ঢাকা ০৭:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

    গণমাধ্যম সংস্কারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ, ১২ নতুন সিদ্ধান্ত

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৮:২৫:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
    • / ২৫২ বার পড়া হয়েছে

    গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ১২টি নতুন সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

    বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গণমাধ্যম সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ে ইতোমধ্যে কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব সভায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও অংশীজনদের নিয়ে সংস্কার প্রক্রিয়ার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হয় এবং আলোচনার ভিত্তিতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

    নতুন সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, সাংবাদিকদের পেশাগত অধিকার রক্ষায় একটি অধ্যাদেশ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করে স্বল্প সময়ের মধ্যেই এই অধ্যাদেশ জারি করা হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। সংবাদপত্রের প্রচারসংখ্যা নিরীক্ষা পদ্ধতি সংস্কারের লক্ষ্যে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য বিদ্যমান বিজ্ঞাপন হারকে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত পর্যায়ে উন্নীত করার কথাও জানানো হয়েছে।

    গণমাধ্যমের কার্যকারিতা ও জনসম্পৃক্ততা মূল্যায়নে প্রতিবছর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে একটি জরিপ পরিচালনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এতে শ্রোতা, দর্শক ও পাঠকের চাহিদা ও প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করা হবে। পাশাপাশি বিজ্ঞাপনশিল্পে কোনো ধরনের কারসাজি বা প্রতিযোগিতা বিরোধী কৌশল গ্রহণ করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

    এফএম রেডিওর লাইসেন্স ফি ও বিজ্ঞাপন নীতিতে বেশ কয়েকটি বড় সিদ্ধান্ত এসেছে। রেডিও লাইসেন্সের বিপরীতে জামানত ফি যৌক্তিকভাবে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেডিওতে প্রচারিত বিজ্ঞাপন থেকে যে ২ শতাংশ আয় কেটে সরকারী ফি হিসেবে নেওয়া হতো, সেটি বাতিল করা হয়েছে। তবে রেডিও কর্তৃপক্ষকে নির্ধারিত হারে ফি প্রদান করতে হবে এবং সরকারি ঘোষণাগুলো বিনামূল্যে প্রচার করতে হবে।

    জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট কলাম লেখক, শিল্পী, প্রদায়ক এবং অতিথি উপস্থাপকদের সম্মানীর ওপর আরোপিত অগ্রিম কর (Advance Tax) রহিত করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
    এ ছাড়া, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর আপ-লিংক ও ডাউন-লিংকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিএসসিএলের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

    গণমাধ্যম প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এবং জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী করতে এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    পাশাপাশি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তাদের পেশাগত প্রশিক্ষণের জন্য ‘বিসিএস ইনফরমেশন একাডেমি’ নামে একটি নতুন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গঠনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য মতে, এসব সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের গণমাধ্যম খাত আরও স্বচ্ছ, দক্ষ ও দায়িত্বশীল হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    গণমাধ্যম সংস্কারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ, ১২ নতুন সিদ্ধান্ত

    আপডেট সময় ০৮:২৫:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

    গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ১২টি নতুন সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

    বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গণমাধ্যম সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ে ইতোমধ্যে কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব সভায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও অংশীজনদের নিয়ে সংস্কার প্রক্রিয়ার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হয় এবং আলোচনার ভিত্তিতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

    নতুন সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, সাংবাদিকদের পেশাগত অধিকার রক্ষায় একটি অধ্যাদেশ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করে স্বল্প সময়ের মধ্যেই এই অধ্যাদেশ জারি করা হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। সংবাদপত্রের প্রচারসংখ্যা নিরীক্ষা পদ্ধতি সংস্কারের লক্ষ্যে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য বিদ্যমান বিজ্ঞাপন হারকে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত পর্যায়ে উন্নীত করার কথাও জানানো হয়েছে।

    গণমাধ্যমের কার্যকারিতা ও জনসম্পৃক্ততা মূল্যায়নে প্রতিবছর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে একটি জরিপ পরিচালনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এতে শ্রোতা, দর্শক ও পাঠকের চাহিদা ও প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করা হবে। পাশাপাশি বিজ্ঞাপনশিল্পে কোনো ধরনের কারসাজি বা প্রতিযোগিতা বিরোধী কৌশল গ্রহণ করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

    এফএম রেডিওর লাইসেন্স ফি ও বিজ্ঞাপন নীতিতে বেশ কয়েকটি বড় সিদ্ধান্ত এসেছে। রেডিও লাইসেন্সের বিপরীতে জামানত ফি যৌক্তিকভাবে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেডিওতে প্রচারিত বিজ্ঞাপন থেকে যে ২ শতাংশ আয় কেটে সরকারী ফি হিসেবে নেওয়া হতো, সেটি বাতিল করা হয়েছে। তবে রেডিও কর্তৃপক্ষকে নির্ধারিত হারে ফি প্রদান করতে হবে এবং সরকারি ঘোষণাগুলো বিনামূল্যে প্রচার করতে হবে।

    জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট কলাম লেখক, শিল্পী, প্রদায়ক এবং অতিথি উপস্থাপকদের সম্মানীর ওপর আরোপিত অগ্রিম কর (Advance Tax) রহিত করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
    এ ছাড়া, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর আপ-লিংক ও ডাউন-লিংকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিএসসিএলের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

    গণমাধ্যম প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এবং জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী করতে এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    পাশাপাশি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তাদের পেশাগত প্রশিক্ষণের জন্য ‘বিসিএস ইনফরমেশন একাডেমি’ নামে একটি নতুন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গঠনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য মতে, এসব সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের গণমাধ্যম খাত আরও স্বচ্ছ, দক্ষ ও দায়িত্বশীল হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।