এনবিআরের ১৭ কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক

- আপডেট সময় ০৮:০৪:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
- / ২৫২ বার পড়া হয়েছে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৭ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের বাইরে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পদক্ষেপ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। তিনি জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৬(১) ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭-এর ১৭ নং বিধির আলোকে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী তাদের সম্পদ ও দায়-দেনার হিসাব বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির সিদ্ধান্ত কমিশন গ্রহণ করেছে।
যে ১৭ কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী চাওয়া হয়েছে তারা হলেন— কর কমিশনার (কর অঞ্চল-৩) এম এম ফজলুল হক, কর আপিল ট্রাইব্যুনালের কমিশনার লোকমান আহমেদ, আয়কর গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার সাহেলা সিদ্দিক, অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. মামুন মিয়া, ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারিক রিকাবদার, যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা সাহরিন সুস্মিতা, কর অ্যাকাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মো. মোরশেদ উদ্দিন খান, কর অঞ্চল-৮-এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, কর অঞ্চল-১৬-এর উপকর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, রেলওয়ে কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট পূর্বাঞ্চলের কমিশনার কাজী মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন, কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু, এনবিআরের যুগ্ম কমিশনার মো. তারিক হাছান, এনবিআরের সিআইসির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, এনবিআরের সদস্য মো. লুৎফুল আজিম এবং সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম।
গত জুলাই মাসে এই ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল দুদক। সংস্থাটিতে জমা দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে করদাতাদের করের পরিমাণ ইচ্ছাকৃতভাবে কমিয়ে দেওয়া হয়, যাতে উভয় পক্ষই লাভবান হন। এভাবে রাষ্ট্র প্রতিবছর বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কর্মকর্তারা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকির মিথ্যা মামলা করে ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠান মালিকদের হয়রানি করেছেন। অন্যদিকে, অনেক করদাতা আগাম কর দিয়েছেন বা প্রকৃত করের চেয়ে বেশি টাকা পরিশোধ করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী হিসাব-নিকাশ শেষে বাড়তি টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও অভিযোগ রয়েছে, সেই টাকা ফেরত পেতে করদাতাদের আবারও কর্মকর্তাদের অর্ধেক পরিমাণ ঘুষ দিতে হয়েছে। ফলে কর ফেরতের প্রক্রিয়াতেও দুর্নীতির পথ সুগম হয়েছে।
দুদকের তথ্যানুসন্ধান থেকে জানা গেছে, এনবিআরের এই কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে শুল্ক, ভ্যাট এবং আয়কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে নিজেদেরও লাভবান হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা একাধিক স্টেশনে দায়িত্ব পালনকালে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এসব অনিয়মের তথ্য বিশ্লেষণ এবং অভিযোগ যাচাইয়ের পরই দুদক তাদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।