বাংলাদেশ এখনও উচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতির দেশ: বিশ্বব্যাংক

- আপডেট সময় ০৪:০৫:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
- / ২৯০ বার পড়া হয়েছে
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বাংলাদেশ গত দুই বছর ধরে উচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতির দেশ হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে। সংস্থাটির হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৭২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশসহ মোট ১৫টি দেশ বর্তমানে ‘লাল তালিকায়’ রয়েছে, যেখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ৫ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।
বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদনে দেশগুলোকে চারটি ভাগে ভাগ করেছে। যেসব দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৩০ শতাংশের বেশি, সেগুলোকে ‘বেগুনি তালিকায়’ রাখা হয়েছে। এ তালিকায় রয়েছে মিয়ানমার, আর্জেন্টিনা, তুরস্কের মতো দেশগুলো।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ, ভারত, রাশিয়া, ইথিওপিয়া, ঘানার মতো দেশগুলো ‘লাল তালিকায়’ রয়েছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ২ থেকে ৫ শতাংশ হলে দেশগুলো ‘হলুদ তালিকায়’ এবং ২ শতাংশের নিচে হলে ‘সবুজ তালিকায়’ স্থান পায়। সবুজ তালিকায় রয়েছে সুইজারল্যান্ড, চীন, সৌদি আরব, ফ্রান্সের মতো দেশগুলো।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে দেশে গড় খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এর অর্থ হলো, যদি গত বছর কোনো পরিবার মাসে খাবারের পেছনে ১০ হাজার টাকা খরচ করত, তবে এবার তাদের গড়ে ১০ হাজার ৪৪০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিম্ন আয়ের মানুষেরা তাদের আয়ের ৭০ শতাংশের বেশি খাদ্য কিনতে ব্যয় করছেন, যা তাদের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম রায়হান বলেন, “খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির সমন্বয় প্রয়োজন। পাশাপাশি বাজার মনিটরিং জোরদার করতে হবে।”
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে মালাওয়ি, দক্ষিণ সুদান, হাইতির মতো দেশগুলো, যেখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৩০ শতাংশেরও বেশি। অন্যদিকে, সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, সৌদি আরব, চীন ও ফ্রান্সের মতো দেশগুলো।
বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতি চললেও গত কয়েক মাসে কিছুটা কমেছে। তবে এখনও সাধারণ মানুষের জন্য জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় চাপ কমেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্থিতিশীল বাজার ব্যবস্থাপনা এবং উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে এই সংকট কাটানো সম্ভব।