‘জেন-জি’ তরুণদের দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। পদত্যাগের পর তিনি হেলিকপ্টারে করে রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পালিয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তার সহকারী প্রকাশ সিলওয়াল, জানিয়েছে রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীতে টানা দুই দিনের ভয়াবহ সহিংস বিক্ষোভে অন্তত ১৯ জন নিহত হওয়ার পর মঙ্গলবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী ওলি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এর আগে তিনি দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলে নিরাপদে দেশ ছাড়ার জন্য সেনাবাহিনীর সহায়তা চান। গুঞ্জন রয়েছে, তিনি সম্ভবত দুবাই বা ভারতে আশ্রয় নিতে পারেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে সেনা সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল প্রধানমন্ত্রী অলিকে পদত্যাগের পরামর্শ দেন। অফিশিয়াল সূত্রে জানা গেছে, ফোনালাপে অলি সেনাপ্রধানকে দেশের ক্রমাবনত পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। তবে জেনারেল সিগদেল স্পষ্ট করে জানান, সেনাবাহিনী কেবল তখনই হস্তক্ষেপ করতে পারবে যদি প্রধানমন্ত্রী স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়েন। সেনা সূত্র আরও জানায়, অলি পদত্যাগের সঙ্গেই সেনাবাহিনী দেশের নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রস্তুত।

উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে নেপালে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) প্রথমে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু করেন তরুণরা। তবে পরে পরিস্থিতি সহিংস আকার ধারণ করে।

বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনী লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় কাঠমান্ডুতে কারফিউ জারি করে প্রশাসন। তরুণদের এই আন্দোলনকে তারা নিজেরাই নাম দিয়েছেন ‘জেন-জি রেভল্যুশন’।