়া দেওয়া হয়েছে। নিচতলায় অপর ইউনিটে থাকেন আব্দুল আলীমের মেজো ছেলে সংগীতশিল্পী আজগর আলীম। দোতলায় থাকেন বড় ছেলে জহির আলীম।
জহির আলীম জানান, বাসায় গ্যাস-পানির বিল হিসেবে রাখা ১০ হাজার টাকা চোররা নেয়নি। তাদের টার্গেট ছিল মূল্যবান পদক ও স্বর্ণালঙ্কার। বাবার পদক উদ্ধারে তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন। উপদেষ্টা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
চুরির পেছনে পরিবারের ভেতরের কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আসিয়া আলীম। তার মতে, ভেতরের কেউ তথ্য না দিলে বাইরের লোক এসবের অবস্থান জানার কথা না।
তদন্তে থাকা খিলগাঁও থানার এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, বাড়ির আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পাঁচজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে তাদের মুখ স্পষ্ট নয়। ওসি দাউদ হোসেন জানান, পদক চুরির ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল কাজ করছে এবং চোর শনাক্তে নিবিড়ভাবে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।
আব্দুল আলীমের পরিবার জানিয়েছে, স্বর্ণালঙ্কার কিংবা টাকাপয়সা হারানোতে তাদের কষ্ট নেই। কিন্তু জাতির শ্রদ্ধেয় এই সংগীতশিল্পীর রাষ্ট্রীয় সম্মাননাগুলো না পাওয়া গেলে সেটি হবে অপূরণীয় ক্ষতি।