ঢাকা ০১:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

    ফেনীতে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে দুর্যোগ, প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৪:০০:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
    • / ২৬০ বার পড়া হয়েছে

    অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে সৃষ্ট বন্যায় ফেনী জেলায় ভয়াবহ দুর্যোগ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ২৯ হাজার ৭০০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং এখনো পানিবন্দি রয়েছেন ৬ হাজার ৯৫০টি পরিবার।

    সোমবার (১৪ জুলাই) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় কেন্দ্র (এনডিআরসিসি) থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের ফলে মুহুরী, কুহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পরশুরাম উপজেলার ১৯টি এবং ফুলগাজী উপজেলার ১৭টি পয়েন্টে নদীর বাঁধ ভেঙে পড়ে। এতে মোট ১৩৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর মধ্যে পরশুরামে ৪৪টি, ফুলগাজীতে ৬৭টি, ছাগলনাইয়ায় ১৫টি, ফেনী সদরে ৯টি এবং দাগনভূঞায় ২টি গ্রাম রয়েছে।

    তবে বর্তমানে জেলার সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ১৩০টির বেশি প্লাবিত গ্রাম থেকে পানি সরে গেছে এবং জেলার সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে থাকা অধিকাংশ মানুষ ইতোমধ্যে নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। এখনো ৩টি উপজেলার ৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৮৮টি পরিবারের ৩৬৫ জন মানুষ অবস্থান করছেন।

    দুর্যোগ পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসন ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নগদ ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ১৬০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার ও অন্যান্য জরুরি পণ্যের জন্য তিনটি উপজেলায় ২ হাজার ২০০ প্যাকেট সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

    উপজেলাগুলোর মধ্যে ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, সোনাগাজী, দাগনভূঞা ও ফেনী সদরে মোট ২৩০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবকদেরও সক্রিয়ভাবে কাজে লাগানো হয়েছে। ২ হাজার ৫৪৭ জন দক্ষ স্বেচ্ছাসেবকের মধ্য থেকে পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ায় ২৩০ জন স্বেচ্ছাসেবক উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছে।

    জরুরি সহায়তা হিসেবে বিভিন্ন উপজেলায় সরবরাহ করা হয়েছে লাইফ জ্যাকেট, গামবুট, রেইনকোট এবং ১০টি ফাইবার বোট। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে থাকা মানুষের জন্য রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে নৌযানসহ সহযোগিতা করছে।

    সাম্প্রতিক সময়ে এমন দুর্যোগ ফেনীর মানুষের জীবনে নতুন করে শঙ্কা তৈরি করেছে। তবে সরকারি-বেসরকারি তৎপরতায় পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হওয়ার আশা করা হচ্ছে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ফেনীতে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে দুর্যোগ, প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত

    আপডেট সময় ০৪:০০:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

    অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে সৃষ্ট বন্যায় ফেনী জেলায় ভয়াবহ দুর্যোগ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ২৯ হাজার ৭০০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং এখনো পানিবন্দি রয়েছেন ৬ হাজার ৯৫০টি পরিবার।

    সোমবার (১৪ জুলাই) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় কেন্দ্র (এনডিআরসিসি) থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের ফলে মুহুরী, কুহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পরশুরাম উপজেলার ১৯টি এবং ফুলগাজী উপজেলার ১৭টি পয়েন্টে নদীর বাঁধ ভেঙে পড়ে। এতে মোট ১৩৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর মধ্যে পরশুরামে ৪৪টি, ফুলগাজীতে ৬৭টি, ছাগলনাইয়ায় ১৫টি, ফেনী সদরে ৯টি এবং দাগনভূঞায় ২টি গ্রাম রয়েছে।

    তবে বর্তমানে জেলার সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ১৩০টির বেশি প্লাবিত গ্রাম থেকে পানি সরে গেছে এবং জেলার সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে থাকা অধিকাংশ মানুষ ইতোমধ্যে নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। এখনো ৩টি উপজেলার ৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৮৮টি পরিবারের ৩৬৫ জন মানুষ অবস্থান করছেন।

    দুর্যোগ পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসন ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নগদ ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ১৬০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার ও অন্যান্য জরুরি পণ্যের জন্য তিনটি উপজেলায় ২ হাজার ২০০ প্যাকেট সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

    উপজেলাগুলোর মধ্যে ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, সোনাগাজী, দাগনভূঞা ও ফেনী সদরে মোট ২৩০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবকদেরও সক্রিয়ভাবে কাজে লাগানো হয়েছে। ২ হাজার ৫৪৭ জন দক্ষ স্বেচ্ছাসেবকের মধ্য থেকে পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ায় ২৩০ জন স্বেচ্ছাসেবক উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছে।

    জরুরি সহায়তা হিসেবে বিভিন্ন উপজেলায় সরবরাহ করা হয়েছে লাইফ জ্যাকেট, গামবুট, রেইনকোট এবং ১০টি ফাইবার বোট। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে থাকা মানুষের জন্য রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে নৌযানসহ সহযোগিতা করছে।

    সাম্প্রতিক সময়ে এমন দুর্যোগ ফেনীর মানুষের জীবনে নতুন করে শঙ্কা তৈরি করেছে। তবে সরকারি-বেসরকারি তৎপরতায় পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হওয়ার আশা করা হচ্ছে।