শেখ হাসিনাকে ব্যালট বাক্সে অগ্রিম ৫০% ভোট ভরার পরামর্শ দেন জাবেদ পাটোয়ারী-আল মামুন

- আপডেট সময় ০৪:৪৩:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৫৬ বার পড়া হয়েছে
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ৫০ শতাংশ ভোট ভরে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-০১ এ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দেওয়া জবানবন্দিতে এ তথ্য জানিয়েছেন আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন মামুন। তিনি তখন জুলাই আন্দোলনের সময় পুলিশের প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন।
জবানবন্দিতে মামুন বলেন, “২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগের রাতে শেখ হাসিনাকে ব্যালট বাক্সে অগ্রিম ৫০ শতাংশ ভোট ভরে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী।” একই সঙ্গে তিনি পুলিশের ভেতরে গোপালগঞ্জ সিন্ডিকেট প্রসঙ্গও তুলে ধরেন।
তিনি আরও জানান, আন্দোলন দমন করতে মারণাস্ত্র ব্যবহার, হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো ও ব্লক রেইডের মতো সিদ্ধান্তগুলো রাজনৈতিকভাবে নেওয়া হতো। শেখ হাসিনার কাছ থেকেই লেথাল উইপেন ব্যবহারের নির্দেশনা এসেছিল। সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিব এবং গোয়েন্দা পুলিশের হারুন মারণাস্ত্র ব্যবহারে অতিউৎসাহী ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন মামুন।
জবানবন্দিতে তিনি র্যাবের গোপন বন্দিশালার কথাও প্রকাশ করেন। তাঁর দাবি অনুযায়ী, র্যাব-১ এ টিআইএফ নামে একটি গোপন বন্দিশালা ছিল। একইভাবে অন্যান্য র্যাব ইউনিটেও ছিল এ ধরনের গোপন কেন্দ্র। রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী কিংবা সরকারের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের এসব স্থানে এনে আটক রাখা হতো।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আসত এসব নির্দেশনা, কখনো সরাসরি দিতেন তারেক সিদ্দিকী। আর আয়নাঘরে আটক ও ক্রসফায়ারে হত্যার মতো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন র্যাবের এডিসি অপারেশন এবং গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক।
এ বছরের ২৪ মার্চ চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, স্বেচ্ছায় আসামি থেকে রাজসাক্ষী হয়ে সত্য উন্মোচন করতে চান।
এর আগে জুলাই আন্দোলন সংক্রান্ত মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ৩৫ জন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আহত, শহীদ পরিবারের সদস্য ও চিকিৎসকরাও রয়েছেন। প্রসিকিউশন আশা করছে, চলতি মাসেই এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হবে।