গোপালগঞ্জে ফের কর্মসূচির ঘোষণা – এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম

- আপডেট সময় ০২:২৯:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
- / ২৫৯ বার পড়া হয়েছে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গোপালগঞ্জে ফের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আবারও গোপালগঞ্জে যাবো। জীবিত থাকলে প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি উপজেলায় কর্মসূচি করবো। গোপালগঞ্জের ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ হবে বাংলাদেশপন্থীদের, মুজিববাদীদের নয়।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, গোপালগঞ্জ নিয়ে এনসিপির অবস্থান পরিষ্কার। পুরো দেশের প্রতি দলের যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার রয়েছে, গোপালগঞ্জের প্রতিও সেই একই অঙ্গীকার বহাল রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক বৈষম্যের বিরোধিতা করি। আমরা এ অঞ্চলকে মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করবো।
ওই পোস্টে নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় ধরে গোপালগঞ্জবাসীর জীবনকে বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি অবিচার করেছে। তিনি দাবি করেন, এনসিপির কর্মসূচি ছিল পূর্বঘোষিত ও শান্তিপূর্ণ। তবে আওয়ামী লীগ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। যেমনটা ঘটেছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও, মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ৫ আগস্টের ঘটনার পরও অনেকে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ আনার চেষ্টা করেছিলেন। অথচ আওয়ামী লীগ এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়, বরং এটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে রূপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। জুলাই গণহত্যার বিচার চেয়ে বারবার দাবি জানানো হলেও ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের হামলাকারীদের ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বরং অনেকেই জামিনে বেরিয়ে যাচ্ছে বা থানা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ফ্যাসিবাদের দোসর ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা ঘাপটি মেরে আছে এবং তাদের টাকা দিয়ে কিনে ফেলা সম্ভব। তার দাবি, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশজুড়ে সক্রিয় এবং গতকাল গোপালগঞ্জেও তাদের উপস্থিতি ছিল।
নাহিদ বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর নির্দেশনা অনুসরণ করে তারা গোপালগঞ্জে প্রবেশ করেন এবং শান্তিপূর্ণ পথসভা করেন। যদিও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা এনসিপির সমর্থকদের পথে বাধা দেওয়া হয়েছে, বাস আটকে দেওয়া হয়েছে।
পথসভা শেষে ফেরার পথে তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ নাহিদের।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা চারজন শহীদের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে বিশ্বাস করি না। সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা সময়মতো ব্যবস্থা নিলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না।’’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘‘পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শুধু গোপালগঞ্জ নয়, সারা দেশজুড়ে গ্রেপতার অভিযান চালাতে হবে। শহীদ বাবু মোল্লা ও শহীদ রথীন বিশ্বাসের স্মরণ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘মকসুদপুর ও কোটালীপাড়ায় আমাদের শহীদদের কবর রয়েছে। আমরা মুজিববাদীদের হাতে এ মাটি ছেড়ে দেবো না। বাংলাদেশে মুজিববাদীদের জন্য এক ইঞ্চি মাটিও থাকবে না ইনশাআল্লাহ।
পোস্টের শেষ অংশে তিনি বলেন, ‘‘যারা গতকালের হামলার প্রতিবাদ করেছেন, রাস্তায় নেমেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। ফরিদপুরে পদযাত্রায় দেখা হবে। এনসিপি নেতার এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে এবং গোপালগঞ্জের সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনার প্রেক্ষাপটে এটি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।