বাংলা বললেই জোর করে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে: ক্ষোভ মমতার

- আপডেট সময় ০১:৩৪:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
- / ২৫৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি তকমা দিয়ে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। ভারতের বহু বিজেপি শাসিত রাজ্যে এমনটাই হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজ্য বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। এই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নজরে আনতে চান মমতা।
বিধানসভায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেন, কয়েকদিন আগেও বিভিন্ন জেলার বহু লোকজনকে নিয়ে এসেছি। বাংলা ভাষায় কথা বললেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাদেশি বলে আটকে দেওয়া হচ্ছে। বাংলা ভাষায় কথা বলা কি অপরাধ? আমাদের রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছে দেড় কোটি। সব রাজ্যের লোক আমাদের রাজ্যে কাজ করে। আমরা তো তাদের অপমান করি না? বাংলা ভাষায় কথা বলা কি অপরাধ? বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি তকমা দিয়ে আটকে দেওয়া হচ্ছে।
মমতা ব্যানার্জী আরও বলেন, বাংলার ৩০০ থেকে ৪০০ শ্রমিককে বাংলাদেশি বলে রাজস্থানে আটকে দেওয়া হয়েছে। এরকম আরও অনেক রাজ্যে হয়েছে। সেখান থেকে তাদের আমরা নিয়ে এসেছি। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমার রাজ্যের অনেককেই বাংলাদেশি বলে বন্দি রাখা হচ্ছে। বাংলাদেশি বলে তাদের জোর করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। অথচ তাদের অনেকেই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। এসব কি হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীকে উদ্দেশ্য করে মমতা ব্যানার্জী বলেন, বাংলায় যারা কথা বলে, তারা কি অপরাধ করেছে? এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে খুব কড়া প্রতিবাদ হবে। আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী বোধ হয় এই বিষয়গুলো জানেন না। আমি বিষয়টি তার নজরে আনব। যাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে তারা ভারতীয়। স্বামী বিবেকানন্দ থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সকলেই বাংলা ভাষায় কথা বলতেন। তারা কি সব ভুলে গেছে? বাংলাকে দেখলেই কি অত্যাচার করতে হবে? তাহলে স্পষ্ট বলে দিক, বাংলা নিষিদ্ধ। একাধিক দেশে একই ভাষা হতে পারে। ভারতের অনেকে উর্দু বলেন, অন্য দেশে উর্দু বলা হয়। শুধুমাত্র ভাষার কারণে তাদের অন্য দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে?
মমতা দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহর সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, আমরা কখনো বেআইনি কিছু করি না। গতকাল বাংলাদেশের হাইকমিশনার আমার কাছে এসেছিল। আমি প্রথমেই তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ভারত সরকারের অনুমতি আছে কি না। তিনি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরেই আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।
ইসরায়েল ও ইরানের যুদ্ধ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এই যুদ্ধের ফলে পরিবেশে দূষণের মাত্রা বাড়ছে এমন অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেন, বিশ্বের অনেক জায়গায় এখন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এ ধরনের সংঘাতে পানি, স্থল ও আবহাওয়ায় দূষণ বাড়ছে। এসব বন্ধ করার জন্য এখনেই পদক্ষেপ নিতে হবে। এটা পুরোই পররাষ্ট্র বিষয়, যা ভারত সরকারের অধীনে। তবে কূটনৈতিকভাবে, শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে যাতে যুদ্ধ বন্ধ হয়।
মমতা ব্যানার্জি বলেন, এটা পররাষ্ট্র বিষয়। যা ভারত সরকারের আওতাধীন। কূটনৈতিকভাবে, শান্তিপূর্ণভাবে, আমাদের অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে যাতে যুদ্ধ বন্ধ হয়। মমতার স্পষ্ট বক্তব্য, বৈদেশিক নীতি এবং কূটনৈতিক বিষয়ে কথা বলার আমার কোনো অধিকার নেই। বিশ্বের একজন উদ্বিগ্ন নাগরিক হিসেবে এটি আমার ব্যক্তিগত অভিমত।