কিশোর গ্যাংয়ের দ্বন্দ্বে কলেজছাত্র খুন-পাইথন গ্রুপের হামলায় নিহত ওয়াহিদুল

- আপডেট সময় ০১:২৪:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
- / ২৬২ বার পড়া হয়েছে
চট্টগ্রামের হালিশহরে দুই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যকার দ্বন্দ্বে কলেজছাত্র ওয়াহিদুল হক ওরফে সাব্বির (১৮) খুন হয়েছেন। ‘পাইথন’ নামের একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওয়াহিদুলের ওপর হামলাকারীদের সবার বয়স ১৬ থেকে ২২ বছরের মধ্যে।
গত ১৬ মে হালিশহরের নয়াবাজার এলাকায় ওয়াহিদুলের ওপর এই হামলা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ছয় দিন পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালে তার মৃত্যু হয়। ওয়াহিদুল নগরের মুরাদপুর এলাকার শ্যামলী আইডিয়াল টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
ওয়াহিদুল হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, এটি ছিল এক কিশোরকে মারধরের প্রতিশোধ। নিহত ওয়াহিদুল নিজেও ‘বিংগু গ্রুপ’ নামে একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ছিলেন। ওয়াহিদুলের ওপর হামলার ঘটনায় চারটি অটোরিকশায় করে আসা ‘পাইথন’ গ্যাংয়ের ২২ জন সদস্য অংশ নেয়। এই গ্যাংয়ের নেতা মো. আতাউল (২২) ওয়াহিদুলের পেটে ছুরিকাঘাত করেন।
হালিশহর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) স্বপন কুমার সরকার জানান, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আতাউলের ছুরিকাঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আতাউল নিজেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন। তিনি পুলিশকে বলেছেন, ‘বেশি সময় লাগেনি, ৮-১০ সেকেন্ডে কাজ সেরেছি।’
হত্যাকাণ্ডের পর ওয়াহিদুলের বাবা মোহাম্মদ এসহাক বাদী হয়ে হালিশহর থানায় মামলা করেন। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে অভিযুক্ত আতাউলকে গত বৃহস্পতিবার রাতে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত বছরের মার্চে নগর পুলিশের একটি জরিপে জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরে প্রায় ২০০টি সক্রিয় কিশোর গ্যাং রয়েছে, যার সদস্য সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন। গত ছয় বছরে ৫৪৮টি অপরাধের ঘটনায় কিশোর গ্যাং জড়িত ছিল। এই গ্যাংগুলোকে প্রশ্রয় ও পৃষ্ঠপোষকতা দেয় ৬৪ জন ‘বড় ভাই’।
জরিপ অনুযায়ী, স্কুল থেকে অনুপস্থিত থাকা ৫৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর অধিকাংশই অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এসব শিক্ষার্থী পর্নোগ্রাফি, সাইবার অপরাধ, ছিনতাই, চুরি, মাদক কেনাবেচা এবং অনলাইন জুয়ার মতো অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে, বিশেষত স্কুলের সময়ে। এটি নগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও সামাজিক অস্থিরতার অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।