‘মন্ত্রী হলেই মানসিকতা বদলে যায়’ বাংলা একাডেমিতে মির্জা ফখরুলের মন্তব্য!

- আপডেট সময় ১২:৩৮:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
- / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশে কেউ মন্ত্রী হওয়ার পরপরই তার মানসিকতায় পরিবর্তন আসে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, “আমাদের এখানে যে-ই মন্ত্রী হয়ে যায়, সে একেবারে ভিন্ন জগতে চলে যায়। তার জন্য স্যালুট, বাঁশি, সামনে-পেছনে প্রটোকলের গাড়ি—এই যে মানসিকতা তৈরি হয়, সেটাই ধীরে ধীরে একজন মানুষকে স্বৈরশাসকের পথে ঠেলে দেয়।” এই ধরণের মনোভাব থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করার আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ‘সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনালস-২০২৫’ প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। আয়োজক ছিল ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি এবং দ্য বাংলাদেশ ডায়ালগ।
বর্তমান সময় সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, “সময়টা খুব ভালো যাচ্ছে না। অনেকেই হতাশ, অনেকেই নানা ধরনের কথা বলছেন। তবে আমি সবসময় আশাবাদী। বয়স বাড়লেও আমি বিশ্বাস করি, সামনে আরও ভালো সময় আসবে।”
তিনি বলেন, বর্তমানে প্রজন্মের মধ্যে একটি বড় দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তরুণদের বুঝতে সময় লাগে, আবার আমাদেরও তরুণদের বুঝতে সময় লাগে। এই বোঝাপড়ার অভাব থেকেই অনেক রাজনৈতিক সমস্যার জন্ম হয় বলে মনে করেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, “তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে আমাদের পরিচয় খুব কম। তাদের চিন্তাধারা, মূল্যবোধ—সবকিছুই আমাদের চেয়ে আলাদা। আবার ঢাকার চিন্তাভাবনা যেমন একরকম, ঠাকুরগাঁওয়ের চিন্তা তেমন নয়। এই দূরত্ব দূর করতে না পারলে আমরা যে শক্তি তৈরি করতে চাই, যারা ভবিষ্যতে দেশকে বদলে দেবে, সেই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না।”
তরুণদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমাদের তরুণেরা অনেক বেশি মেধাবী ও যোগ্য হয়ে উঠছে। ভবিষ্যতে তারা দেশ পরিচালনায় বড় ভূমিকা রাখবে। তবে মতের অমিল থাকবে, বিতর্ক থাকবে—এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আমরা লিবারেল ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করি। আমি যেমন নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা চাই, তেমনি অন্যদেরও সেই অধিকার থাকা উচিত।”
বক্তব্যের একপর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ব্যবহৃত কিছু শব্দ নিয়ে নিজের আপত্তির কথা জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “আমার একটা আপত্তি আছে। ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’ কিংবা ‘মাননীয় স্পিকার’ শব্দগুলো আমরা কি বাদ দিতে পারি না? আমার কেন যেন মনে হয়, এই ‘মাননীয়’ শব্দ থেকেই একনায়কতন্ত্রের জন্ম হয়।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক একেএম ইলিয়াস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, আইনজীবী রাশনা ইমাম, অ্যাডকম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিম ফারহান চৌধুরী, বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু, ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি শাহাদাত হোসেন, সংগঠনের প্রধান মডারেটর অধ্যাপক আকতারুজ্জামান এবং দ্য বাংলাদেশ ডায়ালগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবায়েত মান্নান রাফি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন টিবিডির পরিচালক সাইফ রুবাব।