ঢাকা ১২:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    কুয়ালালামপুরে জুয়া ও পতিতাবৃত্তি বিরোধী অভিযানে ৩৭৭ বাংলাদেশি আটক

    ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
    • আপডেট সময় ১২:২০:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
    • / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে

    মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে জুয়া ও পতিতাবৃত্তি বিরোধী অভিযানে ৮২৮ জন বিদেশি নাগরিককে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন ৩৭৭ জন বাংলাদেশি, যারা জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ধরা পড়েছেন। এছাড়া পতিতাবৃত্তির অভিযোগে ৩৭ জন এবং অন্য ঘটনায় মিয়ানমারের ২১ জন নাগরিককেও আটক করা হয়েছে। এ খবর নিশ্চিত করেছে মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বারনামা।

    শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে জালান ইপোহ এলাকার একটি তিন তারকা হোটেলে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। এ সময় কাজের চুক্তিপত্রের কপি, ছয়টি থাই পাসপোর্ট, তিনটি ভিয়েতনামী পাসপোর্ট, তিনটি ইন্দোনেশিয়ান পাসপোর্ট এবং একটি লাওসিয়ান পাসপোর্ট জব্দ করা হয়। একই রাতে নেগেরি সেম্বিলানের নিলাই এলাকায় আলাদা অভিযানে আরও ২১ জন মিয়ানমারের নাগরিককে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে একজনকে ‘প্রাইমিস কেয়ারটেকার’ এবং বাকিদের পরিচারিকা হিসেবে কাজ করার সন্দেহে ধরা হয়। আটক ব্যক্তিদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।

    এর আগে, কুয়ালালামপুরের একটি অনলাইন জুয়ার আখড়ায় অভিযান চালিয়ে ৭৭০ জন বিদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি—৩৭৭ জন—ছিলেন বাংলাদেশি। এই অভিযানটি দুই সপ্তাহের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয় এবং এতে পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন সদর দপ্তরের গোয়েন্দা ও বিশেষ অভিযান শাখার কর্মকর্তারা অংশ নেন।

    রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতুক জাকারিয়া শাবান এক বিবৃতিতে জানান, আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন মিয়ানমারের দুই নারী, ভারতের একজন নারী, ইন্দোনেশিয়ার একজন পুরুষ, ইন্দোনেশিয়ার ১৭ নারী, থাইল্যান্ডের নয় নারী, ভিয়েতনামের ছয় নারী ও লাওসের একজন নারী। তাদের বয়স ১৯ থেকে ৬১ বছরের মধ্যে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ছয়জন থাই, তিনজন ভিয়েতনামী, দুইজন ইন্দোনেশিয়ান এবং একজন লাওসিয়ান নারী ভিসার অপব্যবহার করেছেন। এছাড়া একজন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষ অতিরিক্ত সময় ধরে অবস্থান করছিলেন। আরও দুইজন মিয়ানমারের পুরুষ, একজন ভারতীয় পুরুষ, ১৫ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী, তিনজন ভিয়েতনামী নারী এবং তিনজন থাই নারীর কোনো বৈধ ভ্রমণ নথি ছিল না।

    ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, হোটেলটিকে বিদেশি পতিতাবৃত্তির আখড়ায় পরিণত করা হয়েছিল। গ্রাহকরা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বা সরাসরি গিয়ে ছবি দেখে নারী বেছে নিতে পারতেন। ঘণ্টাপ্রতি ২৫০ থেকে ৪০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত টাকা নেওয়া হতো। ধারণা করা হচ্ছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এই সিন্ডিকেট সক্রিয় ছিল।

    আইনি প্রক্রিয়ায় ১৯৬৩ সালের ইমিগ্রেশন রেগুলেশনের ৩৯(বি) ধারায় ছয়জন থাই, তিনজন ভিয়েতনামী, দুইজন ইন্দোনেশিয়ান ও একজন লাওসিয়ান নারীকে আটক করা হয়েছে। একই আইনের ৬(৩) ধারায় দুইজন মিয়ানমারের পুরুষ, একজন ভারতীয় পুরুষ, ১৫ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী, তিনজন ভিয়েতনামী নারী এবং তিনজন থাই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া ১৫(৪) ধারায় একজন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষকেও আটক করা হয়েছে।

    সবাইকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাতজন স্থানীয় পুরুষকে তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    কুয়ালালামপুরে জুয়া ও পতিতাবৃত্তি বিরোধী অভিযানে ৩৭৭ বাংলাদেশি আটক

    আপডেট সময় ১২:২০:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে জুয়া ও পতিতাবৃত্তি বিরোধী অভিযানে ৮২৮ জন বিদেশি নাগরিককে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন ৩৭৭ জন বাংলাদেশি, যারা জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ধরা পড়েছেন। এছাড়া পতিতাবৃত্তির অভিযোগে ৩৭ জন এবং অন্য ঘটনায় মিয়ানমারের ২১ জন নাগরিককেও আটক করা হয়েছে। এ খবর নিশ্চিত করেছে মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বারনামা।

    শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে জালান ইপোহ এলাকার একটি তিন তারকা হোটেলে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। এ সময় কাজের চুক্তিপত্রের কপি, ছয়টি থাই পাসপোর্ট, তিনটি ভিয়েতনামী পাসপোর্ট, তিনটি ইন্দোনেশিয়ান পাসপোর্ট এবং একটি লাওসিয়ান পাসপোর্ট জব্দ করা হয়। একই রাতে নেগেরি সেম্বিলানের নিলাই এলাকায় আলাদা অভিযানে আরও ২১ জন মিয়ানমারের নাগরিককে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে একজনকে ‘প্রাইমিস কেয়ারটেকার’ এবং বাকিদের পরিচারিকা হিসেবে কাজ করার সন্দেহে ধরা হয়। আটক ব্যক্তিদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।

    এর আগে, কুয়ালালামপুরের একটি অনলাইন জুয়ার আখড়ায় অভিযান চালিয়ে ৭৭০ জন বিদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি—৩৭৭ জন—ছিলেন বাংলাদেশি। এই অভিযানটি দুই সপ্তাহের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয় এবং এতে পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন সদর দপ্তরের গোয়েন্দা ও বিশেষ অভিযান শাখার কর্মকর্তারা অংশ নেন।

    রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতুক জাকারিয়া শাবান এক বিবৃতিতে জানান, আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন মিয়ানমারের দুই নারী, ভারতের একজন নারী, ইন্দোনেশিয়ার একজন পুরুষ, ইন্দোনেশিয়ার ১৭ নারী, থাইল্যান্ডের নয় নারী, ভিয়েতনামের ছয় নারী ও লাওসের একজন নারী। তাদের বয়স ১৯ থেকে ৬১ বছরের মধ্যে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ছয়জন থাই, তিনজন ভিয়েতনামী, দুইজন ইন্দোনেশিয়ান এবং একজন লাওসিয়ান নারী ভিসার অপব্যবহার করেছেন। এছাড়া একজন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষ অতিরিক্ত সময় ধরে অবস্থান করছিলেন। আরও দুইজন মিয়ানমারের পুরুষ, একজন ভারতীয় পুরুষ, ১৫ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী, তিনজন ভিয়েতনামী নারী এবং তিনজন থাই নারীর কোনো বৈধ ভ্রমণ নথি ছিল না।

    ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, হোটেলটিকে বিদেশি পতিতাবৃত্তির আখড়ায় পরিণত করা হয়েছিল। গ্রাহকরা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বা সরাসরি গিয়ে ছবি দেখে নারী বেছে নিতে পারতেন। ঘণ্টাপ্রতি ২৫০ থেকে ৪০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত টাকা নেওয়া হতো। ধারণা করা হচ্ছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এই সিন্ডিকেট সক্রিয় ছিল।

    আইনি প্রক্রিয়ায় ১৯৬৩ সালের ইমিগ্রেশন রেগুলেশনের ৩৯(বি) ধারায় ছয়জন থাই, তিনজন ভিয়েতনামী, দুইজন ইন্দোনেশিয়ান ও একজন লাওসিয়ান নারীকে আটক করা হয়েছে। একই আইনের ৬(৩) ধারায় দুইজন মিয়ানমারের পুরুষ, একজন ভারতীয় পুরুষ, ১৫ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী, তিনজন ভিয়েতনামী নারী এবং তিনজন থাই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া ১৫(৪) ধারায় একজন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষকেও আটক করা হয়েছে।

    সবাইকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাতজন স্থানীয় পুরুষকে তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে।