ঢাকা ০৯:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

    পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় সেতু বাস্তবায়নে জনগণের ঐক্যই বড় শক্তি: মির্জা ফখরুল

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৪:৩৯:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
    • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

    দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবিকার সাথে সরাসরি জড়িত পদ্মা ব্যারাজ এবং দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকারকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, জনগণের মধ্য থেকে যদি এই দাবির প্রতি ঐক্যবদ্ধ চাপ সৃষ্টি হয়, তাহলে সেটি বাস্তবায়ন করা অসম্ভব নয়।

    রোববার (২৭ জুলাই) রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক সেন্টারে ‘পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। এ সেমিনারের আয়োজন করে ‘পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি’।

    মির্জা ফখরুল বলেন, প্রায় আট কোটি মানুষের জীবনযাত্রা পদ্মা ব্যারাজ ও সেতুর উপর নির্ভরশীল। অথচ দীর্ঘ সাতবার সম্ভাব্যতা যাচাই করা হলেও আজও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। এই দীর্ঘসূত্রতা অত্যন্ত হতাশাজনক।
    তিনি বলেন, ফারাক্কা ব্যারাজের নেতিবাচক প্রভাব শুধু ফরিদপুর বা আশপাশের এলাকাতেই সীমাবদ্ধ নয়—এটি সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের একটি সামগ্রিক সংকট। ফলে এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান রক্ষায় পদ্মা ব্যারাজ এবং দ্বিতীয় সেতুর প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।

    দক্ষিণাঞ্চলের বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়া অনেক এলাকার অবনতিশীল পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, মানুষ জায়গা ছেড়ে চলে যাচ্ছে, জীবিকা হারাচ্ছে। এ সমস্যা শুধু ভৌগোলিক নয়, মানবিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও তা জরুরি হয়ে উঠেছে।

    তিনি স্পষ্টভাবে জানান, বিএনপি তার রাজনৈতিক অঙ্গীকার হিসেবে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ বিষয়ে দলটি অত্যন্ত সচেতন এবং জনগণের দাবিকেই সরকারগুলোর প্রতি চাপ সৃষ্টির প্রধান হাতিয়ার হিসেবে দেখছে।
    বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ উন্নয়ন চায়, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চায়। আর গণতন্ত্রের মাধ্যমেই সব সমস্যার বাস্তব সমাধান সম্ভব।

    সেমিনারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। এ সময়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় সেতুর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। এ দাবি জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হলে সরকারের ওপর বাস্তবায়নের চাপ তৈরি হবে।

    তিনি বলেন, আগামী সরকারকে মধ্যম মেয়াদি পরিকল্পনায় বিনিয়োগ, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ রাখতে হবে। ২০২৬-২৭ অর্থবছরের বাজেটেই এই প্রকল্পের অর্থায়নের ধারা শুরু হওয়া উচিত। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির সভাপতি ও রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাসসহ অন্যান্য রাজনৈতিক ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।

    সবার বক্তব্যে উঠে আসে একটি কথা—দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা এবং জনজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন আর বিলম্ব করা যাবে না। জনগণের ঐক্যবদ্ধ দাবিই হতে পারে এর একমাত্র চালিকা শক্তি।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় সেতু বাস্তবায়নে জনগণের ঐক্যই বড় শক্তি: মির্জা ফখরুল

    আপডেট সময় ০৪:৩৯:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

    দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবিকার সাথে সরাসরি জড়িত পদ্মা ব্যারাজ এবং দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকারকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, জনগণের মধ্য থেকে যদি এই দাবির প্রতি ঐক্যবদ্ধ চাপ সৃষ্টি হয়, তাহলে সেটি বাস্তবায়ন করা অসম্ভব নয়।

    রোববার (২৭ জুলাই) রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক সেন্টারে ‘পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। এ সেমিনারের আয়োজন করে ‘পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি’।

    মির্জা ফখরুল বলেন, প্রায় আট কোটি মানুষের জীবনযাত্রা পদ্মা ব্যারাজ ও সেতুর উপর নির্ভরশীল। অথচ দীর্ঘ সাতবার সম্ভাব্যতা যাচাই করা হলেও আজও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। এই দীর্ঘসূত্রতা অত্যন্ত হতাশাজনক।
    তিনি বলেন, ফারাক্কা ব্যারাজের নেতিবাচক প্রভাব শুধু ফরিদপুর বা আশপাশের এলাকাতেই সীমাবদ্ধ নয়—এটি সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের একটি সামগ্রিক সংকট। ফলে এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান রক্ষায় পদ্মা ব্যারাজ এবং দ্বিতীয় সেতুর প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।

    দক্ষিণাঞ্চলের বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়া অনেক এলাকার অবনতিশীল পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, মানুষ জায়গা ছেড়ে চলে যাচ্ছে, জীবিকা হারাচ্ছে। এ সমস্যা শুধু ভৌগোলিক নয়, মানবিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও তা জরুরি হয়ে উঠেছে।

    তিনি স্পষ্টভাবে জানান, বিএনপি তার রাজনৈতিক অঙ্গীকার হিসেবে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ বিষয়ে দলটি অত্যন্ত সচেতন এবং জনগণের দাবিকেই সরকারগুলোর প্রতি চাপ সৃষ্টির প্রধান হাতিয়ার হিসেবে দেখছে।
    বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ উন্নয়ন চায়, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চায়। আর গণতন্ত্রের মাধ্যমেই সব সমস্যার বাস্তব সমাধান সম্ভব।

    সেমিনারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। এ সময়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় সেতুর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। এ দাবি জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হলে সরকারের ওপর বাস্তবায়নের চাপ তৈরি হবে।

    তিনি বলেন, আগামী সরকারকে মধ্যম মেয়াদি পরিকল্পনায় বিনিয়োগ, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ রাখতে হবে। ২০২৬-২৭ অর্থবছরের বাজেটেই এই প্রকল্পের অর্থায়নের ধারা শুরু হওয়া উচিত। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির সভাপতি ও রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাসসহ অন্যান্য রাজনৈতিক ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।

    সবার বক্তব্যে উঠে আসে একটি কথা—দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা এবং জনজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন আর বিলম্ব করা যাবে না। জনগণের ঐক্যবদ্ধ দাবিই হতে পারে এর একমাত্র চালিকা শক্তি।