কবে ফিরবেন তারেক রহমান,এই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে

- আপডেট সময় ০১:৪২:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
- / ২৭২ বার পড়া হয়েছে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরছেন। আর তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে নতুন আলোচনা, কল্পনা ও জল্পনা।
দলে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঙ্গলবার (১০ জুন) গুলশানে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। যদিও তিনি নির্দিষ্ট কোনো তারিখ জানাননি, বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, তারেক রহমান ৫ আগস্টের আগেই দেশে ফিরবেন। তবে সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
তবে দেশের রাজনীতিতে এই খবরটির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছিল। গত ৪ জুন কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) মো. তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, যিনি তারিক চয়ন নামেই পরিচিত, তার ফেসবুক পেজে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেই ভিডিওতে সালাহউদ্দিন আহমদ ইঙ্গিত দেন যে, তারেক রহমান খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন, এমনকি তিন মাসেরও আগে।
অনেকেই হয়তো মনে করেছিলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরই তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। কিন্তু কেন তিনি সেই সময় ফেরেননি, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তিনি লন্ডন থেকেই বিএনপির রাজনীতি পরিচালনা করছেন।
গত ৬ মে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে দেশে ফেরার সময়ও অনেকে আশা করেছিলেন তারেক রহমানও ফিরবেন। যদিও সেদিন তারেক রহমানের বদলে তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর পর শাশুড়ির সাথে দেশে ফিরেছিলেন।
তখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন যে, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান ইতিমধ্যেই লন্ডনে ফিরে গেছেন।
এতদিন তারেক রহমানের দেশে না ফেরার পেছনে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়ের করা মামলাগুলোকে প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছিল। তবে সম্প্রতি একটি বড় পরিবর্তন এসেছে। ২৮ মে সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলাতেও তিনি খালাস পান। এর মধ্য দিয়ে তার বিরুদ্ধে থাকা সব দণ্ড ও মামলা থেকে তিনি মুক্ত হয়েছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তার দেশে ফেরা এখন কেবলই সময়ের ব্যাপার।
তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথে এতদিন যে তিনটি প্রধান বাধা ছিল, সেগুলো হলো – চারটি মামলায় সাজা, পাসপোর্ট জটিলতা এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। মামলার রায় এখন তার পক্ষে এসেছে। তবে পাসপোর্টের বিষয়টি এখনো কিছুটা বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে।
২০০৮ সালে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর তার পাসপোর্ট নবায়ন হয়নি। তৎকালীন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছিলেন, তারেক রহমান ও তার স্ত্রী-মেয়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট ‘সারেন্ডার’ করেছেন। যদিও বিএনপি এই দাবি অস্বীকার করে।
বর্তমানে তার হাতে বৈধ পাসপোর্ট নেই, ফলে নতুন করে আবেদন করতে হবে। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এখন আর পাসপোর্ট পাওয়া তেমন কঠিন হবে না।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়ার বড় ছেলে হিসেবে তারেক রহমান উত্তরাধিকার সূত্রেই বিএনপির রাজনীতিতে আসেন। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর তাকে রাজনীতিতে আনতে দলে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিবের একটি পদ তৈরি করা হয়েছিল।
২০০৭-০৮ সালের সেনা-নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়ার মতো তিনিও গ্রেফতার হন। মুক্তি পাওয়ার পর স্ত্রী-কন্যা নিয়ে তিনি লন্ডনে চলে যান এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়, যার মধ্যে পাঁচটি মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়।