ঢাকা ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫

    অদম্য মারুফার গল্প: ভালো ড্রেস না থাকায় দাওয়াত পেতাম না

    Jesmin Sultana Mala
    • আপডেট সময় ০৫:০৮:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
    • / ২৭২ বার পড়া হয়েছে

    চলমান নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের তরুণ পেসার মারুফা আক্তার ছড়াচ্ছেন আলো।

    তাঁর দ্রুতগতির বোলিং আর নিখুঁত সুইংয়ে দিশেহারা বিশ্বের নামী ব্যাটাররা।

    ক্রিকেট কিংবদন্তি লাসিথ মালিঙ্গা থেকে শুরু করে বিশ্লেষক নাসের হোসেন— সবাই এখন প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন এই তরুণীকে।

    অনেকে বলছেন, বাংলাদেশের নারী পেস বোলিংয়ের পরবর্তী কাণ্ডারি হতে পারেন তিনিই— জাহানারা আলমের উত্তরসূরি হিসেবে।

    কিন্তু এই আলোয় ভরা পথের শুরুটা একদমই সহজ ছিল না মারুফার।

    একসময় নীলফামারীর সৈয়দপুরে বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে লাঙল ধরেছিলেন তিনি।

    কর্দমাক্ত জমিতে খালি পায়ে লাঙল টানার সেই দৃশ্য আজও অনেকের চোখে ভাসে।

    দারিদ্র্য, কটু কথা আর সামাজিক অবজ্ঞা— কিছুই দমাতে পারেনি এই মেয়েটিকে।

    ছয় সদস্যের পরিবারে অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী।

    নিজেদের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে বর্গা চাষ করতেন মারুফার বাবা।

    তাঁর কাজেও সাহায্য করতেন ছোট্ট মারুফা।

    ভালো জামা না থাকায়, সমাজের অনুষ্ঠানে ডাক পেতেন না তাঁরা।

    এক সাক্ষাৎকারে নিজের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে আবেগে ভেসে যান মারুফা আক্তার।

    চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি তিনি।

    মারুফা বলেন, কোথাও যদি বিয়ে বা কোনো অনুষ্ঠান হয়, আমাদের দাওয়াত দিতো না।

    লতো, ওদের ড্রেস নাই, গেলে মান-সম্মান থাকবে না।

    একটা সময় ছিল যখন ঈদেও নতুন জামা কিনতে পারিনি।

    অভাবের তীব্রতা আর মানুষের কটু কথার মাঝেও থেমে থাকেননি তিনি।

    মারুফা আরো বলেন,আমার বাবা কৃষক ছিলেন।

    টাকা পয়সা ছিল না।

    মানুষ মাকে কষ্ট দিতো, খারাপ কথা বলতো।

    মা কাঁদতো, আমিও কাঁদতাম। ভাবতাম— একদিন কিছু করে দেখাব।

    আর সেই ভাবনা আজ সত্যি আজ তিনি বাংলাদেশের গর্ব, টাইগ্রেসদের আক্রমণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।

    তাঁর প্রতিটি উইকেটে উল্লাসে মেতে ওঠে গোটা দেশ।

    নিজের সাফল্যে আজ অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন হাজারো মেয়ের কাছে।

    যে মেয়েটি একসময় জমিতে লাঙল ধরেছিল, আজ সেই হাতেই ধরা ক্রিকেট বল— আর সেই বলেই পরাজিত হচ্ছে বিশ্বের সেরা ব্যাটাররা।

    অদম্য ইচ্ছাশক্তি, পরিশ্রম আর বিশ্বাস— এই তিনেই তৈরি হয়েছে এক মারুফা আক্তার।

    বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটে তিনি এখন এক নতুন অধ্যায়ের প্রতীক।

    ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বার্তা যত বাধাই আসুক, স্বপ্নকে থামানো যায় না।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    অদম্য মারুফার গল্প: ভালো ড্রেস না থাকায় দাওয়াত পেতাম না

    আপডেট সময় ০৫:০৮:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

    চলমান নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের তরুণ পেসার মারুফা আক্তার ছড়াচ্ছেন আলো।

    তাঁর দ্রুতগতির বোলিং আর নিখুঁত সুইংয়ে দিশেহারা বিশ্বের নামী ব্যাটাররা।

    ক্রিকেট কিংবদন্তি লাসিথ মালিঙ্গা থেকে শুরু করে বিশ্লেষক নাসের হোসেন— সবাই এখন প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন এই তরুণীকে।

    অনেকে বলছেন, বাংলাদেশের নারী পেস বোলিংয়ের পরবর্তী কাণ্ডারি হতে পারেন তিনিই— জাহানারা আলমের উত্তরসূরি হিসেবে।

    কিন্তু এই আলোয় ভরা পথের শুরুটা একদমই সহজ ছিল না মারুফার।

    একসময় নীলফামারীর সৈয়দপুরে বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে লাঙল ধরেছিলেন তিনি।

    কর্দমাক্ত জমিতে খালি পায়ে লাঙল টানার সেই দৃশ্য আজও অনেকের চোখে ভাসে।

    দারিদ্র্য, কটু কথা আর সামাজিক অবজ্ঞা— কিছুই দমাতে পারেনি এই মেয়েটিকে।

    ছয় সদস্যের পরিবারে অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী।

    নিজেদের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে বর্গা চাষ করতেন মারুফার বাবা।

    তাঁর কাজেও সাহায্য করতেন ছোট্ট মারুফা।

    ভালো জামা না থাকায়, সমাজের অনুষ্ঠানে ডাক পেতেন না তাঁরা।

    এক সাক্ষাৎকারে নিজের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে আবেগে ভেসে যান মারুফা আক্তার।

    চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি তিনি।

    মারুফা বলেন, কোথাও যদি বিয়ে বা কোনো অনুষ্ঠান হয়, আমাদের দাওয়াত দিতো না।

    লতো, ওদের ড্রেস নাই, গেলে মান-সম্মান থাকবে না।

    একটা সময় ছিল যখন ঈদেও নতুন জামা কিনতে পারিনি।

    অভাবের তীব্রতা আর মানুষের কটু কথার মাঝেও থেমে থাকেননি তিনি।

    মারুফা আরো বলেন,আমার বাবা কৃষক ছিলেন।

    টাকা পয়সা ছিল না।

    মানুষ মাকে কষ্ট দিতো, খারাপ কথা বলতো।

    মা কাঁদতো, আমিও কাঁদতাম। ভাবতাম— একদিন কিছু করে দেখাব।

    আর সেই ভাবনা আজ সত্যি আজ তিনি বাংলাদেশের গর্ব, টাইগ্রেসদের আক্রমণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।

    তাঁর প্রতিটি উইকেটে উল্লাসে মেতে ওঠে গোটা দেশ।

    নিজের সাফল্যে আজ অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন হাজারো মেয়ের কাছে।

    যে মেয়েটি একসময় জমিতে লাঙল ধরেছিল, আজ সেই হাতেই ধরা ক্রিকেট বল— আর সেই বলেই পরাজিত হচ্ছে বিশ্বের সেরা ব্যাটাররা।

    অদম্য ইচ্ছাশক্তি, পরিশ্রম আর বিশ্বাস— এই তিনেই তৈরি হয়েছে এক মারুফা আক্তার।

    বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটে তিনি এখন এক নতুন অধ্যায়ের প্রতীক।

    ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বার্তা যত বাধাই আসুক, স্বপ্নকে থামানো যায় না।