ঢাকা ১১:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    ভোলায় মাওলানা আমিনুল হক নোমানী হত্যার ঘটনায় উত্তাল জনতা

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৭:৩৯:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
    • / ২৬০ বার পড়া হয়েছে

    ভোলায় মাওলানা আমিনুল হক নোমানী (৪৫) হত্যার ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে স্থানীয় জনতা। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ভোলা জেলা ব্লকেডের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

    রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নোমানীর জানাজার আগে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে গঠিত কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোলার সব স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা বন্ধ রাখা, সকাল ১১টায় তৌহিদী জনতার ব্যানারে সমাবেশ ও শোক র‍্যালি এবং জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান।

    জানাজায় ইমামতি করেন প্রবীণ আলেম মাওলানা রুহুল আমিন। পরে চরনোয়াবাদ এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে নোমানীকে দাফন করা হয়। জানাজায় নিহতের পরিবারের সদস্য, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। সেখানে বক্তারা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং হত্যার তীব্র নিন্দা জানান।

    বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, মাওলানা নোমানীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রশাসনকে আগেই ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সময় পার হলেও এখনো কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা দাবি করেন, এ হত্যাকাণ্ড একটি পরিকল্পিত চক্রান্ত, যার মাধ্যমে ইসলামী নেতৃত্বকে শূন্য করার চেষ্টা চলছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় না আনা হলে ভোলা জেলা ব্লকেড করার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

    পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানানো হয়। বক্তারা অভিযোগ করেন, ভোলায় অতীতের হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচার না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা আবারও ঘটছে। তারা স্পষ্ট করে বলেন, আর কোনো নিরীহ মানুষ বা আলেম-ওলামাকে হত্যার শিকার হতে দেওয়া হবে না।

    ঘটনার দিন শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার চরনোয়াবাদ-সংলগ্ন বাপ্তা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরানী পাড়ায় নিজ বাড়িতে একা থাকা অবস্থায় নোমানীর ওপর হামলা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

    মাওলানা আমিনুল হক নোমানী ভোলা সদর উপজেলা জামে মসজিদের খতিব, ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস এবং ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের জেলা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

    এদিকে, দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ভোলা সদর মডেল থানার ওসি আবু শাহাদাত মো. হাচনাইন পারভেজ সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি জানার পরপরই তদন্ত শুরু হয়েছে। ডিবিসহ পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি, তবে নিহতের পরিবার দাফন শেষে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, হত্যায় ব্যবহৃত কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে এবং তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ভোলায় মাওলানা আমিনুল হক নোমানী হত্যার ঘটনায় উত্তাল জনতা

    আপডেট সময় ০৭:৩৯:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    ভোলায় মাওলানা আমিনুল হক নোমানী (৪৫) হত্যার ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে স্থানীয় জনতা। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ভোলা জেলা ব্লকেডের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

    রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নোমানীর জানাজার আগে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে গঠিত কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোলার সব স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা বন্ধ রাখা, সকাল ১১টায় তৌহিদী জনতার ব্যানারে সমাবেশ ও শোক র‍্যালি এবং জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান।

    জানাজায় ইমামতি করেন প্রবীণ আলেম মাওলানা রুহুল আমিন। পরে চরনোয়াবাদ এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে নোমানীকে দাফন করা হয়। জানাজায় নিহতের পরিবারের সদস্য, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। সেখানে বক্তারা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং হত্যার তীব্র নিন্দা জানান।

    বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, মাওলানা নোমানীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রশাসনকে আগেই ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সময় পার হলেও এখনো কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা দাবি করেন, এ হত্যাকাণ্ড একটি পরিকল্পিত চক্রান্ত, যার মাধ্যমে ইসলামী নেতৃত্বকে শূন্য করার চেষ্টা চলছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় না আনা হলে ভোলা জেলা ব্লকেড করার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

    পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানানো হয়। বক্তারা অভিযোগ করেন, ভোলায় অতীতের হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচার না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা আবারও ঘটছে। তারা স্পষ্ট করে বলেন, আর কোনো নিরীহ মানুষ বা আলেম-ওলামাকে হত্যার শিকার হতে দেওয়া হবে না।

    ঘটনার দিন শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার চরনোয়াবাদ-সংলগ্ন বাপ্তা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরানী পাড়ায় নিজ বাড়িতে একা থাকা অবস্থায় নোমানীর ওপর হামলা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

    মাওলানা আমিনুল হক নোমানী ভোলা সদর উপজেলা জামে মসজিদের খতিব, ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস এবং ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের জেলা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

    এদিকে, দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ভোলা সদর মডেল থানার ওসি আবু শাহাদাত মো. হাচনাইন পারভেজ সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি জানার পরপরই তদন্ত শুরু হয়েছে। ডিবিসহ পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি, তবে নিহতের পরিবার দাফন শেষে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, হত্যায় ব্যবহৃত কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে এবং তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।