জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন

- আপডেট সময় ১২:৩১:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
- / ২৬৮ বার পড়া হয়েছে
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সোমবার রাত ৮টা থেকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয় এক সংবেদনশীল ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি। মোমবাতি প্রজ্বলন, গান-কবিতা আবৃত্তি, আলোচনা ও শপথ পাঠের মাধ্যমে এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
রাত ৮টা ৩০ মিনিটে উপস্থিত সকলে একসাথে মোমবাতি জ্বালিয়ে শহীদদের প্রতি নীরব শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শহীদ মিনার আলোকিত হয়ে ওঠে শত শত মোমবাতির আলোয়। উপস্থিত অনেকেই হাতে ব্যানার ও পোস্টার বহন করেন, যেখানে লেখা ছিল-“শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না”, “গণতন্ত্র রক্ষায় আমরা শপথবদ্ধ”।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে তরুণ শিল্পীরা পরিবেশন করেন দেশাত্মবোধক গান ও গণসংগীত। পাশাপাশি, পাঠ করা হয় শহীদদের স্মরণে রচিত কবিতা ও সাহিত্যাংশ। “এই মাটিতে শুয়ে আছে যারা” — এই কবিতাটি আবৃত্তির সময় অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
ছাত্র, শিক্ষক, লেখক, মানবাধিকার কর্মী ও সমাজকর্মীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন – এই শহীদরা কেবল অতীতের মানুষ নন, তাঁরা আমাদের বিবেক, সাহস ও প্রতিবাদের উৎস। আজকের প্রজন্মকে তাদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে।
একজন ছাত্রনেতা বলেন, “আমরা এই মোমবাতির আলো দিয়ে শুধু অন্ধকারকে সরাই না, বরং প্রতিজ্ঞা করি — শহীদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার। অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, প্রগতিশীল সংগঠনের কর্মী, শিল্পী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ। নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পুরো আয়োজনটি ছিল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ।
এই রাতটি শুধু একটি স্মরণসভা ছিল না, বরং এটি হয়ে উঠেছিল এক প্রকার নীরব প্রতিবাদ এবং ভবিষ্যতের জন্য সাহস সঞ্চয়ের মুহূর্ত। শহীদ মিনারের মোমবাতির আলো যেন জানান দিচ্ছিল-গণতন্ত্র ও ন্যায়ের লড়াই এখনও শেষ হয়নি।
মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, টিএসসি প্রাঙ্গণ এবং শাহবাগ মোড়ে জড়ো হন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, নাগরিক সমাজ ও সাধারণ মানুষ। হাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে তাঁরা শহীদদের স্মরণ করেন, এবং গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন।
আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, “এই শহীদরা ছিলেন আমাদের গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতীক। তাঁদের রক্ত যে গণতন্ত্রের বীজ বপন করেছিল, তা যেন কখনো বৃথা না যায়”। গণতন্ত্র ও ন্যায়ের জন্য আত্মত্যাগকারী শহীদদের স্মরণে এই ধরনের কর্মসূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, স্বাধীনতা ও অধিকার অর্জনের পথ কখনোই সহজ ছিল না। তাঁদের আত্মত্যাগ নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে যুগ যুগ ধরে।