ঢাকা ১১:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

    যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনায় অনিশ্চয়তা, হুমকিতে বাংলাদেশি রপ্তানি

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০১:০৪:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
    • / ২৫৬ বার পড়া হয়েছে

    যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের মধ্যে চলছে টানাপোড়েনপূর্ণ আলোচনা। মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে আনার চেষ্টা। তবে গত ৯ জুলাই শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এই বৈঠকের পর এখনও আসেনি আশাব্যঞ্জক কোনো বার্তা। সরকারের নীতিনির্ধারকরাও বিষয়টি নিয়ে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না।

    জুলাই মাসজুড়ে আলোচনার এই প্রক্রিয়া চলবে বলে জানা গেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা এবং বাংলাদেশের সক্ষমতার মধ্যে যে ব্যবধান রয়েছে, তা পূরণ করা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। দুদেশের মধ্যে শুল্ক ইস্যুকে ঘিরে যেন এক ধরনের ধোঁয়াশা বিরাজ করছে।

    উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। পরে সেটি সামান্য কমিয়ে ৩৫ শতাংশে আনা হয়। এই বাড়তি শুল্কের সঙ্গে বর্তমানে কার্যকর ১৫ শতাংশ শুল্ক যোগ হয়ে মোট ৫০ শতাংশ হয়ে দাঁড়াবে। ব্যতিক্রম কোনো সিদ্ধান্ত না এলে আগামী আগস্ট থেকে এই উচ্চ শুল্কহারেই যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করতে হবে।

    এ নিয়ে গার্মেন্টস বায়িং অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি এ কে এম সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, আগস্ট থেকে বাড়তি শুল্ক কার্যকর হলে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত ভয়াবহ ধাক্কার মুখে পড়বে। ইতিমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বেশ কয়েকটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান তাদের পূর্বনির্ধারিত ক্রয়াদেশ স্থগিত করেছে।

    বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিআর থেকে প্রাপ্ত প্রথম চিঠিটি ছিল ইতিবাচক। কিন্তু দ্বিতীয় চিঠিটি এখন পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। যদি ৩৫ শতাংশ বাড়তি শুল্কই আরোপ হয়, তবে সেটি বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল চাপ হয়ে দাঁড়াবে।

    গত অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। এতে মার্কিন বাজারকে সম্ভাবনাময় বড় বাজার হিসেবে দেখা হচ্ছিল। কিন্তু এই শুল্ক পরিস্থিতি রপ্তানি প্রবৃদ্ধিকে থামিয়ে দিতে পারে। এদিকে আলোচনার প্রস্তুতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন।

    তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনায় যে ধরনের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ এবং মার্কিন বাজারের অভিজ্ঞদের থাকা প্রয়োজন ছিল, তা নিশ্চিত করা হয়নি। এমনকি যেসব উদ্যোক্তা মার্কিন বাজারে নিয়মিত ব্যবসা করেন কিংবা যারা ওই বাজার নিয়ে গবেষণা করেন, তাদের কাছ থেকেও কোনো পরামর্শ নেওয়া হয়নি।

    সব মিলিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। শুল্ক ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারলে দেশের রপ্তানি খাত এক বড় সংকটের মুখোমুখি হতে পারে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনায় অনিশ্চয়তা, হুমকিতে বাংলাদেশি রপ্তানি

    আপডেট সময় ০১:০৪:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

    যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের মধ্যে চলছে টানাপোড়েনপূর্ণ আলোচনা। মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে আনার চেষ্টা। তবে গত ৯ জুলাই শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এই বৈঠকের পর এখনও আসেনি আশাব্যঞ্জক কোনো বার্তা। সরকারের নীতিনির্ধারকরাও বিষয়টি নিয়ে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না।

    জুলাই মাসজুড়ে আলোচনার এই প্রক্রিয়া চলবে বলে জানা গেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা এবং বাংলাদেশের সক্ষমতার মধ্যে যে ব্যবধান রয়েছে, তা পূরণ করা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। দুদেশের মধ্যে শুল্ক ইস্যুকে ঘিরে যেন এক ধরনের ধোঁয়াশা বিরাজ করছে।

    উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। পরে সেটি সামান্য কমিয়ে ৩৫ শতাংশে আনা হয়। এই বাড়তি শুল্কের সঙ্গে বর্তমানে কার্যকর ১৫ শতাংশ শুল্ক যোগ হয়ে মোট ৫০ শতাংশ হয়ে দাঁড়াবে। ব্যতিক্রম কোনো সিদ্ধান্ত না এলে আগামী আগস্ট থেকে এই উচ্চ শুল্কহারেই যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করতে হবে।

    এ নিয়ে গার্মেন্টস বায়িং অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি এ কে এম সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, আগস্ট থেকে বাড়তি শুল্ক কার্যকর হলে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত ভয়াবহ ধাক্কার মুখে পড়বে। ইতিমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বেশ কয়েকটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান তাদের পূর্বনির্ধারিত ক্রয়াদেশ স্থগিত করেছে।

    বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিআর থেকে প্রাপ্ত প্রথম চিঠিটি ছিল ইতিবাচক। কিন্তু দ্বিতীয় চিঠিটি এখন পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। যদি ৩৫ শতাংশ বাড়তি শুল্কই আরোপ হয়, তবে সেটি বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল চাপ হয়ে দাঁড়াবে।

    গত অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। এতে মার্কিন বাজারকে সম্ভাবনাময় বড় বাজার হিসেবে দেখা হচ্ছিল। কিন্তু এই শুল্ক পরিস্থিতি রপ্তানি প্রবৃদ্ধিকে থামিয়ে দিতে পারে। এদিকে আলোচনার প্রস্তুতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন।

    তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনায় যে ধরনের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ এবং মার্কিন বাজারের অভিজ্ঞদের থাকা প্রয়োজন ছিল, তা নিশ্চিত করা হয়নি। এমনকি যেসব উদ্যোক্তা মার্কিন বাজারে নিয়মিত ব্যবসা করেন কিংবা যারা ওই বাজার নিয়ে গবেষণা করেন, তাদের কাছ থেকেও কোনো পরামর্শ নেওয়া হয়নি।

    সব মিলিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। শুল্ক ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারলে দেশের রপ্তানি খাত এক বড় সংকটের মুখোমুখি হতে পারে।