প্রাথমিক শিক্ষকদের সারাদেশে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু

- আপডেট সময় ০২:১১:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
- / ২৭০ বার পড়া হয়েছে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা সোমবার (২৬ মে) থেকে সারাদেশে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেছেন। তিন দফা দাবিতে এই আকস্মিক কর্মসূচির ফলে সারা দেশের এক কোটির বেশি শিশু শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, ‘সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’ এর ডাকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে।
তাদের মূল দাবিগুলো হলো সহকারী শিক্ষক পদকে শুরুর পদ হিসেবে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ দ্রুত পদোন্নতি।
সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দাবির বিষয়ে কোনো গুরুত্ব না দেওয়ায় এবং আলোচনার উদ্যোগ না নেওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে এই কর্মসূচিতে গেছেন। তিনি বলেন, তারা শিক্ষার্থীদের শিখন কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাননি।
প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিসংখ্যান ২০২৩ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে এক কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ৬৮৫ জন প্রাথমিক শিক্ষার্থী রয়েছে, যার মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এক কোটি ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৮১৫ জন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী আগামী তিন জুন ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে। এর আগ পর্যন্ত ছয় কার্যদিবস শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকার কথা থাকলেও শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরাও। তাদের মতে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কিন্ডারগার্টেন বা বেসরকারি বিদ্যালয়ের তুলনায় ছুটি বেশি থাকায় শিক্ষার্থীরা এমনিতেই পিছিয়ে আছে। সামনে ঈদুল আজহার ছুটি এবং তার আগে শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে ক্লাস বন্ধ থাকলে শিখন ঘাটতি আরও বাড়বে।
তবে শিক্ষক নেতারা বলছেন, বর্তমানে সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে বেতন পান, যার মূল বেতন ১১ হাজার টাকা। তাদের দাবি, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনের তুলনায় বাংলাদেশের শিক্ষকদের বেতন সর্বনিম্ন।
তারা আরও জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। যদিও এর আগে, গত পাঁচ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত এক ঘণ্টা, ১৬ থেকে ২০ মে পর্যন্ত দুই ঘণ্টা এবং ২১ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে শিক্ষকরা।