ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে পাঁচ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত: দাবি ট্রাম্পের, বিতর্কে নয়াদিল্লি

- আপডেট সময় ০৩:০২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
- / ২৬৪ বার পড়া হয়েছে
সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সংঘাতে অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে নৈশভোজে এ তথ্য জানান তিনি। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে কাশ্মীরের একটি প্রাণঘাতী বন্দুকধারীর হামলার পর শুরু হয় এই উত্তেজনা, যা পরে সামরিক সংঘর্ষে রূপ নেয় এবং মে মাসে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে পরিস্থিতির অবসান ঘটে।
ট্রাম্প দাবি করেন, ওই সংঘাতের সময় আকাশে গুলি করে প্রায় পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়। যদিও তিনি স্পষ্ট করে বলেননি, কোন পক্ষের বিমান ভূপাতিত হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, “প্রকৃতপক্ষে বিমানগুলোকে আকাশ থেকে গুলি করে নামানো হচ্ছিল। চার বা পাঁচটা… তবে আমার মনে হয়, পাঁচটা যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছিল।” তিনি আরও দাবি করেন, এই যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
পাকিস্তান ইতিপূর্বে দাবি করেছিল, সংঘাতের সময় তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে। আর ভারত দাবি করেছে, তারা পাকিস্তানের কয়েকটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে ইসলামাবাদ বিমান হারানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছে, যদিও ভারতের হামলায় তাদের কয়েকটি বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে স্বীকার করেছে।
এ বিষয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল বেশ কড়া। নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে বলা হয়, যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের কোনো ভূমিকা নেই। বরং এটি ছিল দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার ফল। ভারত বরাবরই বলে আসছে, পাকিস্তানের সঙ্গে যেকোনো দ্বিপক্ষীয় সমস্যা তারা বাইরের হস্তক্ষেপ ছাড়াই সমাধান করতে চায়।
এই উত্তেজনার পেছনে মূল সূত্রপাত ঘটে এপ্রিল মাসে, যখন ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত ওই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে। তবে পাকিস্তান দায় অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়। এ ঘটনার পর ভারতীয় বিমান বাহিনী ৭ মে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে কথিত সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। এরপর শুরু হয় পাল্টাপাল্টি বিমান হামলা, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, কামান দাগা ও ড্রোন আক্রমণ। এতে উভয় পক্ষের একাধিক সামরিক এবং বেসামরিক প্রাণহানি ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষকদের মতে, এশিয়ায় চীনের প্রভাব রুখতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে কৌশলগতভাবে কাছে টানছে। একসময়কার ঘনিষ্ঠ মিত্র পাকিস্তানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক কিছুটা শীতল হলেও, এই সংঘাতের সময় ওয়াশিংটন প্রকাশ্যে কোনো পক্ষ নেয়নি। কেবল উভয় পক্ষকে সংযত থাকতে বলেছে।
এই ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে চলমান বৈরিতার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত। সংঘাতের সমাপ্তি এলেও আঞ্চলিক উত্তেজনা এখনও পুরোপুরি প্রশমিত হয়নি।