দর্শনায় গ্রেফতারের পর কারাগারে আসামির মৃত্যু, পরিবারের দাবি পুলিশের নির্যাতন

- আপডেট সময় ০৬:০৫:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
- / ৩১১ বার পড়া হয়েছে
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতারের একদিন পর জেলা কারাগারে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। কারাগারে রবিবার (১ জুন) রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে রাতেই তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সোমবার (২ জুন) ভোরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মৃত ব্যক্তির নাম মহিরুল ইসলাম (৪৫)। তিনি দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুরে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছিলেন তিনি। রবিবার সকালে নিজ গ্রামে ফেরার পর দর্শনা থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
পরিবারের দাবি, গ্রেফতারের সময় মহিরুল সুস্থ ছিলেন। নির্যাতনের ফলে মৃত্যু হয়েছে তার। তারা সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেছেন।
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ তিতুমীর জানান, থানার এসআই রেজাউল হোসেনের নেতৃত্বে মহিরুলকে আটক করা হয় ও বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আদালতের নির্দেশে তাকে কোর্ট হাজতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার মো. ফখর উদ্দিন জানান, মহিরুলকে বিকেলে কারাগারে আনা হয়। অসুস্থ বিধায় তাকে কারাগারের হাসপাতালে রাখা হয়। বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত একটার পরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, রাতে তাকে কারা কর্তৃপক্ষ অজ্ঞান অবস্থায় নিয়ে আসেন। আমরা সব ধরনের চিকিৎসা দিয়েছি। জরুরি বিভাগের যিনি চিকিৎসক ছিলেন, তিনি ব্লাড প্রেসারও স্বাভাবিক পেয়েছিলেন। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, ব্রেন স্ট্রোকে তার মৃত্যু হতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এদিকে মহিরুলের পরিবারের অভিযোগ, গ্রেফতারের সময় তিনি পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন। পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের ভাতিজা সাইদুর রহমান বলেন, এটা কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। সুস্থ মানুষ কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মারা যায় কীভাবে? আমরা সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
এ ঘটনায় কুড়ুলগাছি গ্রামের স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু, যা আড়াল করার চেষ্টা চলছে। নিহতের পরিবার দ্রুত বিচার ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।
অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা শোনা গেলেও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা পাওয়া যায়নি।