ঢাকা ০৮:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫

    গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে অস্ট্রেলিয়া উত্তাল-হারবার ব্রিজে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০২:১৮:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৬০ বার পড়া হয়েছে

    দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ও জরুরি ত্রাণ সহায়তার দাবিতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে হাজারো মানুষ প্রবল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে অংশ নেন এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে। সিডনির বিখ্যাত হারবার ব্রিজে আয়োজিত এই মানবিক মিছিলে অংশ নিয়েছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জও।

    ‘মার্চ ফর হিউম্যানিটি’ নামের এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচিতে বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল হাঁড়ি-পাতিল—ক্ষুধা আর দুর্ভিক্ষের প্রতীক হিসেবে। তাঁদের দাবি ছিল একটাই: গাজার অবরুদ্ধ জনপদের জন্য অবিলম্বে শান্তিচুক্তি কার্যকর করতে হবে এবং খোলা রাখতে হবে ত্রাণ সরবরাহের পথ।

    ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলা ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহে বাধা দেওয়ার কারণে সেখানে ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

    এদিকে নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের বাধা ও রাজ্যের প্রশাসনিক আপত্তি সত্ত্বেও শনিবার রাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট বিক্ষোভের পক্ষে রায় দেয়। এরপর রবিবার দুপুরে হাজারো মানুষ জড়ো হন হারবার ব্রিজে। গোটা সড়কজুড়ে ছিল শত শত পুলিশ সদস্যের নিরাপত্তা বেষ্টনী। পুলিশ আগেভাগেই বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করার অনুরোধ জানায়।

    এই সময় সিডনির পাশাপাশি মেলবোর্নেও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে আয়োজিত হয় আরেকটি বিশাল মিছিল। সেখানেও দেখা যায় শক্তিশালী পুলিশ মোতায়েন। অন্যদিকে, ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ বন্ধে বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক চাপ বাড়ছে। ইতোমধ্যে ফ্রান্স ও কানাডা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, যদি ইসরায়েল মানবিক সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয় এবং যুদ্ধবিরতিতে না আসে, তবে তারাও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে।

    তবে এই আন্তর্জাতিক অবস্থানকে স্বাগত না জানিয়ে ইসরায়েল বলছে, এসব স্বীকৃতি ফিলিস্তিনের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসকে ‘পুরস্কৃত করার শামিল’। গাজা উপত্যকার বর্তমান চিত্র এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিচ্ছবি—ধ্বংসস্তূপ, বাস্তুচ্যুত পরিবার, অনাহারে দিন কাটানো শিশু ও নারী। এমন পরিস্থিতিতে শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ মানুষ রাজপথে নেমে আসায় বিশ্বমঞ্চে একটি নতুন বার্তা পৌঁছে গেল: মানবিকতা রাজনীতির ঊর্ধ্বে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে অস্ট্রেলিয়া উত্তাল-হারবার ব্রিজে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

    আপডেট সময় ০২:১৮:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

    দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ও জরুরি ত্রাণ সহায়তার দাবিতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে হাজারো মানুষ প্রবল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে অংশ নেন এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে। সিডনির বিখ্যাত হারবার ব্রিজে আয়োজিত এই মানবিক মিছিলে অংশ নিয়েছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জও।

    ‘মার্চ ফর হিউম্যানিটি’ নামের এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচিতে বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল হাঁড়ি-পাতিল—ক্ষুধা আর দুর্ভিক্ষের প্রতীক হিসেবে। তাঁদের দাবি ছিল একটাই: গাজার অবরুদ্ধ জনপদের জন্য অবিলম্বে শান্তিচুক্তি কার্যকর করতে হবে এবং খোলা রাখতে হবে ত্রাণ সরবরাহের পথ।

    ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলা ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহে বাধা দেওয়ার কারণে সেখানে ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

    এদিকে নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের বাধা ও রাজ্যের প্রশাসনিক আপত্তি সত্ত্বেও শনিবার রাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট বিক্ষোভের পক্ষে রায় দেয়। এরপর রবিবার দুপুরে হাজারো মানুষ জড়ো হন হারবার ব্রিজে। গোটা সড়কজুড়ে ছিল শত শত পুলিশ সদস্যের নিরাপত্তা বেষ্টনী। পুলিশ আগেভাগেই বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করার অনুরোধ জানায়।

    এই সময় সিডনির পাশাপাশি মেলবোর্নেও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে আয়োজিত হয় আরেকটি বিশাল মিছিল। সেখানেও দেখা যায় শক্তিশালী পুলিশ মোতায়েন। অন্যদিকে, ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ বন্ধে বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক চাপ বাড়ছে। ইতোমধ্যে ফ্রান্স ও কানাডা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, যদি ইসরায়েল মানবিক সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয় এবং যুদ্ধবিরতিতে না আসে, তবে তারাও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে।

    তবে এই আন্তর্জাতিক অবস্থানকে স্বাগত না জানিয়ে ইসরায়েল বলছে, এসব স্বীকৃতি ফিলিস্তিনের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসকে ‘পুরস্কৃত করার শামিল’। গাজা উপত্যকার বর্তমান চিত্র এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিচ্ছবি—ধ্বংসস্তূপ, বাস্তুচ্যুত পরিবার, অনাহারে দিন কাটানো শিশু ও নারী। এমন পরিস্থিতিতে শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ মানুষ রাজপথে নেমে আসায় বিশ্বমঞ্চে একটি নতুন বার্তা পৌঁছে গেল: মানবিকতা রাজনীতির ঊর্ধ্বে।