রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের পর নেপালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

- আপডেট সময় ১১:৩৯:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৬০ বার পড়া হয়েছে
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে তরুণ প্রজন্মের ব্যাপক বিক্ষোভ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হওয়ার পর অবশেষে ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা। খবর বিবিসির।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে নেপালের যোগাযোগ, তথ্য ও সম্প্রচারবিষয়ক মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং এক ঘোষণায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “সরকার তরুণ প্রজন্ম তথা জেন জি-দের দাবি মেনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন আমাদের অনুরোধ— আপনারা শান্ত হোন এবং বাড়ি ফিরে যান।”
মন্ত্রী আরও জানান, সোমবারের সহিংস ঘটনার তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর নেপালের সুপ্রিম কোর্ট সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকার গত ২৮ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধনের সময়সীমা বেঁধে দেয়। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষ হলেও ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ কোনো প্ল্যাটফর্ম নিবন্ধন না করায় ৪ সেপ্টেম্বর থেকে এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে সরকার।
এই নিষেধাজ্ঞা দেশটির শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। জেন জি প্রজন্ম নামে পরিচিত তারা ৪ সেপ্টেম্বর থেকেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয় এবং রবিবার থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। সোমবার তা ভয়াবহ রূপ নেয়। কারফিউ অমান্য করে হাজার হাজার মানুষ রাজধানীর রাস্তায় নেমে আসেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হন অন্তত ১৯ জন, আহত হন শতাধিক।
বিক্ষোভে মূল দাবি ছিল নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, তবে আন্দোলন দ্রুতই সরকারবিরোধী রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীদের চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। এমনকি প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির পদত্যাগের দাবিও ওঠে।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রী অলি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) জানিয়েছে তারা কখনও নেপালে নিবন্ধন করবে না। তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রায় দেড় বছর ধরে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে নিবন্ধনের আহ্বান জানিয়ে আসছি। আমরা কেবল তাদের নেপালের আইন মেনে চলতে বলেছিলাম, কারণ এটি সরাসরি জাতীয় সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত।”