কারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, জানালেন অ্যাটর্নি জেনারেল

- আপডেট সময় ০৭:৩৪:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
- / ২৬২ বার পড়া হয়েছে
জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
শনিবার (৫ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) মিলনায়তনে “জুলাই আন্দোলনের চেতনা ও করণীয়” শীর্ষক ছায়া সংসদে এসব কথা বলেন তিনি। ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা যুক্তিতর্কে অংশ নেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। আইসিটি আইনে দলীয়ভাবে হলেও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিচার সম্ভব। যারা এই অপশক্তির সঙ্গে জড়িত, তাদেরও আইনের আওতায় আনার সুযোগ রয়েছে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তিনি বলেন, “জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না। প্রতিটি হত্যাকাণ্ড শেখ হাসিনার সম্মতি ছাড়া ঘটেনি। এই অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে, দেশের মালিক জনগণ। কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণকে উপেক্ষা করে টিকে থাকতে পারে না।
ছায়া সংসদের বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, উপসচিব রোকেয়া পারবীন জুই, উন্নয়ন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. এসএম মোর্শেদ, সাংবাদিক হাসান জাবেন এবং আহমেদ সারওয়ার ভূঁইয়া। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সারা দেশে মব সন্ত্রাস যে ঘটছে তা বিচার বিভাগের প্রতি অনাস্থা নয়, বরং এটি গত ১৭ বছরের জমে থাকা ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। এটি স্বজন হারানো, গুম, মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ। তবে এই রকম প্রতিক্রিয়া কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় এবং এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। তিনি নতুন সংবিধান রচনার প্রসঙ্গে বলেন, “নতুন সংবিধান লেখা সম্ভব, এতে কোনো বাধা নেই। তবে আমাদের ১৯৭২ সালের সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নির্মিত এবং এটি বিশ্বের অন্যতম সেরা সংবিধান। বিতর্কিত সংশোধনীগুলো বাদ দিয়ে একে আরও আধুনিক করা যেতে পারে।
আসন্ন নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উঠবে কি না—সে বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। তবে যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সত্তাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে, তারাও আইনের আওতায় পড়বে। জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আবু সাঈদ বা অন্যান্য শহীদরা কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলেন না। তারা স্বৈরাচারবিরোধী নাগরিক আন্দোলনের প্রতীক। জুলাই বিপ্লবের মূল চেতনা ছিল সুশাসন প্রতিষ্ঠা, যা এখনও আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট শক্তি যেন আবার মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে, সেজন্য সরকার ও জনগণকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।