ঢাকা ০৯:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

    জুলাই সনদ-আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৩:২৮:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৬২ বার পড়া হয়েছে

    ঐতিহাসিক জুলাই জাতীয় সনদের পূর্ণাঙ্গ খসড়ার ওপর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ ২৩টি রাজনৈতিক দল ও জোট তাদের মতামত জানিয়েছে। দলগুলোর মধ্যে সনদটির আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত দেখা গেছে।

    বিএনপি গত বুধবার মতামতে জানায়, জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দেওয়া যাবে না এবং সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ বন্ধ করা হলে নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন হবে। অন্যদিকে, পরদিন বৃহস্পতিবার জামায়াত জানায় যে, সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দিতে হবে এবং সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ বন্ধ করার পক্ষে তারা সমর্থন দিয়েছে।

    অন্যদিকে, এনসিপি বিএনপি’র মতামতের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেছে, সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, যেহেতু সংবিধান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন, তাই জুলাই সনদ হবে সংবিধানের ‘গাইডিং প্রিন্সিপাল’ বা অনুসরণীয় মূলনীতি। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, কোনো ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না—এই বিষয়টি সংবিধানে এমনভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যেন ভবিষ্যতে কোনো সরকার এই বিধান পরিবর্তন করতে না পারে।

    এনসিপি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণপরিষদ গঠনের দাবি জানিয়েছে। জাবেদ রাসিন বলেন, যেসব সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো আগামী গণপরিষদ নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন করতে হবে। আর যেগুলোতে আপত্তি রয়েছে, সেগুলো গণপরিষদে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

    এর মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন হবে গণপরিষদ নির্বাচনের তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে। তিনি আরও বলেন, সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ বন্ধ করার পক্ষে এনসিপি সমর্থন করে, কারণ তাদের মতে, এই ধরনের প্রশ্ন কেবল আওয়ামী লীগই তুলবে।

    খসড়া সনদে দুই দফা সংলাপে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দফায় ৬২টি সুপারিশে অধিকাংশ দলের ঐকমত্য হয়েছে। দ্বিতীয় দফার ২২টি সুপারিশের মধ্যে ১১টিতে ঐকমত্য হয়েছে। বাকি ৯টি সুপারিশে বিএনপির আপত্তি রয়েছে, যার মধ্যে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে ১০০ আসনের উচ্চকক্ষ গঠন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন ও নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক কমিটি গঠনের মতো প্রস্তাব রয়েছে। জামায়াত, এনসিপিসহ অন্য দুটি দলও আরও দুটি সংস্কারের বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছে।

    এদিকে, চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন এখন পর্যন্ত সনদে মতামত জানায়নি। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলী আশরাফ আকন বলেছেন, তারা তাদের পর্যবেক্ষণ কমিশনকে জানিয়েছেন এবং অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করে পরে মতামত জানাবেন।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    জুলাই সনদ-আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত

    আপডেট সময় ০৩:২৮:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

    ঐতিহাসিক জুলাই জাতীয় সনদের পূর্ণাঙ্গ খসড়ার ওপর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ ২৩টি রাজনৈতিক দল ও জোট তাদের মতামত জানিয়েছে। দলগুলোর মধ্যে সনদটির আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত দেখা গেছে।

    বিএনপি গত বুধবার মতামতে জানায়, জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দেওয়া যাবে না এবং সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ বন্ধ করা হলে নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন হবে। অন্যদিকে, পরদিন বৃহস্পতিবার জামায়াত জানায় যে, সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দিতে হবে এবং সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ বন্ধ করার পক্ষে তারা সমর্থন দিয়েছে।

    অন্যদিকে, এনসিপি বিএনপি’র মতামতের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেছে, সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, যেহেতু সংবিধান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন, তাই জুলাই সনদ হবে সংবিধানের ‘গাইডিং প্রিন্সিপাল’ বা অনুসরণীয় মূলনীতি। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, কোনো ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না—এই বিষয়টি সংবিধানে এমনভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যেন ভবিষ্যতে কোনো সরকার এই বিধান পরিবর্তন করতে না পারে।

    এনসিপি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণপরিষদ গঠনের দাবি জানিয়েছে। জাবেদ রাসিন বলেন, যেসব সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো আগামী গণপরিষদ নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন করতে হবে। আর যেগুলোতে আপত্তি রয়েছে, সেগুলো গণপরিষদে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

    এর মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন হবে গণপরিষদ নির্বাচনের তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে। তিনি আরও বলেন, সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ বন্ধ করার পক্ষে এনসিপি সমর্থন করে, কারণ তাদের মতে, এই ধরনের প্রশ্ন কেবল আওয়ামী লীগই তুলবে।

    খসড়া সনদে দুই দফা সংলাপে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দফায় ৬২টি সুপারিশে অধিকাংশ দলের ঐকমত্য হয়েছে। দ্বিতীয় দফার ২২টি সুপারিশের মধ্যে ১১টিতে ঐকমত্য হয়েছে। বাকি ৯টি সুপারিশে বিএনপির আপত্তি রয়েছে, যার মধ্যে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে ১০০ আসনের উচ্চকক্ষ গঠন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন ও নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক কমিটি গঠনের মতো প্রস্তাব রয়েছে। জামায়াত, এনসিপিসহ অন্য দুটি দলও আরও দুটি সংস্কারের বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছে।

    এদিকে, চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন এখন পর্যন্ত সনদে মতামত জানায়নি। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলী আশরাফ আকন বলেছেন, তারা তাদের পর্যবেক্ষণ কমিশনকে জানিয়েছেন এবং অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করে পরে মতামত জানাবেন।