নিবন্ধনের শেষ দিনে ইসিতে এনসিপি, যাচাইয়ের অপেক্ষায় ১৪৪ দল

- আপডেট সময় ০২:৫৬:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
- / ২৫৯ বার পড়া হয়েছে
নিবন্ধনের শর্ত পূরণের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্ধারিত সময়ের শেষ দিনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রতিনিধি দল হাজির হয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৫টার মধ্যেই প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে সব রাজনৈতিক দলের সামনে। এরই অংশ হিসেবে দুপুর ১২টার পর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল ইসি ভবনে প্রবেশ করে।
দলের পক্ষে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ এবং যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এদিনের মধ্যেই যারা ঘাটতি পূরণে নির্ধারিত তথ্য উপস্থাপন করবে না, তাদের আবেদনের ওপর কমিশন আর অগ্রসর হবে না।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২২ জুন পর্যন্ত নিবন্ধনের জন্য ১৪৪টি রাজনৈতিক দল থেকে ১৪৭টি আবেদন জমা পড়ে। তবে প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে কোনো দলই নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে পারেনি। ফলে ইসি সব দলকে ঘাটতি পূরণে অতিরিক্ত ১৫ দিনের সময় দেয়, যার শেষ দিন আজ।
নিবন্ধন পেতে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য রয়েছে কিছু নির্ধারিত আইনগত শর্ত। এর মধ্যে রয়েছে—একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি, অন্তত এক-তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি, প্রতিটি কমিটিতে ন্যূনতম ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ এবং অতীত সংসদ সদস্য থাকা বা সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে ৫ শতাংশ ভোট পাওয়ার রেকর্ড। এছাড়াও আবেদনপত্রের সঙ্গে নির্ধারিত দলিলপত্র জমা দেওয়াও আবশ্যক। প্রাথমিক বাছাইয়ে এই বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন প্রথমে আবেদনগুলো প্রাথমিকভাবে যাচাই করে। এরপর দলগুলোর তথ্য মাঠপর্যায়ে তদন্ত করে একটি চূড়ান্ত বাছাই তালিকা তৈরি করে। এই তালিকার ভিত্তিতে ইসি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যেখানে দাবি-আপত্তি জানাতে সুযোগ থাকে। আপত্তি থাকলে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আপত্তি না থাকলে বা নিষ্পত্তির পর সংশ্লিষ্ট দলকে নিবন্ধন সনদ প্রদান করা হয়। নিবন্ধন না থাকলে কোনো রাজনৈতিক দল নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না।
বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। তখন থেকে এ পর্যন্ত মোট ৫৫টি দল নিবন্ধন পেলেও বিভিন্ন সময় শর্ত না মানা, আদালতের আদেশ কিংবা শর্ত ভঙ্গের কারণে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। এসব দল হলো—জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা। পরে আদালতের নির্দেশে জামায়াতে ইসলামি ও জাগপার নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে বলা হলেও নির্বাচন কমিশন আপাতত শুধুমাত্র জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়েছে।
এখন দেখার বিষয়, সময়মতো ঘাটতি পূরণ করে কতটি দল ইসির পরবর্তী যাচাইয়ে টিকে থাকতে পারে। নিবন্ধনের দৌড়ে থাকা নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে আজকের দিনটি তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।