ঢাকা ০৩:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

    ঘোড়ার শোকে বিদায় নিলেন ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ মনু মিয়া!

    জেলা প্রতিনিধি
    • আপডেট সময় ০১:৪১:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
    • / ২৫৬ বার পড়া হয়েছে

    একজন নিঃস্বার্থ মানুষ বিদায় নিলেন আজ। যিনি কিশোরগঞ্জের আলগাপাড়া গ্রামে হাজারো মানুষের শেষ যাত্রার সঙ্গী ছিলেন। তিনি মো. মনু মিয়া, যিনি ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে পরিচিত। প্রিয় ঘোড়ার শোকে ভেঙে পড়া এই মানুষটি আর আমাদের মাঝে নেই।

    কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামে শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টায় নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মো. মনু মিয়া (৬৭)। জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বাহাউদ্দিন ঠাকুর তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

    মনু মিয়ার মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা বলছেন, তিনি শুধু একজন কবর খননকারী ছিলেন না, তিনি ছিলেন মানবিকতার প্রতীক।

    মনু মিয়া প্রায় ৪৯ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে তিন হাজারেরও বেশি মানুষের কবর খুঁড়েছেন। আশপাশের গ্রাম থেকে শুরু করে পুরো জেলায় তিনি ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর প্রিয় ঘোড়ার পিঠে চড়ে তিনি ছুটে যেতেন মৃতের বাড়িতে।

    এই কাজের জন্য তিনি একসময় নিজের দোকান বিক্রি করে ঘোড়াটি কিনেছিলেন। তিনি কখনো কোনো পারিশ্রমিক নেননি, শুধু বলতেন, “আমি এই কাজ করি আল্লাহকে খুশি করতে।”

    কিছুদিন আগে মনু মিয়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এই সময় দুর্বৃত্তরা তাঁর বহু বছরের সঙ্গী, প্রিয় ঘোড়াটিকে হত্যা করে। এই ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।

    মনু মিয়ার জীবন ছিল নিঃস্বার্থ সেবার উদাহরণ। তিনি কিশোরগঞ্জের আলগাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং জীবনের অর্ধশত বছর কাটিয়েছেন কবর খননের কাজে। তাঁর এই কাজ শুধু স্থানীয় গ্রামেই সীমাবদ্ধ ছিল না, পুরো জেলায় তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল। তিনি কখনো ধর্ম বা জাতপাতের ভেদাভেদ করেননি।

     

     

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ঘোড়ার শোকে বিদায় নিলেন ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ মনু মিয়া!

    আপডেট সময় ০১:৪১:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

    একজন নিঃস্বার্থ মানুষ বিদায় নিলেন আজ। যিনি কিশোরগঞ্জের আলগাপাড়া গ্রামে হাজারো মানুষের শেষ যাত্রার সঙ্গী ছিলেন। তিনি মো. মনু মিয়া, যিনি ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে পরিচিত। প্রিয় ঘোড়ার শোকে ভেঙে পড়া এই মানুষটি আর আমাদের মাঝে নেই।

    কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামে শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টায় নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মো. মনু মিয়া (৬৭)। জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বাহাউদ্দিন ঠাকুর তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

    মনু মিয়ার মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা বলছেন, তিনি শুধু একজন কবর খননকারী ছিলেন না, তিনি ছিলেন মানবিকতার প্রতীক।

    মনু মিয়া প্রায় ৪৯ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে তিন হাজারেরও বেশি মানুষের কবর খুঁড়েছেন। আশপাশের গ্রাম থেকে শুরু করে পুরো জেলায় তিনি ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর প্রিয় ঘোড়ার পিঠে চড়ে তিনি ছুটে যেতেন মৃতের বাড়িতে।

    এই কাজের জন্য তিনি একসময় নিজের দোকান বিক্রি করে ঘোড়াটি কিনেছিলেন। তিনি কখনো কোনো পারিশ্রমিক নেননি, শুধু বলতেন, “আমি এই কাজ করি আল্লাহকে খুশি করতে।”

    কিছুদিন আগে মনু মিয়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এই সময় দুর্বৃত্তরা তাঁর বহু বছরের সঙ্গী, প্রিয় ঘোড়াটিকে হত্যা করে। এই ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।

    মনু মিয়ার জীবন ছিল নিঃস্বার্থ সেবার উদাহরণ। তিনি কিশোরগঞ্জের আলগাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং জীবনের অর্ধশত বছর কাটিয়েছেন কবর খননের কাজে। তাঁর এই কাজ শুধু স্থানীয় গ্রামেই সীমাবদ্ধ ছিল না, পুরো জেলায় তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল। তিনি কখনো ধর্ম বা জাতপাতের ভেদাভেদ করেননি।