কীভাবে লাদেনকে শিকার করল মার্কিন কমান্ডোরা !

- আপডেট সময় ০৬:২৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
- / ২৫৫ বার পড়া হয়েছে
“বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী, আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন। যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কারের এই মোস্ট ওয়ান্টেড ব্যক্তিকে কীভাবে খুঁজে পাওয়া গেল? কীভাবে শেষ হলো তাঁর রহস্যময় জীবন?
নেটফ্লিক্সের নতুন তথ্যচিত্র ‘আমেরিকান ম্যানহান্ট: ওসামা বিন লাদেন’ এনেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য!
“২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। বিশ্ববাসী চোখের সামনে দেখলো কিভাবে আল-কায়েদার হামলায় ধ্বংস হলো নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার। প্রায় ৩ হাজার নিরীহ মানুষের মৃত্যুর পর ওসামা বিন লাদেন হয়ে উঠলেন আমেরিকার প্রধান শত্রু।
কিন্তু এই বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-কে লেগে গেল দীর্ঘ ১০ বছর তাকে খুঁজে বের করতে!”
“প্রথম প্রচেষ্টা ছিল আফগানিস্তানের তোরা বোরা পাহাড়ে। ২০০১ সালের ডিসেম্বরে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেও ব্যর্থ হয় মার্কিন বাহিনী। গুয়ানতানামো বে ক্যাম্পে আল-কায়েদার সদস্যদের উপর চালানো হয় নির্মম নির্যাতন, কিন্তু ওসামার গোপন ঠিকানা বের করা যায়নি।”
“২০১০ সালে আসে টার্নিং পয়েন্ট)! সিআইএ শনাক্ত করে এক গোপন কুরিয়ার—আবু আহমেদ আল-কুয়েতিকে। ফোন ট্যাপ করে তারা আবিষ্কার করে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে এক রহস্যময় বাড়ি।
১৮ ফুট উঁচু প্রাচীর, নো বার্বার ওয়্যার, আর বাইরে কখনো না আসা এক রহস্যময় ব্যক্তি—সবই ইঙ্গিত দেয় এখানে লুকিয়ে আছেন কোনো ‘বড় কোন অপরাধী’!”
পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী আফগানিস্তানের জালালাবাদ ছিল এই অভিযান পরিচালনার প্রধান ঘাঁটি। অ্যাবোটাবাদে পাকিস্তানের মিলিটারি একাডেমিসহ অন্য সামরিক স্থাপনা থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অভিযানটি ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর।
তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, অভিযানের ব্যাপারে পাকিস্তানকে আগাম জানবেন না। কারণ, আল-কায়েদার কাছে অভিযানের তথ্য পাচার হয়ে যেতে পারে।
পাকিস্তানের রাডার–ব্যবস্থা কোথায় আছে, রাডারগুলো কী রকম, সেগুলো কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায়, তা বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্র। অভিযানের জন্য বিশেষ ধরনের নতুন হেলিকপ্টার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়, যা সহজে রাডারে ধরা পড়ে না।
অভিযানের ২৪ ঘণ্টা আগে ছিল হোয়াইট হাউস করেসপনডেন্স ডিনার। সাংবাদিকদের জন্য আয়োজিত এই বার্ষিক অনুষ্ঠানে ওবামা এমনভাবে হাস্যরস করেন যে কেউ বুঝতেই পারেনি কী ঘটতে চলছে।
২০১১ সালের ১ মে রাতে হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুমে ওবামাসহ তাঁর প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা জড়ো হন। তাঁরা সবাই ছিলেন উদ্বিগ্ন।
দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে (২ মে প্রথম প্রহর) হেলিকপ্টারে করে অভিযানিক দল পৌঁছে যায় অ্যাবোটাবাদের বাড়িটিতে। তিনতলা বাড়িটিতে প্রবেশ করে প্রথমে আবু আহমেদকে গুলি করে হত্যা করে নেভি সিল টিম-৬। এরপর দ্বিতীয় তলায় অভিযান শেষে টিম-৬ পৌঁছে যায় তৃতীয় তলা। সেখানেই ওসামা বিন লাদেনকে পাওয়া যায়। তিনি আত্মসমর্পণ না করায় তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
৪০ মিনিটের গুলিবিনিময়ে নিহত হন ওসামা নিজেই—চোখে গুলি লাগায় তাঁর মুখ চেনা যায়নি, ডিএনএ টেস্টেই নিশ্চিত হয় পরিচয়।”
“ওসামার মরদেহ বিমান থেকে নিক্ষেপ করা হয় আরব সাগরে। কারণ? যাতে তাঁর কবর জিহাদিদের জন্য তীর্থস্থান না হয়ে ওঠে।
নেটফ্লিক্সের ডকুমেন্টারিতে প্রথমবারের মতো সিআইএ এজেন্টদের জবানিতে উঠে এসেছে অজানা সব তথ্য—কিভাবে একটি ভুল ফোনকল বিশ্বের সবচেয়ে কাঙ্খিত মানুষটিকে এনে দিল ধ্বংসের দোরগোড়ায়!”