ঢাকা ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

    নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে দাঁড়াবেন-আসিফ মাহমুদ

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৬:১১:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

    আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) নিউইয়র্কভিত্তিক ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের টকশোতে তিনি এই কথা বলেন।

    আসিফ মাহমুদ বলেন, “আমার মতে, নির্বাচনের সময় রাজনীতিতে যারা আছে, তারা সরকারে থাকা উচিত নয়। তাই তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে যাবো।” তবে তিনি আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কিনা বা জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দেবেন কিনা, তা স্পষ্ট করেননি। তিনি জানান, তিনি পতাকাবাহী গাড়ি বা ক্ষমতার মোহে নয়, বরং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে সোচ্চার থাকার জন্যই সরকারে আছেন।

    টকশোতে আসিফ মাহমুদ অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন ও এক বছরের কার্যক্রম, সামরিক বাহিনীর ভূমিকা, জুলাই আন্দোলনের মিত্র দলের বিভাজনসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, সরকার গঠনের আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান প্রথমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মেনে নিতে চাননি।

    আসিফ মাহমুদ বলেন, “সেনাপ্রধান ইউনূসের বিরুদ্ধে মত দেন, কারণ আওয়ামী লীগ তার সমর্থক নয়।” পরে মানলেও ‘বুকে পাথর চাপা’ শব্দটি ব্যবহার করেন। তিনি স্পষ্ট করেন যে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার বা সরকারের ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই এবং ৫ আগস্টের পর সেনাবাহিনীর অবদান তারা স্বীকার করেন। তবে, সেনাপ্রধানের সঙ্গে দ্বিমত শুধু আওয়ামী লীগ বিষয়ক।

    স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা এখনও বাকি রয়েছে। এই দায়িত্ব শেষ না করলে ঐতিহাসিক দায় থেকে যাবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকার কারণে নাগরিক সেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, “এর দায় আমার ওপর পড়ছে, কিন্তু স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আয়োজন করা আমাদের হাতে নেই। সব দল রাজি হলেও বিএনপি ও সহযোগী কিছু দল রাজি হচ্ছে না।”

    আসিফ মাহমুদ ইঙ্গিত দেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তি সক্রিয় রয়েছে। একটি মহল জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করছে এবং দলটিকে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে দাঁড় করাতে চায়। এমনকি কিছু আওয়ামী লীগ নেতা জাতীয় পার্টির হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেন, “ড. ইউনূস সরকারের ভেতরও সরকার আছে। একক সরকার নেই, বরং একাধিক সরকার চলছে। ৫ আগস্টের পর সামরিক বাহিনী ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়েছে।”

    কুমিল্লার মুরাদনগরে মব, শিক্ষক নিপীড়ন ও চাঁদাবাজির অভিযোগে তার বাবা বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অপপ্রচার আখ্যায়িত করে তিনি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। আসিফ মাহমুদ স্পষ্ট করেন যে তিনি মুরাদনগর থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ভাবছেন না। তিনি বলেন, “আমি জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতি করতে চাই। ঢাকা শহরই আমার রাজনৈতিক গন্তব্য।”

    নিউজটি শেয়ার করুন

    নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে দাঁড়াবেন-আসিফ মাহমুদ

    আপডেট সময় ০৬:১১:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

    আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) নিউইয়র্কভিত্তিক ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের টকশোতে তিনি এই কথা বলেন।

    আসিফ মাহমুদ বলেন, “আমার মতে, নির্বাচনের সময় রাজনীতিতে যারা আছে, তারা সরকারে থাকা উচিত নয়। তাই তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে যাবো।” তবে তিনি আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কিনা বা জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দেবেন কিনা, তা স্পষ্ট করেননি। তিনি জানান, তিনি পতাকাবাহী গাড়ি বা ক্ষমতার মোহে নয়, বরং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে সোচ্চার থাকার জন্যই সরকারে আছেন।

    টকশোতে আসিফ মাহমুদ অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন ও এক বছরের কার্যক্রম, সামরিক বাহিনীর ভূমিকা, জুলাই আন্দোলনের মিত্র দলের বিভাজনসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, সরকার গঠনের আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান প্রথমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মেনে নিতে চাননি।

    আসিফ মাহমুদ বলেন, “সেনাপ্রধান ইউনূসের বিরুদ্ধে মত দেন, কারণ আওয়ামী লীগ তার সমর্থক নয়।” পরে মানলেও ‘বুকে পাথর চাপা’ শব্দটি ব্যবহার করেন। তিনি স্পষ্ট করেন যে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার বা সরকারের ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই এবং ৫ আগস্টের পর সেনাবাহিনীর অবদান তারা স্বীকার করেন। তবে, সেনাপ্রধানের সঙ্গে দ্বিমত শুধু আওয়ামী লীগ বিষয়ক।

    স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা এখনও বাকি রয়েছে। এই দায়িত্ব শেষ না করলে ঐতিহাসিক দায় থেকে যাবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকার কারণে নাগরিক সেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, “এর দায় আমার ওপর পড়ছে, কিন্তু স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আয়োজন করা আমাদের হাতে নেই। সব দল রাজি হলেও বিএনপি ও সহযোগী কিছু দল রাজি হচ্ছে না।”

    আসিফ মাহমুদ ইঙ্গিত দেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তি সক্রিয় রয়েছে। একটি মহল জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করছে এবং দলটিকে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে দাঁড় করাতে চায়। এমনকি কিছু আওয়ামী লীগ নেতা জাতীয় পার্টির হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেন, “ড. ইউনূস সরকারের ভেতরও সরকার আছে। একক সরকার নেই, বরং একাধিক সরকার চলছে। ৫ আগস্টের পর সামরিক বাহিনী ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়েছে।”

    কুমিল্লার মুরাদনগরে মব, শিক্ষক নিপীড়ন ও চাঁদাবাজির অভিযোগে তার বাবা বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অপপ্রচার আখ্যায়িত করে তিনি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। আসিফ মাহমুদ স্পষ্ট করেন যে তিনি মুরাদনগর থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ভাবছেন না। তিনি বলেন, “আমি জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতি করতে চাই। ঢাকা শহরই আমার রাজনৈতিক গন্তব্য।”