ঢাকা ০৪:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    গঙ্গা চুক্তি নবায়ন, ৯ সেপ্টেম্বর বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ও ভারত

    ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
    • আপডেট সময় ১১:২৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
    • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

    ১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হতে যাচ্ছে। এটি নবায়নের জন্য উভয়পক্ষই প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৯ সেপ্টেম্বর দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) কর্মকর্তারা নয়াদিল্লিতে বৈঠকে বসছেন।

    যৌথ নদী কমিশনের নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী, এই বৈঠকে যোগ দিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জেআরসি সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেনের নেতৃত্বে একটি কারিগরি দল নয়াদিল্লি সফর করবে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং এখনো সেখানেই আছেন। বাংলাদেশের এই পট পরিবর্তনে ঢাকা-দিল্লি দুই দেশের সম্পর্ক কিছুটা তলানিতে ঠেকলেও পানি ইস্যুতে উভয়পক্ষ নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

    চলতি বছরের মার্চে দিল্লিতে দুই পক্ষের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যদিও সেই বৈঠকে কিছু ইস্যুতে মতৈক্যে পৌঁছাতে না পারায় কোনো কার্যবিবরণী (মিনিটস) সই হয়নি। এর আগে, গত বছর জুন মাসে উভয় দেশই চুক্তি নবায়নের জন্য কারিগরি আলোচনা শুরুর ঘোষণা দেয়। তবে সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সংসদে জানান যে, দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এখনও শুরু হয়নি।

    বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে, যার মধ্যে কেবল গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তিই স্বাক্ষরিত হয়েছে। তিস্তার পানিবণ্টন প্রশ্নটি এখনো অমীমাংসিত, যার প্রধান কারণ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অসহযোগিতা।

    ১৯৯৬ সালের এই গঙ্গা চুক্তি সই করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যৌথ নদী কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেন ঢাকা পোস্টকে জানান, ৯ সেপ্টেম্বরের বৈঠকটি একটি রুটিন বৈঠক। এই বৈঠকে গঙ্গা চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করা হবে।

    অন্যদিকে, কারিগরি দলের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গঙ্গার পানি ভাগাভাগি নির্দেশিকা অনুযায়ী ঠিকভাবেই হচ্ছে। তবে সম্প্রতি পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ উদ্বেগ জানিয়েছে এবং এ বিষয়ে ভারতকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।

    পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, গত বছর নভেম্বরে ঢাকায় যৌথ নদী কমিশনের ৮৫তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর মার্চে কলকাতায় ৮৬তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব বৈঠকে গঙ্গার পানি বণ্টন ও আন্তঃসীমান্ত নদী বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    গঙ্গা চুক্তি নবায়ন, ৯ সেপ্টেম্বর বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ও ভারত

    আপডেট সময় ১১:২৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    ১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হতে যাচ্ছে। এটি নবায়নের জন্য উভয়পক্ষই প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৯ সেপ্টেম্বর দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) কর্মকর্তারা নয়াদিল্লিতে বৈঠকে বসছেন।

    যৌথ নদী কমিশনের নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী, এই বৈঠকে যোগ দিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জেআরসি সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেনের নেতৃত্বে একটি কারিগরি দল নয়াদিল্লি সফর করবে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং এখনো সেখানেই আছেন। বাংলাদেশের এই পট পরিবর্তনে ঢাকা-দিল্লি দুই দেশের সম্পর্ক কিছুটা তলানিতে ঠেকলেও পানি ইস্যুতে উভয়পক্ষ নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

    চলতি বছরের মার্চে দিল্লিতে দুই পক্ষের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যদিও সেই বৈঠকে কিছু ইস্যুতে মতৈক্যে পৌঁছাতে না পারায় কোনো কার্যবিবরণী (মিনিটস) সই হয়নি। এর আগে, গত বছর জুন মাসে উভয় দেশই চুক্তি নবায়নের জন্য কারিগরি আলোচনা শুরুর ঘোষণা দেয়। তবে সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সংসদে জানান যে, দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এখনও শুরু হয়নি।

    বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে, যার মধ্যে কেবল গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তিই স্বাক্ষরিত হয়েছে। তিস্তার পানিবণ্টন প্রশ্নটি এখনো অমীমাংসিত, যার প্রধান কারণ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অসহযোগিতা।

    ১৯৯৬ সালের এই গঙ্গা চুক্তি সই করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যৌথ নদী কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেন ঢাকা পোস্টকে জানান, ৯ সেপ্টেম্বরের বৈঠকটি একটি রুটিন বৈঠক। এই বৈঠকে গঙ্গা চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করা হবে।

    অন্যদিকে, কারিগরি দলের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গঙ্গার পানি ভাগাভাগি নির্দেশিকা অনুযায়ী ঠিকভাবেই হচ্ছে। তবে সম্প্রতি পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ উদ্বেগ জানিয়েছে এবং এ বিষয়ে ভারতকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।

    পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, গত বছর নভেম্বরে ঢাকায় যৌথ নদী কমিশনের ৮৫তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর মার্চে কলকাতায় ৮৬তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব বৈঠকে গঙ্গার পানি বণ্টন ও আন্তঃসীমান্ত নদী বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।